• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

মৎস্য চাষে সফল গঙ্গাচড়ার আনিছুর 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

মোঃ আনিছুর রহমান। ২০১৭ সালে এমএ পাশ করেন। পরিবার ও নিজের প্রবল ইচ্ছা ছিল ভাল একটা চাকুরী করে পরিবারের হাল ধরবে; কিন্তু চাকুরীর চেষ্টা করে সফলতা না পেলেও হতাশ হননি আনিছুর। ইচ্ছা শক্তি থাকায় নিজে সফল হয়ে অন্য বেকারদের কর্মের ব্যবস্থাও করেছেন আনিছুর ।

গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের দক্ষিণ পানাপুকুর চৌধুরীর হাট এলাকার মোঃ আব্দুল খালেকের ছেলে মোঃ আনিছুর রহমান। শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকুরীর চেষ্টা করেন। কিন্তু চাকুরী না হলেও হতাশ হননি, নিজের প্রবল সাহস আর ইচ্ছা শক্তি ও চেষ্টায় তাকে সফলতা এনে দিয়েছে মৎস্য চাষ। ২০১৮ সালে পৈত্রিক ২ একর জমির পুকুরে মৎস্য চাষ শুরু করেন তিনি । চাষ করেন শিং, গুলশা, পাপ্দাসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্নজাতের মাছ।

এতে তার প্রায় ব্যয় হয় প্রায় ৩ লাখ টাকা। চাষকৃত মাছ বিক্রি করেন প্রায় ৬ লাখ টাকা। এতে তার ৩ লাখ টাকা লাভ হয়। আনিছুর মাছ চাষ শুরু করার সময় উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করেন। উপজেলা মৎস্য অফিসারসহ মৎস্য বিভাগের লোকজন আগ্রহ দেখে তাকে সব ধরনের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেয়। ফলে মৎস্য চাষে প্রথমেই চমক দেখিয়ে ২০১৯ সালে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ  মৎস্য চাষীর পুরস্কার পান। এরপর কার্প/রুই মাছের রেনু চাষ শুরু করেন। রেনু চাষে তার লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়। এতে লাভ হয় দেড় লাখ টাকা । স্বল্প ব্যয়ে অল্প লাভে রেনু চাষ ২০২২ সাল পর্যন্ত করেন। ২০২২ সালেও সফল মৎস্য চাষী হিসেবে মৎস্য সপ্তাহে উপজেলা পর্যায় শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষীর পুরস্কার পান। ২৩ সালে মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছ শুরু করেন আনিছুর রহমান। ২০ হাজার পোনা ছাড়েন পুকুরে। মৎস্য অফিসের লোকজনের সার্বিক পরামর্শ নিয়ে মাত্র ৫ মাসের মধ্যে মনোসেক্স তেলাপিয়া বিক্রির উপযোগী হয়। এতে সবমিলে তার খরচ হয় ১ লাখ ২৫ হাজার

টাকা। আর ৫ মাসের মধ্যে বিক্রি করে লাভ করেন ৩ লাখ টাকা। প্রথম পর্যায়ের মাছ বিক্রির পরেই ২য় পর্যায় আবার মনোসেক্স তেলাপিয়ার ৩৫ হাজার পোনা ছাড়েন পুকুরে। এতে সবমিলে ব্যয় প্রায় ৫ লাখ টাকা। ৫ মাস পর ওই মাছ বিক্রি করে আয় করেন সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এছাড়া বর্তমানে আনিছুর রহমান বাড়িতে মাছের পিলেট খাদ্য তৈরি মেশিনে মানসম্মত খাদ্য তৈরি করে ব্যবহার করে মাছ উৎপাদন করছেন।

এলাকার সালাম, রতন ও সুজন জানান, শিক্ষিত আনিছুর মৎস্য চাষ করে কিভাবে বেকারত্ব দূর করা যায় বেকার যুবকদের জন্য সে দৃষ্টান্ত উদাহরণ। তাকে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত করা দরকার।

আনিছুর রহমান বলেন, বাবা-মা লেখাপড়া করায় ছেলে চাকুরী করবে এমন আশা নিয়ে। আমিও বাবা-মার আশা পূরণে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সে চেষ্টায় সফল না হলেও কখনও হতাশ হইনি। নিজেই কিছু একটা করার উদ্যোগ নেই। অনেক কিছুর মাঝে মৎস্য চাষ বেছে নেই। কারণ পৈত্রিক ২ একর জমির পুকুর আছে, আমি সেটাকে কাজে লাগাতে পারলেই সফল হব।

এমন আশা নিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করে মৎস্য চাষ শুরু করি  এখন আমি সফল একজন মৎস্য চাষী। নিজে এখন যেমন আয় করে বেকারত্ব দূর করেছি, পাশাপাশি আমার এখানে আরো ৪/৫ জন আয় করে তাদের সংসার চালাচ্ছে। আমার মৎস্য চাষ মৎস্য বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে দেখে গেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন।

উপজেলা  সিনিয়র মৎস্য অফিসার দীপা রানী বিশ্বাস জানান, আনিছুর রহমানকে মৎস্য চাষে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তার উৎসাহ ও আগ্রহই তাকে সফলতা এনে দিয়েছে। আনিছুর রহমানের সফলতা দেখে অনেক বেকার যুবক মৎস্য চাষে উৎসাহিত হবে।
 

Place your advertisement here
Place your advertisement here