• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

রংপুরে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপনে সারা দেশের মতো রংপুরেও চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত ঐতিহ্য আর আবহমান বাংলার শেখরে ফিরে যেতে নগর, বন্দর, গ্রামগঞ্জে আর পাড়া-মহল্লায় এখন বৈশাখের আমেজ। ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা বাঙালি সমাজে এখন বাংলা নববর্ষকে বরণের অপেক্ষায়। সর্বজনীন এই উৎসবের রঙে রঙিন হতে জেলার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে চলছে শেষ মুহূর্তের আয়োজন প্রস্তুতি।  

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাতে রংপুর টাউন হল চত্বরে বর্ষবরণের আয়োজন প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বিভিন্ন সংগঠন ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যদের ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায়। আজ শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকালেও রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নতুন বাংলা বর্ষবরণে বর্ণাঢ্য আয়োজনের প্রস্তুতি দেখা গেছে।

রংপুর জেলা প্রশাসন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনে বৈশাখ বরণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার চূড়ান্ত মহড়া সেরে নিচ্ছেন শিল্পীরা। একই সঙ্গে মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য ঐতিহ্যবাহী মুখোশ তৈরিতেও চলছে তোড়জোড়। বৈশাখ বরণে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বর, রংপুর জিলা স্কুলের বটতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় আলপনার রঙে রঙিন করতে দেখা গেছে।

জেলার বিভিন্ন স্থানে পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপনে বৈশাখী মেলা, পান্তা-ইলিশের আয়োজন, হালখাতা শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, হাডুডু, লাঠিখেলাসহ গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজনে প্রস্তুতি চলছে। এবার ঈদুল ফিতর উদযাপনে নতুন পোশাকের সঙ্গে অনেকের কেনাকাটায় যোগ হয় বৈশাখী পোশাকও। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে নগরীর বেশকিছু বিপণিবিতান খুলেছে বৈশাখের বাহারি পোশাকের পরসা সাজিয়ে। যেন পুরনো দিনের গ্লানি মুছে নতুনের আয়োজনে এখন ব্যস্ত সবাই।

এবারের পহেলা বৈশাখ বরণ করে নিতে রংপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোভাযাত্রাসহ শহর প্রদক্ষিণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন ছাড়াও কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার পরিবেশন করা হবে। শোভাযাত্রা শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠের বটতলায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবেন শিল্পীরা।

১৪ এপ্রিল রোববার (১লা বৈশাখ) মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণের কর্মসূচি শুরু হবে। রংপুর জিলা স্কুল মাঠ থেকে সকাল ১০টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। এতে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি, আরপিএমপি কমিশনার, সিটি মেয়র, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ জেলার নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ অংশ নেবেন।

এদিকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের দুই দিনব্যাপি অনুষ্ঠানমালায় আজ শনিবার দুপুর থেকে চৈত্রসংক্রান্তিময় পরিবেশনা। আর রোববার পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে সকাল ৭টায় রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ চত্বরে রয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পরিবেশনা। একই স্থান থেকে সকালে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও রংপুর নাট্যকেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক মুরাদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মুখোশে জেগে উঠছে সেই পুরোনো শকুন-নববর্ষের নবরবি কিরণে বিনাশ হোক এই অপশক্তির। বৈশাখের এই উৎসবকে সর্বজনীন উৎসব বলা হয় এই কারণে যে এই উৎসবে সকল ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করে। বাঙালি জীবনের মৌলচেতনা হল অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা করা। আমরা বৈশাখ উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি।

রংপুরের জেলা প্রশাসক ও বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন কমিটি-১৪৩১ এর সভাপতি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, বৈশাখ বরণে জেলা প্রশাসন মঙ্গল শোভাযাত্রা, দেশীয় খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এসব আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আয়োজক কমিটির সবাই যার যার দায়িত্ব থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসবের আমেজে এই দিনটি উদ্যাপন করব।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ বাংলা নববর্ষের পহেলা বৈশাখ। এই দিনটিকে ঘিরে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক রয়েছে। পুরো নগরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ বরণে পুরো নগরীতে বিভিন্ন ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণের আয়োজন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এছাড়াও মহানগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শোভাযাত্রা, হাডুডু, লাঠিখেলাসহ গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজনে সিটি কর্পোরেশন পৃষ্টপোষকতা করছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here