• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

কক্সবাজারের মহেশখালী মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে বিশাল একটি জাহাজ নোঙর করেছে। দেশের ইতিহাসে প্রথম সবচেয়ে বড় কোনো পণ্যবাহী জাহাজ নোঙর করল নতুন এই গভীর সমুদ্রবন্দরটিতে। এর মাধ্যমে বিশ্ব আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এমভি অউসা মারো নামের এই জাহাজটি মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকালে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে নোঙর করে।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী বিদু্যৎকেন্দ্রের জন্য কয়লাবহনকারী এই জাহাজের গভীরতা ১৪ মিটার এবং এটি ২৩০ মিটার দীর্ঘ। এর আগে চট্টগ্রামসহ দেশের কোনো বন্দরে এই বিশাল আকৃতির জাহাজ প্রবেশের সুযোগ হয়নি।

পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড-সিপিজিসিবিএলের নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, জাহাজটির ধারণক্ষমতা ৮০ হাজার মেট্রিক টন। তবে জাহাজটি মোট ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এসেছে। কেন্দ্রের জন্য কাঁচামাল নিয়ে এই প্রথম কোনো বড় জাহাজ এলো। এর আগে বিদু্যৎকেন্দ্রের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে ১১২টি জাহাজ এই জেটিতে ভিড়েছে বলেও জানান তিনি।

'অউসা মারো' নামের এই জাহাজে থাকা কয়লা খালাস করতে ছয়-সাত দিন সময় লাগতে পারে জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভবিষ্যতে এর থেকেও বড় জাহাজ এখানে ভিড়তে পারে। ইন্দোনেশিয়ার তারাহান থেকে কয়লা নিয়ে জাহাজটি সিঙ্গাপুর হয়ে মাতারবাড়ী পৌঁছে বলে জানান তিনি।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, মাতারবাড়ী চ্যানেলে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদু্যৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে ইতোমধ্যে ১২০টির বেশি জাহাজ বার্থিং করেছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ মাতারবাড়ীর কয়লা জেটিতে ভিড়ছে। মাতারবাড়ী টার্মিনাল বাস্তবায়িত হলে ডিপ ড্রাফট ভেসেল তথা ১৬ মিটার বা এর চেয়ে বেশি গভীরতাসম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ গমনাগমন করতে সক্ষম হবে।

মাতারবাড়ী কয়লা বিদু্যৎকেন্দ্রের জন্য প্রথম জেটিটি নির্মাণ শেষে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ 'এমভি ভেনাস ট্রায়াম্প' প্রথম সেখানে ভিড়েছিল। এরপর মাতারবাড়ীতে আসা ১১২টি জাহাজ বিদু্যৎকেন্দ্রের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে এসেছিল।

দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য 'মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প' গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতাসম্পন্ন করে ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে। অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের উত্তর পাশে দুই হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পাশে ৬৭০ মিটার ঢেউ নিরোধক বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে ৪৬০ মিটার কন্টেইনার জেটি এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি এবং কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ সব বন্দর সুবিধা থাকবে।

মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকার ঋণ ১২ হাজার ৮৯২ কোটি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল দুই হাজার ২১৩ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের দুই হাজার ৬৭১ কোটি টাকা। প্রকল্প নির্মাণের মেয়াদ ২০২১ সাল থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।

মাতারবাড়ীতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ারড পাওয়ার প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে দ্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)।

২০১৪ সালে অনুমোদিত প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। কিন্তু পরে তা বেড়ে ৫১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০২৬ সালের জুলাইয়ে এটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here