পঞ্চগড় বার আউলিয়া মাজার
দৈনিক রংপুর
প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮
Find us in facebook
পঞ্চগড় জেলায় বেশ কয়েকটি মাজার এই জনপদের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে অভিভুত ও পবিত্র করে তোলে। বিখ্যাত সুফী ও পীর দরবেশগণের পবিত্র চরণ এই অঞ্চলের ধূলি মাটিকে ধন্য করেছে। ব্যাপক ধর্মীয় প্রচার এ অঞ্চলে অনেক পরে হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম শুধু পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলাধীন ‘বার আউলিয়ার’ মাজার(Bar Awlia Mazar)। ‘বার আউলিয়া’ গ্রামে বার জন আউলিয়ার মাজারটি অবসি’ত। তবে তাঁদের পরিচয় উদঘাটণ হয়নি। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইসলাম প্রচারের উদ্যেশে এই বার জন আউলিয়া সুদূর পারস্য ইয়েমেন ও আরবের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে চট্টগ্রামের শহরে আস্তানা গেড়েছিলেন। বার জন অলীর মধ্যে প্রধান হেমায়েত আলী শাহ্ (রা.)। তাঁরই নেতৃত্বে আউলিয়াগণ টাঙ্গন নদী বেয়ে অথবা স্থল পথে আটোয়ারীর ওই জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাঁরা সবাই আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সম্পন্ন ছিলেন। হিন্দু ব্রাক্ষণ্যবাদী রাজাদের কঠোর শাসনে নিস্পেষিত নিম্ন বর্ণের হিন্দুরা বার আউলিয়ার আদেশের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে দলে দলে ইসলামের পতাকা তলে সমবেত হন।
এই বারজন আউলিয়ার নাম তাম্রপদে খোদিত ছিল। শোনা যায়, জমিদার কানাইলাল দলুইগং মাজারের জমি দান করার সময় তা সকলের নামে তাম্রপদে দানপত্রটি খোদিত করেন। সেই তাম্রপদটি হারিয়ে গেলেও অলীদের নাম হারিয়ে যায়নি। বার জন আউলিয়া হলেন-হেমায়েত আলী শাহ্ (র.), নিয়ামত উল্লাহ শাহ্ (র.), কেরামত আলী শাহ্ (র.), আজহার আলী শাহ্ (র.), হাকিম আলী শাহ্ (র.), মনসুর আলী শাহ্ (র.), মমিনুল শাহ্ (র.), শেখ গরীবুল্লাহ্ (র.) আমজাদ আলী মোল্লা, ফরিজউদ্দীন আখতার(র.), শাহ্ মোক্তার আলী(র.), শাহ্ অলিউল্লাহ (র.)।
তারা সম্ভবত সপ্তদশ শতকের মধ্যভাগে এ অঞ্চলে আসেন। ১৯৯০-৯১ সালের দিকে মাজার সংস্কার করার সময় যে সব পুরাতন চেপ্টা আকৃতির ইট পাওয়া যায় প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে এই সব ইট কয়েক শত বছর পূর্বে ব্যবহৃত হয়েছে। বিশেষ করে দিল্লীর সম্রাট শেরশাহের আমলে এই রকম ইট ব্যবহৃত হতো বলে জনশ্রুতি রয়েছে। অন্যান্য অঞ্চলের মতো এই অঞ্চলটি হিন্দু রাজা বা জমিদারের অধীন ছিল। এই মৌজা রানীগঞ্জের জমিদারের অধীনে ছিল। জমিদার মারা যাওয়ার পর রানী রাশমনি এই জমিদারি ষ্টেটটিকে দেবোত্তর ষ্টেট হিসেবে ঘোষণা দেন এবং কানাইলাল দলুইগং জমিদার বার আউলিয়ার অলীদের নামে ৪৭.৭৯ একর জমি ওয়াকফ করে দেন। যা ১৯৪০ সালে রেকর্ডভূক্ত হয়। মাজারের সেবায়েত হিসেবে বাসারত আলী শাহকে দেখানো হয়।
বার আউলিয়ার মৃত্যুকাল এবং তারপর তাদের কবরগুলো ঘিরে তীর্থসমাবেশ কবে থেকে শুরু হয় সেটার সঠিক ইতিহাস জানা যায়না। তবে বোঝা যায় যে, আউলিয়ারা ছিলেন অকৃতদার এবং তাদের মৃত্যুর পর তাদেও ভক্তদের মধ্য হতে পর্যায়ক্রমে মাজার পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানে চলে এসেছে। পরবর্তী কালে মাজারের বিশাল সম্পদরাজি খাদেমদের মধ্যকার প্রভাবশালী ভক্তের কর্তৃত্বে চলে যায়। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত খাদেম গোষ্ঠির লোকেরা মাজার দেখাশোনা ও জমাজমি ভোগদখল করতেন। বাসারত আলী শাহ এর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সুলতান আলী শাহ ও হায়দার আলী শাহ্ মাজারের দেখাশোনা করেন। পরে ১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত জমির রেকর্ড শুরু হলে সুলতান আলী ৪৭.৭৯ একর জমি নিজ নামে রেকর্ড করে নেন এবং মাজারের জমি বিক্রয় শুরু করেন।
জানা যায়, মূল মাজারের চারদিক বিশাল এলাকাজুড়ে ঘন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। এই জঙ্গলে অনেক বাঘ, ভাল্লুক, বুনো শুকরসহ হিংস্র জীবজন’ বাস করতো। মাজারের ওপর ছনের ঘর ছিল। ওরশের আগের দিনে মাটি দিয়ে মোছা হতো। কিন’ ১৯৯০ সালের পূর্ব পর্যন্ত একটি টিনের চৌচালা ঘর ছিল। কথিত আছে যে, মাজারে ২টি বাঘ ও ২টি সাঁপ সবসময় পাহারা দিত। মাজারের পাশে ১টি কাঠের বাক্স ছিল। এই বাক্সে ভক্তজনেরা টাকা পয়সা ফেলতো। কেউ টাকা চুরির উদ্দেশ্যে বাক্সের কাছে গেলে সাঁপ দুটি বের হতো। আর বাঘ দুটি ঘরের শরের ওপর বসে থাকত। কখনো দেখা যেত আবার কখনো দেখা যেতনা। তবে খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে গেলে বাঘ দেখা যেত। সেজন্য মাজারে কেউ ভয়ে যেতনা। তবে খাদেম বাসারত আলী শাহের স্ত্রী সপ্তাহে একদিন মাটি দিয়ে মুছে দেয়ার জন্য যেতেন। কিন্ত এই মহিলাকে বাঘ কিছুই করত না। বরং মহিলা বাঘের কাছে গিয়ে হাত দিয়ে নামিয়ে দিতেন। বাঘগুলি নেমে চলে যেত। বর্তমানে সেই গভীর জঙ্গলও নেই। বাঘ সাঁপও নেই।
১৯৯০ সালের দিকে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার আহমদ চৌধুরী একদিন জীপ গাড়ি নিয়ে বার আউলিয়া মাজারের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে মাজারের সামনে রাস্তায় জেলা প্রশাসকের গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টার পরও গাড়ির ইঞ্জিন চালূ না হলে স্থানীয় জনগণকে জিজ্ঞাসা করেন। জানতে পারেন যে, পশ্চিম পাশে বার আউলিয়া মাজার শরীফ। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি অজু করে মাজার জিয়ারত করে কোন বেয়াদপি হলে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মাজার জিয়ারত শেষে বিনা ধাক্কায় গাড়ি চালু হয়। ওই দিন রাতেই জেলা প্রশাসক স্বপ্নে মাজার উন্নয়নের জন্য বার আউলিয়ার অলীদের নিদের্শ পান। পরের দিন সকাল বেলা তিনি আবার মাজার জিয়ারত করতে আসেন। সেই সঙ্গে তার অসুস্থ দুই পুত্রের জন্য মানত করে মাজার উন্নয়ন কাজে এগিয়ে আসেন। তিনি স্বউদ্দ্যেগে মাজার উন্নয়নে ফান্ড সংগ্রহের জন্য সর্বস্তরের মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক প্রথমে বার আউলিয়ার সর্দার হেমায়েত আলী শাহ্ ও নিয়ামত উল্লাহ শাহ্ এর মাজারের ওপর একটি পাকা দালান নির্মাণের কাজে হাত দেন। দুজনের মাজার একসঙ্গে আছে। যা জোড়া কবর বলেও পরিচিত। এর পর নলপুখরী গ্রামের মো. খলিলুর রহমান বাকি ১০টি মাজারের দেয়াল নির্মাণ করে দেন। এভাবে সরকারি বেসরকারি সহযোগিতায় সেখানে একটি পাকা মসজিদ ও একটি এতিমখানা নির্মাণ করা হয়। পরে ১৯৯২ সালে প্রাক্তণ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী মরহুম মির্জা গোলাম হাফিজ মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর মাজার উন্নয়নের জন্য নজর দেন। প্রথমে জমি নিয়ে মামলার মিমাংসা করে জমি তিনভাগে ভাগ করে দেন। পরে সেখানে বৈদ্যুতিক সংযোগের ব্যবস্থা করে দেন। মাজার তদারকির জন্য মির্জা গোলাম হাফিজ জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করে দেন তিনি।
প্রতিবছরই বাংলা সনের বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার বার আউলিয়া মাজার শরীফের উরস মোবারক বহুপূর্ব হতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই দিন ওয়াজ মাহফিল, কোরআন তেলাওয়াত ও তোবারক বিতরণ করা হয়। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ বিভিন্ন জেলা থেকে এই দিনটিতে মাজারে এসে মানত করেন। গরু, ছাগল, মুরগি, চাউল ও নগদ অর্থও ইত্যাদি দান করেন। লক্ষনীয় বিষয় যে, এদিন সব ভেদাভেদ ভুলে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই মাজারে আসেন। উৎসবে পরিণত হয় বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার। সে উৎসব যেন সৃষ্টিকর্তার কাছে চাওয়ার উৎসব। সকল স্তরের নারী-পুরুষ পূণ্যভূমিতে এসে মানত পুরা করেন।
- ভোটারবিহীন নির্বাচন, চুন ছাড়া পানের মতো: ইসি রাশেদা
- ঠাকুরগাঁওয়ে ৫ জুয়াড়ি আটক
- হিলি সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক
- তীব্র গরমে বাড়ছে প্রস্রাবের সংক্রমণ, এ সময় করণীয়
- হরিপুরে হিট স্ট্রোকে এক নারীর মৃত্যু
- তীব্র তাপদাহে নীলফামারীতে পথচারীরা পেল পানির বোতল
- রাণীশংকৈলে কবরস্থানের আম গাছে ঝুলছিল গলায় বেল্ট আটকানো মরদেহ
- গরমের তীব্রতা প্রতিরোধে যেসব খাবার খাবেন
- চিলমারীতে ২৬কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক
- রংপুরে দলিত সম্প্রদায়কে নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- হরিপুরে মাটি কাটার কাজে গিয়ে ‘হিট স্ট্রোকে’ নারীর মৃত্যু
- গরম-ঠান্ডায় আরামদায়ক বাসস্থান
- বেরোবির নতুন ওয়েবসাইট চালু
- বীরগঞ্জে তীব্র তাপদাহে চরম দূর্ভোগে প্রাণীকূল
- হারিয়ে যাচ্ছে পিঁড়িতে বা খাটে বসে চুল দাড়ি কাটার দৃশ্য
- বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়ার প্রস্তাব অস্ট্রিয়ার
- খেলতে গিয়ে চোরাবালিতে ডুবে যায় কিশোর, অতঃপর...
- জলঢাকা পৌরসভায় উপ-নির্বাচনে মেয়র হলেন নোভা
- নাশকতা মামলায় কুড়িগ্রামে যুবদলের সভাপতিসহ কারাগারে ৬
- মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান শিরোপা পিএসজির
- প্রথম স্ত্রীর হাতে কেন চড় খেয়েছিলেন আমির?
- হজ পালনে অনুমতি বাধ্যতামূলক করল সৌদি
- আবারো কমলো সোনার দাম
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার কবে বন্ধ হবে, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
- ঈদুল আজহায় পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করবো না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- রাতভর ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত
- আইনগত সহায়তা দরিদ্র-অসহায় নাগরিকের অধিকার: আইনমন্ত্রী
- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন করা হবে: ইসি আলমগীর
- একদিনে হিট স্ট্রোকে ১৭ জনের মৃত্যুর রেকর্ড
- বুয়েটে জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রম তদন্ত করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
- ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া হলো না বাবার
- ফুলবাড়ীতে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি ঘোষণা আজ
- রাতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- হিলি সীমান্ত পরিদর্শনে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল
- গাজার ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ক্রিকেটার বিথী
- চিলমারীতে বৃষ্টির জন্য ৩য় দিন ইসতিসকার নামাজ আদায়
- সুন্দরগঞ্জে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষে ব্যাপক সাফল্য
- আজ থেকে ট্রেনের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- আবারও তিনদিন বাংলাবান্ধার ইমিগ্রেশন ও বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- পুলিশের আজান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন করা হবে: ইসি আলমগীর
- ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীরা
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- ইউটিউবে আসছে এআই নির্ভর ৩ ফিচার