• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বাণিজ্যভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

ফেসবুকের মাধ্যমে পণ্য বেচাকেনা এখন বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও পণ্য বেচাকেনার জন্য বেশ জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি। অনেকে শুধুমাত্র ফেসবুকের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে তুলেছেন পণ্য বিকিকিনির ব্যবসা। আর নিজেদের পণ্য বেচা-কেনার জন্য অনেকেই তৈরি করেছেন বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ। সম্প্রতি বাংলাদেশে কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ বন্ধ হয়ে গেছে।

তিন বছর আগে ফেসবুকে “রি-সাইকেল বিন” নামে একটি গ্রুপ খুলেছিলেন ঢাকার উদ্যোক্তা ফ্লোরিডা শারমিন। তার এই গ্রুপটিতে যুক্ত হয় প্রায় ১৫ লাখ সদস্য পণ্য বিক্রির জন্য পোস্ট দিতেন অথবা কিনতে পারতেন। কিন্তু মাস খানেক আগে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় সেই গ্রুপটি।

ফ্লোরিডা শারমিন জানান, গ্রুপটি বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা ফেসবুকের পক্ষ থেকে কোনো সতর্কবার্তা পাননি।

তিনি বলেন, “আমাদের গ্রুপ কোয়ালিটি ছিল গ্রিন। অর্থাৎ সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু হঠাৎ গ্রুপে ঢুকতে গিয়ে দেখি গ্রুপ নেই। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেখি গ্রুপটা নেই। পরে আমি ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারাও সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেনি।”

তার মনে সংশয় দিখা দিয়েছে যে, ফেসবুক হয়তো এরকম বড় গ্রুপকে ফেসবুক প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসা করতে দিতে চায় না। কারণ এখান থেকে ফেসবুকের কোনো লাভ নেই। তাদের কোনো পোস্ট বুস্ট দিতে হয় না, বিজ্ঞাপনও দিতে হয় না।

তবে কারণ যেটাই হোক, ১৫ লাখ সদস্যের গ্রুপটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকেই।

ফ্লোরিডা শারমিন জানান, তাদের গ্রুপটা বন্ধ হওয়ার আগে এরকম আরও কয়েকটি গ্রুপ বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, “এ কারণে আমরা সতর্ক ছিলাম, টেনশনেও ছিলাম। আমরা একটা ব্যাকআপ গ্রুপও খুলেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের গ্রুপটা আর রক্ষা করা যায়নি।"

তিনি আরো বলেন, “এখন আমার নিজের ব্যবসা একদম পড়ে গেছে, গ্রুপে যারা উদ্যোক্তা ছিলো, মডারেটর ছিলো তাদেরও সবার ব্যবসা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। গ্রুপকে কেন্দ্র করে একটা কুরিয়ার সার্ভিস খুলেছিলাম, সেটাও ক্ষতিগ্রস্ত।”

ফেসবুক কি ব্যবসাকে নিরুৎসাহিত করছে?
এ বিষয়ে ফেসবুক থেকে কোনো উত্তর দেয়া হয়নি। বাংলাদেশে ফেসবুকের পিআর প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়, এ বিষয়ে ফেসবুক কোনো মন্তব্য করবে না।

তবে ফেসবুকের কিছু নীতিমালা আছে যার আওতায় গ্রুপ বন্ধ করা হতে পারে। সেসব  নীতিমালায় গ্রুপ বন্ধ হওয়া নিয়ে বেশ কিছু সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ আছে। যেখানে ওষুধ, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, চোরাই পণ্য, জুয়া, লটারি ইত্যাদির প্রচার, অস্ত্র, বিস্ফোরক, ডকুমেন্টস, টাকা-পয়সা, ব্যবহৃত কসমেটিক্স, মাদক দ্রব্য, যৌনতার নির্দিষ্ট কিছু সামগ্রী ইত্যাদির ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এছাড়া বলা আছে, ফেসবুকের কমিউনিটি স্টান্ডার্ড লঙ্ঘন, প্রতারণা, ফেক আইডি’র পোস্ট অনুমোদন, সহিংসতা কিংবা গ্রুপে কপিরাইট ছাড়া ছবি/ভিডিও ইত্যাদির কারণেও ফেসবুক কোন একটি গ্রুপ বন্ধ করে দিতে পারে।

অনেকেই গুগল বা ফেসবুক থেকে কোন একটি পণ্যের ছবি ডাউনলোড করে সেই ছবি ব্যবহার করে ক্রয়-বিক্রয়ের পোস্ট দেন। অনেক সময় এসব গ্রুপে পণ্য কিনতে গিয়ে গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হন। এ ধরণের বিষয়ও ফেসবুকের নজরে আসলে সেটা ঐ গ্রুপের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, “কোনো গ্রুপের বিরুদ্ধে একসঙ্গে একাধিক নিয়ম লঙ্ঘন হলে সেক্ষেত্রে কোনো নোটিশ ছাড়াই তাৎক্ষণিক গ্রুপটি বন্ধ করে দিতে পারে ফেসবুক।”

তিনি আরো বলেন, “ফেসবুক আগে প্রোফাইল কিংবা পেইজের দিকে যেরকম নজর রাখতো, সেটা এতোদিন ফেসবুক গ্রুপের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। কিন্তু গ্রুপগুলোও ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে যে নজরদারি সেটার আওতায় এসেছে। যার ফলে কোনো নিয়ম লংঘন হলেই সেটা দ্রুত ধরা পড়ছে এবং ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।”

উপায় কী?
শুধু ফেসবুক গ্রুপের ওপর ভরসা করে ব্যবসা করা এখন বেশ কঠিনই বলা যায়। আগে অনেকেই নিয়ম-নীতি না জেনেই ব্যবসা করতে পারতেন, এখন আর সেই সুযোগ নেই।

এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি বিষয় পরামর্শ দিচ্ছেন। তার মধ্যে প্রথম হলো, ফেসবুকের নিয়ম-নীতি সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা।

দ্বিতীয়ত, ফেসবুক গ্রুপ নির্ভরশীল না হয়ে এর বাইরে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবসা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া। তৃতীয়ত, ট্রেড লাইসেন্স করা।

কোনো গ্রুপের সঙ্গে ওয়েবসাইট এবং ট্রেড লাইসেন্সের মতো ডকুমেন্টস থাকলে ফেসবুক সেটাকে সত্যিকারের কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করে। এক্ষেত্রে কোনো নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে গ্রুপ ডিজেবল হলে সেটা আবেদন করে ফিরিয়ে আনাও সহজ হয়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here