আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম বিচার দাবি শেখ রেহানার
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৩
Find us in facebook
১৫ আগস্ট ১৯৭৫। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে সপরিবারে নিহত হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর এক দীর্ঘ সময় দেশে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ ছিল প্রায় নিষিদ্ধ। সে এক দুঃসহ দিন। জাতি ছিল স্তম্ভিত, দিকনির্দেশনাহীন।
তখন সামরিকতন্ত্রের বুটে পিষ্ট গণতন্ত্র। বাকস্বাধীনতা ছিল না দেশে। দেশের বাইরেও কেউ এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ করার সাহস দেখাতে পারেনি। বাঙালিদের কাছে জাতির জনকের নৃশংস হত্যাকাণ্ড এমন এক অবিশ্বাস্য ও নারকীয় ঘটনা ছিল যে শোকে মুহ্যমান জাতি একেবারে দিশাহারা হয়ে পড়ে। এর বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করার মতো শক্তি সেই মুহূর্তে ছিল না। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে তখন কবরের নীরবতা। অথচ এই বাড়িতে কত মানুষের সমাগম হতো রোজ।
শোকের সাগরে ভেসে, সয়ে অনেক নির্যাতন, অনেক ত্যাগ স্বীকারের পর স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি ক্ষমতায় আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। কার্যকর হয়েছে দণ্ড। কিন্তু তার পরও কি ভুলে থাকা যায় শোক?
পৌরাণিক অনেক গল্প আছে, যেগুলোর সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এমনই এক গল্পের প্রধান চরিত্র ইলেক্ট্রা। গ্রিক ট্র্যাজেডিগুলোর মধ্যে একজন অন্যতম জনপ্রিয় এই পৌরাণিক চরিত্রটি। সফোক্লিসের ইলেক্ট্রা এবং ইউরিপিদেসের ইলেক্ট্রা, দুটি গ্রিক ট্র্যাজেডির প্রধান চরিত্র হিসেবে আমরা তাঁকে পাই। ইস্কিলুস, আলফিয়েরি ভলতাইরে, হফম্যানস্থাল এবং ইউজিন ও’নিল প্রমুখের নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইলেক্ট্রা। গ্রিক পুরাণে ইলেক্ট্রা ছিলেন রাজা আগামেমননের কন্যা। রাজা আগামেমনন ছিলেন ট্রয় যুদ্ধে গ্রিকদের প্রধান সেনাপতি। অগিস্থাস আগামেননকে হত্যা করে সিংহাসনে বসেন।
কবি শামসুর রাহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর কন্যার মধ্যে আগামেমনন ও ইলেক্ট্রা-এই দুটি চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর কবিতায়। গ্রিক পুরাণের এই গল্পটিই কি একটু ভিন্নরূপে ফিরে এসেছিল বাংলাদেশে?
ইলেক্ট্রা ও তাঁর ভাই ওরেস্তেসের সঙ্গে যৌথভাবে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন, তেমনি জাতির পিতার দুই কন্যা পিতৃহত্যার বিচার দাবিতে ছিলেন সোচ্চার। তাঁরা বিশ্বমানবতার কাছে পিতৃহত্যার বিচার চেয়েছিলেন। বিচার চেয়েছিলেন ইতিহাসের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে বিশ্বমানবতার কাছে প্রথম আবেদন রাখা হয় ১৯৭৯ সালের ১০ মে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বিশ্বমানবতার কাছে এই আরজি পেশ করেছিলেন তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা।
১০ মে ১৯৭৯। সেদিন স্টকহোমে অনুষ্ঠিত হয় সর্ব ইউরোপীয় বাকশালের এক সম্মেলন। ওই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তখন ভারত থেকে সুদূর সুইডেনে গিয়ে সম্মেলনে যোগ দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। সর্ব ইউরোপীয় নেতারা শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্ব করতে শেখ রেহানাকে অনুরোধ করেন। দিল্লি থেকে ফোনে শেখ হাসিনাও বোনকে বলেন সম্মেলনে যেতে। অনুষ্ঠানে কী বলতে হবে সে বিষয়ে তিনি টেলিফোনে ছোট বোনকে নির্দেশনা দেন। শেখ রেহানা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত আবদুর রাজ্জাকের আন্তরিক চেষ্টায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, স্পেনের সাবেক রাষ্ট্রদূত শেলী জামান ও সেলিমুজ্জামান।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁর পাঠানো বাণী পাঠ করেন শেখ রেহানা। বড় বোন শেখ হাসিনার পক্ষে বক্তব্যও দেন তিনি। এটাই ছিল কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে শেখ রেহানার প্রথম বক্তব্য রাখা। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে তিনিই সর্বপ্রথম পঁচাত্তরের কলঙ্কজনক ও অমানবিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তোলেন। সেদিন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, জাতিসংঘের মহাসচিব, জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কমিশনের চেয়ারম্যান, আমেরিকার কংগ্রেসের হিউম্যান রাইটস কমিটির চেয়ারম্যান, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের প্রধানদের কাছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন শেখ রেহানা। পঁচাত্তরের পৈশাচিক বর্ণনা দিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শেখ রেহানার আবেগঘন বক্তব্য সেই অনুষ্ঠানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। হলভর্তি প্রবাসী বাঙালি নারী-পুরুষ এবং বিদেশি রাজনীতিবিদ, পার্লামেন্ট সদস্য ও সাংবাদিক পিনপতন নীরবতায় তাঁর বক্তব্য শোনেন।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসীন করেন শেখ হাসিনা। তখন ‘ইনডেমনিটি’ অধ্যাদেশ বাতিল করার জন্য তাঁর সরকার আদালতের শরণাপন্ন্ন হয়। আদালত অধ্যাদেশটি সংবিধানের পরিপন্থী বলে রায় দেন। তারপর ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি’ অধ্যাদেশ বাতিল করা হয়।
অতঃপর ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচার অনুষ্ঠান না করে দেশের প্রচলিত আইনে স্বাভাবিক পন্থায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালের ১২ মার্চ বিচারকার্য শুরু হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বিচারক কাজী গোলাম রসুল মামলার রায় ঘোষণা করেন। ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হয়ে শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পর ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর ওই আপিলের তথা মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাঁচ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর হয়। এ ইতিহাস সবারই জানা।
আজ সেই ১০, ১৯৭৯ সালের এই দিনে ফিরে এসেছিল গ্রিক পুরাণের গল্প। গ্রিক পুরাণের গল্পের প্রধান দুই চরিত্র বোন ও ভাই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফিরে আসা গল্পের চরিত্র দুই বোন। ১৯৭৯ সালের এই দিনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চেয়ে দুই বোন আবেদন জানিয়েছিলেন বিশ্ববিবেক ও বিশ্বমানবতার কাছে। আজ দেশ ও জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। এই কলঙ্ক মোচনের প্রথম সোপান রচিত হয়েছিল আজকের এই দিনে সুদূর সুইডেনে। আর এই সোপান রচনায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা।
লেখক : এম নজরুল ইসলাম, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি।
- বন্যায় তিন জেলায় ১০ মৃত্যু, শেরপুরেই ৮ জন
- প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে সেনাবাহিনী জড়ো হয়নি, বিষয়টি গুজব
- নাগেশ্বরীতে গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতর
- দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে ইলিশ রপ্তানি
- বেরোবিতে হলের প্রভোস্ট বরাবর শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবি
- রাজশাহীতে বসে মোবাইলে রংপুর বিটিসিএল চালান জিএম
- ৪৫০ দিনের নির্মাণকাজ ৮৪৩ দিনেও শেষ হয়নি
- নতুন গাড়ি পেল ডিএমপির ১০ থানা
- সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ৫১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি
- সংশোধনীর অপেক্ষায় ৬০ হাজার এনআইডি
- অবসরের ঘোষণা দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
- শিক্ষককে মারধরের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
- ড্রাগন চাষে সফল খোরশেদ আলম
- পুত্রবধূর মৃত্যুর খবর শুনে শাশুড়ির মৃত্যু
- রংপুরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে রসিকের চেক প্রদান
- ভারতে যাওয়ার সময়, বিজিবির হাতে আটক ৫ বাংলাদেশি
- দুর্গাপূজার ছুটি একদিন বাড়িয়ে আজই প্রজ্ঞাপন
- মাছ চুরির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- রংপুর সিটির ৩৩ ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের দায়িত্ব পেলেন যারা
- সচিবদের ২৫ নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
- সেই ম্যাজিস্ট্রেটকে বহিষ্কার ও গ্রেফতারে আলটিমেটাম
- বিরলে দূর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সভা
- সেতাবগঞ্জ চিনিকল পুনরায় চালুর ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টার আশ্বাস
- দেবীগঞ্জে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে পৃথক দুই কমিটি
- বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ‘পুকুর’
- বিতর্কিত মন্তব্য করা সেই ম্যাজিস্ট্রেট সাময়িক বরখাস্ত
- ছেলের স্মৃতি আমাকে প্রতিদিন কাঁদায় : আবরার ফাহাদের মা
- এক বছরে ইসরায়েলের ৭২৮ সেনা নিহত
- বাংলাদেশে আসছেন নেইমার, দেখা করার সুযোগ পাবেন ভক্তরা
- চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেলেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন
- রংপুরে বাসের ধাক্কায় ২ নির্মাণ শ্রমিক নিহত
- সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক গ্রেফতার
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত
- ৯ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- ইউক্রেনের ‘বিজয় পরিকল্পনা’ প্রস্তুত, বলছেন জেলেনস্কি
- নামাজের সময়সূচি: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং
- নামাজের সময়সূচি: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- দুইজন একসঙ্গে সালাম দিলে কে উত্তর দেবেন?
- কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল আরিফুলের
- মণিপুরে সংঘাতের আবহে মিয়ানমার সীমান্ত কাঁটাতারে ঘিরে ফেলছে ভারত
- জীবিত স্কুলছাত্রকে হাত-পা-মুখ বেঁধে বালুচাপা দিয়ে মারার চেষ্টা
- জামিন পেলেন না মান্নান
- সহধর্মিণী হারালেন নাট্যকার মামুনুর রশীদ
- ষষ্ঠ-নবমে ৭০ নম্বরের বার্ষিক পরীক্ষা, থাকছে শিখনকালীন মূল্যায়নও
- ১৩ বছর পর চাকরি ফিরে পেলেন প্রধান শিক্ষক
- শাহ আমানতে আড়াই কোটি বৈদেশিক মুদ্রাসহ যাত্রী আটক
- এবার সরানো হলো ঢাকা ও রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে
- সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গ্রেফতার
- সীমান্তে হত্যা বন্ধে সব দলকে একসুরে কথা বলতে হবে: আখতার হোসেন
- নামাজের সময়সূচি: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং