• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

নামমাত্র দামে বই পড়ার সুযোগ করে দেন ‘বই দাদু’

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুর নগরীতে বইপ্রেমীদের কাছে পরিচিত নাম ‘বই দাদু’। ভদ্রলোকের নাম ওমর শরীফ। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের বিপরীতে শহীদ জররেজ মার্কেটের পুরাতন লাইব্রেরির কোণায় একটি বই দোকানের কর্ণধার তিনি। বয়স ৭০ ছুঁই ছুঁই। পাঠকদের পড়ার জন্যে এই বয়সেও তিনি বিনামূল্যে বই বিতরণ করেন। কাজটা তিনি তার তরুণ বয়স থেকেই করে আসছেন। অসংখ্য শিক্ষার্থী তার কাছ থেকে বই নিয়ে পড়ে উপকৃত হয়েছেন।

নামমাত্র দামে তিনি বই বিক্রি করেন ‘বই দাদু’। ২-৫ টাকার বিনিময়ে বই ভাড়াও দেন। আবার বই পড়ে কেউ ভালো লাগার কথা জানালে পুরো টাকাই ফেরত দিয়ে দেন তিনি।

এই তার আনন্দ, এই তার সুখ! বইপ্রেমীদের তিনি ভালো বই সম্পর্কে জানেন ও পড়তে উৎসাহিত করেন। এরাই রবীন্দ্রনাথের সেই 'আড়ালের মানুষ' যারা আমাদের সুখের কারণ। এরা প্রতিদান চায় না, এদের কাছে অর্থের চেয়ে প্রেম বড়! এরা বিত্তবান না হলেও বিত্তের অভাব নেই! মানুষের মনে প্রশান্তি ছড়িয়েই এদের সুখ, প্রায়ই এমন বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই বই পড়তে পছন্দ করি। তরুণ বয়স থেকে নিজের পাশাপাশি বই পড়ার আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এভাবেই স্বল্পমূল্যে বই দিয়ে থাকি। বিনামূল্যে বই পড়ার সুযোগও করে দিয়েছি। বইয়ের প্রতি আমার ভালোবাসা। বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরাতন বই সংগ্রহ করি। ভালবাসা থেকে পেশা হিসেবে নিয়েছি বই-বিক্রি। তবে আমার ব্যবসার ধরন অন্যদের তুলনায় ব্যতিক্রম। পাঠকদের বই পড়ার সুযোগ করে দেওয়া এবং তাদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়াই আমার লক্ষ্য।

জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, পৃথিবীর এই ক্লান্ত এ অশান্ত কিনারার দেশে এখানে আশ্চর্য সব মানুষ রয়েছে। সেই মানুষের মাঝে যদি আদর্শ, নীতি নৈতিকতা বই পড়ে অর্জন করতে পারবে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা। তারা জীবনকে উপলব্ধি করতে পারবে। জীবনে চলার পথকে আরও সুগম করতে পারবে। আমি যতদিন বেঁচে আছি সুস্থ আছি এভাবেই পাঠকদের বই দেব। নিজেকে নিয়োজিত রাখব বইয়ের মাঝে।

বই নিতে আসা একাধিক পাঠক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ‘বই দাদু’র কাছে বই নিতে আসি আমরা চার বন্ধু। দাদু স্বল্পমূল্যে বই পড়তে দেয়। সেই বই পড়ে খুব ভালো লাগে দাদুর সঙ্গে শেয়ার করলে ওই বইটির দাম তিনি ফেরত দেন। অনেক বই বিনামূল্যে নিয়ে গেছি। টাকার জন্য বই পড়তে পারব না, বা ঘুরে চলে যাব দাদু কখনো এটি হতে দেননি। তার উদারতা ও আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ। সমাজে এরকম মন-মানসিকতার মানুষ পাওয়া দায়। তার জন্য দোয়া করি যুগ যুগ বেঁচে থাকুক তিনি। তার মাধ্যমে যেন আমাদের মতো অজস্র পাঠকদেরকে বই পড়ার সুযোগ হয়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here