• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

Find us in facebook
সর্বশেষ:
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই আইন হিসেবে গণ্য হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ২৫ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত।

ভাসমান পেয়ারার বাজার দেখে মুগ্ধ ইন্দোনেশিয়ান রাষ্ট্রদূত

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ আগস্ট ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

ছোট ছোট ডিঙি নাও ভর্তি পেয়ারা, গায়ে গা লাগানো ডিঙি নাওয়ের ঢেউয়ের দোলায় দুলতে থাকা পেয়ারা কিনতে পাইকারি ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের ভিড়। তিনটি খালের মিলনকেন্দ্রের মনোরম দৃশ্য।

যেকোনো একটি খাল ধরে ভিতরে প্রবেশ করলে খালের দুপাশে সবুজের সমারোহ। চোখ জুড়ানো পেয়ারা বাগান ও ফসলের ক্ষেত। এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা বাজার দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো।

পেয়ারা বাগান ও বাজার ঘুরে দেখে এখানে পর্যাপ্ত শিল্পায়নের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবেন বলে জানালেন রাষ্ট্রদূত। এসময় তার সঙ্গে সফরসঙ্গী ছিলেন মিসেস সিনতা একা ওয়াতি সুবোলো। তিনি এগ্রিকালচার নিয়ে পড়াশুনা করেছেন বলে জানান সফরসঙ্গী থার্ড সেক্রেটারি ফিতরি নুরুল ইসলামি।

তিনি বলেন, মূলত মিসেস সুবোলোর উৎসাহেই আমাদের এই ভ্রমণ। আমরা এই পেয়ারা নিয়ে গবেষণা ও এখানকার চাষিদের উপকারের জন্য কিছু করতে আগ্রহী।

তাদের এই সফরে আরও উপস্থিত ছিলেন নোভো গ্রুপের চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমানের সহধর্মিণী সৈয়দা নাসরীন রহমান, নোভো গ্রুপের ব্যবস্থাপক এস এম মহিউদ্দিন বাদশা এবং পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উল্লাহ মজুমদারসহ লোকাল পুলিশের একটি অংশ রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করেন।

রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো মঙ্গলবার রাতে বরিশালে আসেন এবং স্থানীয় একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। বুধবার সকালে তিনি তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বরিশাল থেকে ২৯ কিলোমিটার দূরত্বে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি যাত্রা করেন। সেখানে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উল্লাহ মজুমদার এবং নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাকে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রদূত সুবোলো ও তার সফরসঙ্গীরা জলযান ভাড়া করে প্রথমে তিনটি খালের মোহনায় ভীমরুলির ভাসমান পেয়ারা বাজার পরিদর্শন করেন।

এখানে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর তিনমাস পেয়ারার মৌসুম বলে জানান, ভাসমান বাজারের পেয়ারা বিক্রেতারা। বাজারের ভিড়ে ছোট ছোট ডিঙি নাও ভর্তি পেয়ারা দেখতে রাষ্ট্রদূত ছাড়াও আরো অনেক দর্শনার্থীরা এসেছেন। চাষিরা জানান, প্রতিদিন গড়ে শত শত দর্শনার্থী আসা-যাওয়া করেন ভীমরুলি ও আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারার রাজ্যে।

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও তার সফরসঙ্গীরা উপরে উঠে ভীমরুলি বাজারও ঘুরে দেখেন। এসময় বিলাতি গাব, ডাব, পেপে ও কলাসহ বিভিন্ন ফলের সমারোহ দেখে তারা মুগ্ধ হন এবং তা ক্রয় করেন। এরপর রাষ্ট্রদূতসহ অতিথিরা আটঘর কুড়িয়ানার এশিয়ার সর্ববৃহৎ পেয়ারা বাগানের ভিতর প্রবেশ করেন।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী জলাবাড়ি ও সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের ৬৫৭ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ২৫টি পেয়ারার বাগান রয়েছে। শত বছর ধরে গ্রামগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে এই পেয়ারা চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু পেয়ারা পচনশীল ফল। অল্পসময় এটির সংরক্ষণ আয়ু। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সংরক্ষণের অভাবে এই পেয়ারা চাষিদের জীবনের কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং ক্রমশ পেয়ারা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।

তবে আশার কথা শোনালেন অনেক চাষি। তারা পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করছেন এবং সরাসরি গাছ থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করে ইদানিং ঢাকায় পাঠাতে পারছেন বলে জানান। দর্শনার্থী সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে বলে জানান চাষিরা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here