• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

Find us in facebook
সর্বশেষ:
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই আইন হিসেবে গণ্য হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ২৫ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শোভা ছড়াচ্ছে দুর্লভ লাল সোনাইল

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশে দুর্লভ ফুলের মধ্যে অন্যতম লাল সোনাইল। সেই দুর্লভ ফুলের দেখা মিলবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি)। সবুজের মাঝে ফুটন্ত গোলাপি রঙের লাল সোনাইল মোহিত করেছে শিক্ষার্থী ও ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের। প্রতিটি ডালে শোভা পাচ্ছে ছোট ছোট গোলাপি ফুল। 

গ্রীষ্মের খরতাপের মাঝে সবুজ গাছগাছালি আর রঙ-বেরঙের ফুলে ভরে আছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। গাছে গাছে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু আরও কত কত ফুল। তবে এবার নতুন ফুল লাল সোনাইলে সেজেছে ক্যাম্পাসের অস্থায়ী শহীদ মিনার। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকের সঙ্গে অস্থায়ী শহীদ মিনারের পেছনে দাঁড়িয়ে লাল সোনাইল। থোকায় থোকায় ঝুলছে গোলাপি রঙের এই ফুল। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা ছবি তুলে রাখছেন দুর্লভ এই ফুলের। 

বেরোবি ক্যাম্পাসে এই দুর্লভ লাল সোনাইল সংগ্রহের ক্ষেত্রে যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি নিসর্গবিদ মোকাররম হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি দুর্লভ গাছের চারা সংগ্রহ করে দিয়েছেন, যার মধ্যে লাল সোনাইল একটি। লাল সোনাইলের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া জাভানিকা (Cassia javanica)। এটি একটি উষ্ণমণ্ডলীয় ফুল। এছাড়া জাভা ক্যাসিয়া, গোলাপি ঝরনা নামেও পরিচিত এটি। 

বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে এ ফুল ফোটে। তবে বিভিন্ন দেশে জলবায়ুভেদে এর ফোটার সময় ভিন্ন হয়ে থাকে। ক্যাসিয়া জাভানিকা গাছ দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। বাংলাদেশের সব জায়গায় এই ফুল দেখা না গেলেও পাহাড়ি অঞ্চলে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়াসহ উষ্ণমণ্ডলীয় এলাকায় এ ফুল ফোটে।  লাল সোনাইল ফুল গাছের বিষয়ে কথা হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের ডিন ও অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদের সঙ্গে। যিনি এই ক্যাম্পাসকে বিভিন্ন গাছে সাজিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চার শতাধিক প্রজাতির প্রায় সাঁইত্রিশ হাজার গাছ লাগিয়েছি। এই গাছগুলো সংগ্রহে বিভিন্নজন সহযোগিতা করেছেন। কেউ গাছ কিনে দিয়ে সহযোগিতা করেছেন; শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা গাছের পরিচর্যা করে সহযোগিতা করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব দুর্লভ গাছের চারা লাগানো হয়েছে, সেগুলো সংগ্রহ করতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন নিসর্গবিদ মোকাররম হোসেন। উনি অনেকগুলো দুর্লভ গাছের চারা সংগ্রহ করে দিয়েছেন, তার মধ্যে একটি হচ্ছে লাল সোনাইল গাছ। এই ক্যাম্পাসে তিনটি লাল সোনাইল রয়েছে। একটা গাছে দুই বছর ধরে ফুল ফুটছে, একটায় এ বছর ফুটেছে। আশা করি, অন্যটিতে আগামী বছর ফুটবে।

তিনি আরও বলেন, এই লাল সোনাইল অন্যরকম। আলাদা ফুল হওয়ায় এর দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয়। আবার ফুল ফোটার ধরনটাও আলাদা। গাছের গড়ন, সৌন্দর্যও দারুণ। চারদিকে লম্বা ডাল ছড়িয়ে যায়। ডালের ওপর বরাবর ফুল ফুটে থাকে। দেখে মনে হয় কেউ একের পর এক সাজিয়ে দিয়েছে ফুলগুলো। এবার ক্যাম্পাসে প্রচুর কৃষ্ণচূড়া আর জারুল ফুটেছে। যেদিকে তাকাই সেদিকেই ফুল। কিন্তু দুটো গাছে ফুটেছে মাত্র লাল সোনাইল ফুল। একটি আড়ালে হওয়ায় চোখে পড়ে না। অন্যটি শহীদ মিনারের সঙ্গে বিধায় সবার নজরে আসে। অনেকে শুধু লাল সোনাইল দেখতে ক্যাম্পাসে আসছে। 

লাল সোনাইলের বংশ বৃদ্ধির বিষয়ে তুহিন ওয়াদুদ বলেন, লাল সোনাইল বাংলাদেশে খুব একটা দেখা যায় না। রংপুরে খুব কম। রাজশাহীতে কয়েকটা গাছ দেখেছি। ঢাকায় এখন লাগানো হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে। তবে বীজ থেকে যেহেতু এই গাছ উৎপাদন করা যায়। আমরা ভেবেছি এবার যদি বীজ পাই, তাহলে অনেক মানুষের কাছে বিতরণ করব। যাতে ছড়িয়ে পড়ে এই গাছ। 

তিনি আরও বলেন, এই ফুলকে লাল সোনাইল বলছি ঠিকই, কিন্তু ফুলটার মধ্যে গোলাপি রঙের আভাটাই বেশি। রংপুরে যেহেতু ভালো ফুল হচ্ছে, তাই বোঝা যাচ্ছে এখানকার মাটি ও আবহাওয়া দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here