• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

দণ্ড নির্ধারণে আলাদা শুনানি করতে হবে, হাইকোর্টের রায়

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

ফৌজদারি মামলায় রায় ঘোষণার আগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাজা বা দণ্ড দেওয়ার বিষয়ে বিচারিক আদালত ও ট্রাইব্যুনালকে আলাদা করে শুনানি করতে হবে। সাজা নির্ধারণে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার আগে একটি তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

হাইকোর্টের এক রায়ে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ যশোরের এক শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে এই নির্দেশনা দেন। 

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশ করা হয়। ৮৪ পৃষ্ঠার রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ।

এ রায়ের বিষয়টি জানিয়ে সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের প্রতি সার্কুলার জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রায়ে হাইকোর্ট বলেন, মামলায় যখন উভয় (বাদী-বিবাদী) পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তি-তর্ক শেষ হবে, তখন অভিযুক্তকে দণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে উন্মুক্ত আদালতে বিচারককে সে অভিমত জানাতে হবে। এরপর বিচারক অভিযুক্তের শাস্তি বা সাজার বিষয়ে শুনানির জন্য সংক্ষিপ্ততম সময়ের মধ্যে একটি তারিখ নির্ধারণ করে দেবেন, যাতে উপযুক্ত বা আনুপাতিক সাজা আরোপ করা যায়।

‘আতাউর মৃধা বনাম রাষ্ট্র’ মামলায় আপিল বিভাগের রায় উদ্ধৃত করে হাইকোর্ট রায়ে আরো বলা হয়, ‘সাজা নির্ধারণের শুনানিতে পক্ষগুলোকে অভিযুক্তের অপরাধের সামাজিক প্রেক্ষাপট, অভিযুক্তের বয়স, চরিত্র, অর্থনৈতিক অবস্থা, ব্যক্তি বা সমাজের অভিঘাত, অপরাধের ধরন অর্থাৎ অভিযুক্ত অভ্যাসগত, পেশাদার অপরাধী কি না, নাকি আকস্মিক অপরাধী ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরতে হবে।’

সাজা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিচারকের মূল্যায়ন কী হবে, তা তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, ‘সে শুনানির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি সাজা আরোপের ক্ষেত্রে বিচারককেও অপরাধীর এসব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের ওপর শাস্তি আরোপের প্রভাব, বিলম্ব বিচারে অভিযুক্তের মানসিক পীড়ন এমনকি অপরাধীর সংশোধনের বিষয়টিও ভাবতে হবে। এরপরেই কেবল বিচারক অভিযুক্তের সাজার রায় ঘোষণা করতে পারবেন।’

প্রায় এক দশক আগে যশোরে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে আনোয়ার হোসেন ও লাভলু নামে দুইজনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২৪ মার্চে মামলা হয়। দুই আসামির মধ্যে আনোয়ার মারা গেলে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল লাভলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। বিচারের পর ২০১৭ সালের ৩০ মে এ মামলার রায় দেন যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে লাভলুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে নিয়ম অনুযায়ী লাভলুর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য রায়সহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে, যা ডেথরেফারেন্স নামে পরিচিত। লাভলুও রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করেন। এই ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষে গত ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত ডেথ রেফারেন্স খারিজ ও লাভলুর আপিল আংশিক গ্রহণ করে রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে লাভলুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।

Place your advertisement here
Place your advertisement here