• মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৬ ১৪৩১

  • || ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

গণঅভ্যুত্থানের একমাস পূর্তিঃ বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের চ্যালেঞ্জ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের একমাস পূর্তি আজ (৫ সেপ্টেম্বর)। এদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার মধ্যদিয়ে অর্জন হয় এক দফা দাবির চূড়ান্ত বিজয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলছেন, ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সে লড়াই দেখিয়েছে মুক্তির পথ। এখন বৈষম্যহীন সমাজ গঠনই একমাত্র চ্যালেঞ্জ।

তখন দুপুর। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরে রাজপথে হাজারো মানুষের ঢল। ঢাকার অলিগলি থেকে নানা বয়সি, আর শ্রেণি-পেশার মানুষের মিছিলের গন্তব্যস্থল হয়ে ওঠে রাষ্ট্র পরিচালনার কেন্দ্রস্থল গণভবন। এরপরের দৃশ্য যেন এখনও তাজা কোটি বাঙালির স্মৃতিতে।

হাতে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে সেদিন মানুষের ঢলে ছিল নতুন সব স্লোগান। ছিল, দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভের কথা, যা পেতে রাজপথে ঝরে হাজারো ছাত্র-জনতার তাজা প্রাণ। নতুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি ঠাঁই পেয়েছে 'জুলাই বিপ্লব' হিসেবে।

ঘটনার শুরু জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ। সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শান্তিপূর্ণ সে আন্দোলন গতি পায় তৎকালীন সরকারপ্রধানের করা 'রাজাকার' মন্তব্যকে ঘিরে। বিক্ষোভ দমাতে পরদিন ছাত্র-জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় সরকারের পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগ।

১৭ জুলাই ছাত্রদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর খবর। পুলিশের গুলির সামনে নিরস্ত্র সাঈদের বুক পেতে দেয়ার ছবি হয়ে ওঠে আন্দোলনের মূল পোস্টার।

পরিস্থিতি সামাল দিতে এরপর ভিন্ন কায়দায় হাঁটে শেখ হাসিনার সরকার। বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর চলে নির্বিচার গুলি। গণমাধ্যমে প্রতিদিনই ওঠে আসে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর খবর। ধীরে ধীরে কোটা সংস্কার আন্দোলন গড়ায় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে। সে দাবি পূরণের আগ মুহূর্তে, ৪ আগস্ট বিশ্ববাসী দেখে ভয়াল এক বাংলাদেশ। সংঘর্ষ আর গুলিতে একদিনেই ঝরে শত ছাত্র-জনতার প্রাণ।

মুক্তিযুদ্ধের পর আর কোনো আন্দোলনে এত প্রাণহানি দেখেনি বাংলাদেশ। জুলাই গণহত্যার সে দিনগুলোর কথাই মনে করিয়ে দিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তানজিনা তামিম হাফসা।

তিনি বলেন, ‘১৫ বছরের ফ্যাসিজম হটানো সহজ কাজ না। আমরা রাজপথে থেকে সবাই মিলে এটা করতে পেরেছি।’

এতো প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ নিয়ে এখন গণমানুষের প্রত্যাশারও যেন শেষ নেই। সে কাতারে আছেন আন্দোলনের সমন্বয়করাও। তারা বাড়তি মনোযোগ দিলেন রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কারে এবং দাবি জানালেন, জুলাই গণহত্যার যথাযথ বিচারের।

সমন্বয়ক তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শুধু মানুষের পরিবর্তন চাই না। আমরা চাই পদ্ধতিগত পরিবর্তন। এর মাধ্যমে মানুষের অধিকার, চাওয়া-পাওয়া পূর্ণ হবে বলেই মনে করি।’

তার কথার সাথে সুর মিলিয়ে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, ব্যক্তি হাসিনা চলে গেছেন; কিন্তু তার গড়ে তোলা ফ্যাসিবাদ রয়ে গেছে। আমরা এর মূলে কুঠারাঘাত করতে চাই; আইনের শাসন নিশ্চিত করতে চাই।

বৈষম্যহীন যে সমাজব্যবস্থার চেতনায় জুলাই বিপ্লব, তা পূর্ণতা পাক আইনের শাসন, মানবাধিকার আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন বাংলাদেশে। এ প্রত্যাশাই এখন স্বজন, সহযোদ্ধা হারানো মানুষদের।

Place your advertisement here
Place your advertisement here