• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায়ই ঘটছে হত্যা-সংঘর্ষের ঘটনা। অপহরণ, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে জড়াচ্ছে একাধিক গ্রুপ। চলমান রোহিঙ্গা সংকটের ছয় বছর অতিক্রম হলেও প্রত্যাবাসন বিষয়ে আশার আলো নেই। ফলে নানা অপরাধের কারণে বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দেশের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যাবাসনে বিলম্ব হওয়ায় রোহিঙ্গারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে পরিচয় গোপন করে কৌশলে নিচ্ছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট। তাই দিনে দিনে দেশের  জন্য চরম বিষফোড়ায় পরিণত হচ্ছে রোহিঙ্গারা। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র মতে, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে গত ছয় বছরে দুই শতাধিক রোহিঙ্গা খুন হয়েছেন। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, মাদক চোরাচালানের টাকা ভাগাভাগির জের ধরেই অধিকাংশ খুনের ঘটনা ঘটেছে। আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) ও আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) নামের মিয়ানমারভিত্তিক দুটি প্রধান সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপগোষ্ঠী হিসেবে আরও ১০-১২টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী ক্যাম্পে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়েই চলেছে।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ অভিযান চালিয়েছে সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), জেলা পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা।

ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএন অধিনায়ক ও পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর বলেন, ক্যাম্পের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারে শনিবার বিকাল থেকে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিন ১৪ এপিবিএন নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বিশেষ অভিযানের সূত্রপাত করা হয়। এপিবিএনকে সহযোগিতা করতে জেলা পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা অভিযানে অংশ নেন। উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে যে কোনো সময় এ অভিযান চলবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে।

১৪ এপিবিএন অধিনায়ক ও পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি সৈয়দ হারুন অর রশীদ বলেন, ক্যাম্পে ঘটমান অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যৌথ অভিযানের সিদ্ধান্ত হয় গত মঙ্গলবারের বিশেষ সমন্বয় সভায়। চলমান রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছর উদযাপনের পরই অভিযান শুরুর নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল। সে অনুযায়ী শনিবার অভিযান শুরু হয়েছে। শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি অপরাধীরা যেন ক্যাম্পে ঢুকতে না পারে, সে জন্য কেটে ফেলা কাঁটাতারের বেড়া সংস্কার, প্রয়োজনীয়সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরাযুক্ত পর্যবেক্ষণ চৌকি চালু ও যাতায়াতের সংযোগ সড়কগুলোয় একাধিক তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়ার পালংখালী থেকে আরসার অর্থসম্পাদক হিসেবে পরিচিত মাওলানা ইউনুসকে পাকিস্তনের তৈরি একটি রিভলবারসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। আমরা তৈরি রয়েছি, সবার সমন্বয়ে একেক সময় একেকটি ক্যাম্পে অভিযান চলমান থাকবে। 

প্রত্যাবাসনে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের মতে, ক্যাম্পের নিরাপত্তায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হলেও অনেক ক্যাম্পের কাঁটাতার কেটে পথ করা হয়েছে। আরসা, আরএসও ও অন্যান্য সন্ত্রাসীবাহিনীর সদস্যরা সুবিধাজনক সময়ে সেই কাটা অংশ দিয়ে ক্যাম্পে আসা-যাওয়া করে এবং হত্যা, অপহরণসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে নিরাপদ আস্তানায় চলে যায় তারা। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর গত ছয় বছরে আরসার সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহসহ দুই শতাধিক রোহিঙ্গাকে হত্যা করলেও খুনিদের আইনের আওতায় আনা যায়নি। এতে আতঙ্কিত সময় কাটে সাধারণ রোহিঙ্গাদের। রাত হলে ক্যাম্পগুলো অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here