• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

বাংলাদেশকে ফাইজারের টিকা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

বাংলাদেশসহ ৯২টি দেশের জন্য ফাইজার বায়োএনটেকের ৫০ কোটি ডোজ টিকা কিনবে যুক্তরাষ্ট্র। জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগমুহূর্তে গত বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস এ ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্বের শিল্পোন্নত সাত দেশের শীর্ষ সম্মেলনে বাইডেন টিকা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার তুলে ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউস জানায়, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও গ্যাভির কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্টের (এএমসি) নির্দিষ্ট করা ৯২টি নিম্ন ও নিম্ন মধ্য আয়ের দেশকে ৫০ লাখ ডোজ টিকা অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে। আগস্ট থেকে এসব টিকা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে সরবরাহ শুরু হবে। চলতি বছরের মধ্যে ২০ কোটি এবং আগামী বছরের প্রথমার্ধে দেওয়া হবে বাকি ৩০ কোটি ডোজ।

এর আগে গত ৩ জুন যুক্তরাষ্ট্র তার মজুদ থেকে আট কোটি ডোজ টিকা বিশ্বকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। ওই আট কোটি ডোজের মধ্যে ছয় কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। যুক্তরাষ্ট্র তার মজুদ থেকে প্রথম দফায় আড়াই কোটি ডোজ টিকা অন্য দেশকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশের জন্য প্রথম দফায় ৭০ লাখ ডোজ টিকা বরাদ্দ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস গত ৩ জুন জানায়, মজুদ থেকে প্রথম দফায় ছেড়ে দেওয়া টিকার ৭৫ শতাংশ তারা টিকার বৈশ্বিক উদ্যোগ ‘কোভ্যাক্স’-এর মাধ্যমে দেবে।

এদিকে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চেয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট দেশের চাহিদা মেটাতে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ ও কোভ্যাক্স ঝুঁকিতে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর ৩০ কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সরবরাহের আদেশ দিয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এখনো অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ অনুমোদন করেনি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে মডার্না ও ফাইজারের টিকা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে টিকা দেবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু কত টিকা দেবে তা জানায়নি।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরো বলেছেন, এর দ্বিতীয় ডোজের টিকার ঘাটতি পূরণের জন্য বিভিন্ন দেশকে টিকা পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সবাই টিকা দেবে বলেছে। কিন্তু হাতে আসছে না। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অনেক অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আছে জেনে সঙ্গে সঙ্গে তাদের অনুরোধ জানালাম। পরে জানা গেল, করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা কম বলে যে দেশগুলোতে টিকা দেওয়া হবে তার অগ্রাধিকারের তালিকায় বাংলাদেশ নেই। পরে অবশ্য জেনেছি, আমাদেরও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে। এ ছাড়া কোভ্যাক্স থেকেও দেবে। কত দেবে সেটা বলেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে টিকা পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী করোনার টিকা সর্বজনীন করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথম থেকেই বলে আসছেন যে টিকা যেন সর্বজনীন পণ্য হিসেবে গণ্য হয়। আর সব দেশের লোকের তা বৈষম্যহীনভাবে পাওয়া উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মোট টিকার ৯৯.৭ শতাংশ আছে ধনী দেশগুলোর কাছে। মাত্র ০.৩ শতাংশ আছে গরিব দেশগুলোর কাছে। এ জন্য টিকা নিয়ে হাহাকার। কেউ টিকা পাচ্ছে না।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের কাছে রিপোর্ট এসেছে। অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা হচ্ছে আড়াই কোটি, অথচ তারা টিকা সংগ্রহ করেছে ৯ কোটি ৩৮ লাখ। আমরা তাদের কাছেও চেয়েছি। তারাও বলেছে দেবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আগামী রবিবার দুটি ফ্লাইট পাঠিয়ে চীন থেকে ছয় লাখ ডোজ টিকা আনা হবে। এ ছাড়া চীনের কমিউনিস্ট পার্টিও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে কভিড চিকিৎসাসামগ্রী পাঠাচ্ছে। তিনি আরো জানান, যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের বিষয়েও আলোচনা চলছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। এ দেশেই কভিড টিকা উৎপাদন করতে পারলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশ বিদেশে রপ্তানিও করতে পারবে।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকার উদ্বিগ্ন। গত দুই-তিন দিনে সেখানে পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ১৪ শতাংশের বেশি হচ্ছে। জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের কোভ্যাক্সের টিকা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশ বলেছে, জনগণকে টিকার আওতার বাইরে রেখে রোহিঙ্গাদের টিকা দেওয়া অসম্ভব হবে। বরং জাতিসংঘ যদি কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য টিকার ব্যবস্থা করে তবে বাংলাদেশের আপত্তি থাকবে না।

Place your advertisement here
Place your advertisement here