• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

রংপুরে লাঙ্গল কাঁধে লড়বেন যারা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। এতে রংপুর-১ আসনে এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, রংপুর-২ আসনে আনিছুল ইসলাম মণ্ডল, রংপুর-৩ আসনে জিএম কাদের, রংপুর-৪ আসনে মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল, রংপুর-৫ আসনে আনিছুর রহমান এবং রংপুর-৬ আসনে নুর আলম মিয়া ওরফে যাদু মিয়াকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

এদিকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি) আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সদস্য ছিলেন।

তিনি পারিবারিক সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২০১৮ সালে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে শাহরিয়ার আসিফ জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সভাপতি পদে আছেন।

এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়ায় এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে রংপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

রংপুর-২ (বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ) আসনে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া আনিছুল ইসলাম মণ্ডল এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রবাসফেরত এই ব্যবসায়ী প্রথমবার নির্বাচিত হলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হন। সেইবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন।

এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। তিনি ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন।

রংপুর-৩ (সদর ও সিটি কর্পোরেশন) আসনে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি রংপুর-৩ ছাড়াও ঢাকা- ১৭ আসন থেকে লাঙল প্রতীকে লড়ার দায়িত্ব পেয়েছেন।

জি এম কাদের দেশের পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী। তিনি সপ্তম, অষ্টম, নবম ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। এছাড়া তিনি জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন।

জিএম কাদের লালমনিরহাট-৩ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে তিনি রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে নবম ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় লালমনিরহাট-৩ আসন থেকে নির্বাচন করে জয়ী হন। তবে, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হন।

বর্তমানে রংপুর -৩ আসনে তার ভাতিজা এরশাদপুত্র রাহগীর আলমাহি সাদ সংসদ সদস্য। এবার রওশন এরশাদপন্থিরা পার্টির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ না করায় সাদের নির্বাচন করা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল।

রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া) আসনে মোস্তফা সেলিম বেঙ্গলকে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পেশায় ব্যবসায়ী এই নেতা জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব পদে রয়েছেন। তিনি এর আগেও সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।

মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল রংপুর জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক। তিনি ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।

রংপুর-৪ আসনে চতুর্থবারের মতো প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি। তিনি ২০০৮ সাল থেকে এ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বর্তমান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী।

রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে এবারই প্রথম দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আনিছুর রহমান। তিনি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার ছোট ভাই। ইতোমধ্যে তিনি ওই আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমান এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী। তার ছেলে রাশেক রহমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য। তিনি এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করবেন নূর আলম মিয়া ওরফে যাদু মিয়া। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক। দশম সংসদ নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন।

এই আসনে গতবারের মতো এবারে নৌকার হাল ধরতে মনোনয়ন পেয়েছেন সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ির আসন পীরগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গত ২০ নভেম্বর থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে জাপা। ২৩ নভেম্বর ছিল ফরম বিক্রির শেষ দিন। পরে তা শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here