• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

রংপুরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় আগেই 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলেও রংপুর ছিল ব্যতিক্রম। মূলত সারা দেশে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই রংপুরে যুদ্ধ শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরে চলা পাকিস্তান সরকারের শাসন, শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রংপুরের মানুষ ছিল সুসংগঠিত। তারা প্রতিরোধের আগুনে ফুঁসতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আগে ৩ মার্চ রংপুর শহরে মিছিল বের করে বিক্ষুব্ধ জনতা। সেই মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় ১২ বছরের শংকু সমজদার। স্বাধীনতার গণ-আন্দোলন-সংগ্রামের প্রথম শহীদ বলা হয় শংকুকে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে জানা গেছে, ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী সারা দেশে বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। কিন্তু এর এক দিন আগেই রংপুরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ২৪ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ট্যাংক ডিভিশনের পাঞ্জাবি ক্যাপ্টেনসহ তিন জওয়ানকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করে রংপুরের মানুষ। এদিন রংপুর শহরের উপকণ্ঠের নিসবেতগঞ্জ এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর একটি জিপ গাড়িতে হামলা করে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে আব্বাসী নামে সেনাসদস্যকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন স্থানীয় শাহেদ আলী নামের এক যুবক। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরে। বাড়তে থাকে পাকিস্তানি সেনাদের ক্রোধ আর প্রতিশোধের মহড়া। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি বাহিনী সিরিজ হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে।

এ ঘটনায় মানুষ আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। যেন মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই রংপুরে যুদ্ধ শুরু করেছিল মুক্তিকামী দামাল ছেলেরা। সেই যুদ্ধের অংশ হিসেবে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণের ছক তৈরি করে স্থানীয় সাহসী জনতা। ছক অনুযায়ী ২৮ মার্চ রংপুর ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণের আগের দিন, অর্থাৎ ২৭ মার্চ পাকিস্তানি সৈন্যরা রংপুর ইপিআর ক্যাম্পে হানা দিয়ে বাঙালি জোয়ানদের গ্রেপ্তার করে এবং তাঁদের সব অস্ত্র ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়। রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তারের জন্য বিশাল গাড়িবহর নিয়ে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চলে। তবু দমে যায়নি রংপুরের স্বাধীনতাকামী মানুষ। ২৮ মার্চ বাঁশের লাঠি, তির-ধনুক নিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করে  ইতিহাসের জন্ম দেয় বীর বাঙালি।

তথ্যসূত্র: রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের ওয়েবসাইট ও কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে পাওয়া। 
লেখক, এস এম আরিফ-উজ-জামান
সাধারণ সম্পাদক, সারথি নাট্য সম্প্রদায়, রংপুর।

Place your advertisement here
Place your advertisement here