• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

Find us in facebook

‘স্বাস্থ্যসেবায় মেডিটেশনের অন্তর্ভুক্তি চিকিৎসা ব্যয় কমবে’ 

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

উদ্বেগ, বিষন্নতা, স্ট্রেস, অনিদ্রা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোক জাতীয় সমস্যা নিরসনে বিদ্যমান চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিপূরক হিসেবে মেডিটেশনকে অন্তর্ভুক্ত করায় স্বাগত জানিয়েছেন দেশবরেণ্য বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। 

তারা বলেছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী ও যুগান্তকারী একটি সিদ্ধান্ত। চিকিৎসাশাস্ত্রের কারিকুলামেও মেডিটেশন বিষয়কে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান তারা। 

শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি মিলনায়তনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে মেডিটেশনের অন্তর্ভুক্তি: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এ আহ্বান জানান চিকিৎসকরা। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন। সেমিনারে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের চার শতাধিক চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও কথাসাহিত্যিক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র ফ্যাকাল্টি অব বেসিক সায়েন্স অ্যান্ড প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্সের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান এবং বিএসএমএমইউ’র প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নিজামউদ্দিন আহমদ।  সেমিনারে ‘চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে মেডিটেশন’ শিরোনামে একটি তথ্যবহুল ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। 

সম্প্রতি স্বাস্থ্যসেবায় মেডিটেশনের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক জারিকৃত পত্রে দেশব্যাপী স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে বিষয়টি অবহিত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে। 

ডা. শাহলা খাতুন বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা মানুষের দেহ ও মনকে ভুলে শুধুমাত্র রোগ নিরাময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু রোগ নিরাময়ের পাাশাপাশি মনেরও চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসাশাস্ত্র প্রতিনিয়ত আধুনিক হচ্ছে। মেডিটেশনের মাধ্যমে ভালো চিন্তা জিনকেও বদলে দিতে পারে।

মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবায় অন্তর্ভুক্ত করায় সরকারের প্রতি স্বাগত জানিয়ে ডা. এম ইকবাল আর্সলান বলেন, মেডিটেশন চর্চায় স্বাস্থ্য ব্যয় সাশ্রয় হয়, যা জাতীয় স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমি মনে করি, মেডিটেশনকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারলে স্বাস্থ্য খাতে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। মেডিটেশনকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।     

সেমিনারে চিকিৎসকরা বলেন, রোগ নিরাময়, প্রতিরোধ ও প্রশমনে মেডিটেশনের ভূমিকা এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত। সারা পৃথিবীতে এটি স্বাস্থ্যসেবারই অংশ। বিজ্ঞানীদের মতে, মেডিটেশন হচ্ছে মস্তিষ্কের ব্যায়াম। দৌড়ালে যেমন পায়ের পেশী শক্তিশালী হয়, সাঁতার কাটলে বাইসেপ শক্তিশালী হয়; তেমনি নিয়মিত মেডিটেশন করলে মস্তিষ্কের কর্মকাঠামো সুবিন্যস্ত, সুসংহত, গতিময় ও প্রাণবন্ত হয়। পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য প্রয়োজন শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক- এ চার ক্ষেত্রেরই সুস্থতা। অর্থাৎ টোটাল ফিটনেস। এক্ষেত্রে যোগ-মেডিটেশন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মতামত দেন বক্তারা। 

স্বাস্থ্যসেবায় মেডিটেশনের এ অন্তর্ভুক্তি ও কার্যকর করার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন শারীরিক ও মনোদৈহিক সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদেরকে বিদ্যমান চিকিৎসার পাশাপাশি পূর্ণ সুস্থতার জন্যে নিয়মিত মেডিটেশন, ইয়োগা ও দমচর্চার পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানান আলোচকরা। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here