• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

Find us in facebook

আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমিসহ ঘর পাওয়াদের অধিকাংশ এখন স্বচ্ছলতার পথে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

স্বপ্নের ঘর গুছিয়ে নিয়েছেন তাহমিনা খাতুন ও মহিউদ্দিন দম্পতি। তাহমিনা এমএ আর মহিউদ্দিন ফাজিল পাস। তাহমিনা স্কুলে চাকরি করতেন আর স্বামী মহিউদ্দিন ইটভাটায় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। তাহমিনার ইচ্ছা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ছেলে-মেয়েদের তিনি লেখাপড়া শেখাবেন।

মহিউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে ঘর দিয়েছেন, আমাদের এখন আর পিছে ফিরে তাকানোর কিছু নেই। আমরা এখন চাচ্ছি জীবন-জীবিকা উন্নয়নের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে চলার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। মহিউদ্দিন আরও বলেন, এর আগে তিনি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তার যে ঘর ভাড়ার টাকা লাগতো, এখন সেই টাকাটা তার থেকে যাচ্ছে। কিছু টাকা জমিয়ে ঘরের অল্প একটু অংশ বাড়তি করে তৈরি করেছেন এবং খোলা জায়গায় গোসল করায় সমস্য হয় বলে ঘরের সামনে একটি টিউবয়েলে স্থাপন করছেন। সন্তানের জন্য তিনি কিছু সঞ্চয়ও করছেন।

মহিউদ্দিনের স্ত্রী মোসাম্মৎ তাহমিনা বলেন, তিনি ঘরের চারপাশে সবজি লাগিয়েছেন। এর ফলে তার তেমন একটা সবজি কিনতে হয় না। এটি হলো একটি পরিবারের দিন বদলের গল্প। শুধু তিনিই নন অনেকেই আজ নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন।

মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ফকিরের বাছড়া গ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্প ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ফকিরের বাছড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, ঘরের সামনে, পেছনে, পাশে অল্প একটু জমি খালি। তাতেই লাগিয়েছেন পুঁই শাক, বেগুন, বরবটি, কুমড়া। এর মধ্যে হাঁস-মুরগি, রাজ হাঁসের ডাকে মুখরিত ঘরগুলো। আশ্রয়ণের পাশের পুকুরে হাঁসের মেলা। কেউ কেউ লালন পালন করছেন গরু ও ছাগল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুই শতক জমিতে গড়ে তোলা ঘরের পাশের অংশ খালি রাখছেন না কেউই। দীর্ঘদিনের গৃহহীন, ভূমিহীন, আর্থিক অস্বচ্ছল মানুষগুলো নিজেদের মত করে সাজিয়ে তুলছেন আপন ভুবন। যারা ঘর পেয়েছেন তারা শাকসবজি চাষ, গৃহপালিত পশু-পাখি লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হবার চেষ্টা করছেন। দেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখছেন না কেউই।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে যেসব ভাসমান গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষ ঘর পেয়েছেন তাদের এখন কিছু নিয়মিত শাকসবজি না কিনলেও তারা চলতে পারছেন। এছাড়া নিজেদের চাষ করা সবজির কিছু অংশ তারা বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছেন। এছাড়া অনেকে হাঁস-মুরগি পালন করছেন। অনেক মহিলা কাঁথা সেলাই করে তা বিক্রি করে আয় করছেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা প্রায় এক বছর আগে ঘর পেয়েছেন তাদের বেশিরভাগই এখন কোনো না কোনভাবে জীবন জীবিকা উন্নত করার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা কেউই আর পেছনে ফিরে তাকাচ্ছেন না। সকলের মুখেই হাসি। তাদের এখন সামনে এগিয়ে যাবার পালা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের হাজেরা খাতুন (৩৪) বলেন, তার এক ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তিনি আশা একসময় ছেলে বড় হয়ে সরকারি চাকরি পাবে এবং তার মায়ের দুঃখ দূর করবে।

হাজেরা খাতুন আরও বলেন, আমি ঘরের সামনে সবজি বাগান করেছি। এতে করে আমার সবজি কিনা লাগে না। শুধু চাল ডাল কিনলেই হয়। বর্তমানে তিনি মানুষের বাসায় কাজ করছেন বলে জানান। কাজের ফাঁকে এই সবজি চাষ করেন এবং কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করেন। সেই টাকা দিয়ে চলে সন্তানের লেখাপড়ার খরচ।

হাজেরা বলেন, মানুষ অনেক স্বপ্ন দেখে কিন্তু সব স্বপ্ন তো পূরণ হয় না। তবে আমার একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, তা হল ঘর। আমার স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূরণ করেছেন।

জমিসহ ঘর পাওয়া রিনা খাতুন (৩৫) বলেন, তার দুই সন্তান। স্বামী আব্দুর রহমান কৃষিকাজ করেন এবং তিনি কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করেন। এছাড়া রিনা খাতুন দুটি ছাগল লালন-পালন করছেন। আগামী কোরবানির ঈদে ছাগল দুটো বিক্রি করার আশা করছেন তিনি।
#বার্তা টুয়েন্টিফোর।

Place your advertisement here
Place your advertisement here