• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

পথ যতই বন্ধুর হোক, থেমে থাকব না: প্রধানমন্ত্রী

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারি ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

চলার পথ যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, যত রক্তক্ষরণ হোক সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যে লক্ষ্য স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য অর্জনে নতুন প্রজন্মকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। গতকাল রবিবার রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠান হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অথনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করে।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় উন্নয়ন সহযোগীরা আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার করে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডির প্রশাসক সামান্থা পাওয়ার বলেন, উন্নয়নের পাশাপাশি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) অফিস প্রধান মিরজানা স্পলজারিক ইগার বলেন, অগ্রগতি অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পথ চলা আরো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্র্যাজুয়েশন প্রাপ্তিকে টেকসই করতে উত্তরণের সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি ‘জাতীয় সরল উত্তরণ কৌশল (স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্র্যাটেজি)’ প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই জাতীয় দলিলে উত্তরণের সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সব ধরনের দিকনির্দেশনাসহ কার্যকর কৌশল থাকতে হবে।’

সম্যক গবেষণা ও সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রমাণনির্ভর সময়োপযোগী কার্যকর কৌশল প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবই। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের স্বীকৃতি এই স্বপ্ন বাস্তবায়নকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি, স্বাধীনচেতা হলে অনেক বাধা আসে, আর দেশকে ভালোবেসে শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে যারা পথ চলে, তাদের পথচলা কখনো সহজ হয় না। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। চলার পথ যত অন্ধকারাচ্ছন্নই হোক না কেন, যত বন্ধুর হোক না কেন, যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, সেখানে আমরা থেমে থাকব না। অন্তত আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি, থেমে থাকব না।’

‘চলার পথ যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, যত রক্তক্ষরণ হোক, সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাব—এটাই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বিখ্যাত কবি রবার্ট ফ্রস্টের ‘স্টপিং বাই উডস অন এ স্নোয়ি ইভনিং’ কবিতার কয়েকটি পংক্তি এ সময় উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, “আমি কবির ভাষায় বলতে চাই—‘উডস আর লাভলি ডার্ক অ্যান্ড ডিপ, বাট আই হ্যাভ প্রমিসেস টু কিপ, অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ, অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ।’”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি, অনেক বুলেট, বোমা, গ্রেনেড আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। আমি কখনো সেগুলো নিয়ে পরোয়া করি না। আমি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি। আর যাঁরা আমার সহযোগী, আমার সঙ্গে আছেন, তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাই। কেননা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা সবাই কাজ করে যাচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) প্রেসিডেন্ট কিতাওকা শিনিচি বলেন, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের চমৎকার অর্জন সারা বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করে। ভবিষ্যতেও সব সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রত্যাশা অর্জনে জাপান পাশে থাকবে।

বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় বিশ্বব্যাংক জোরালো অংশীদার। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে এডিবি অঙ্গীকারবদ্ধ।

এশিয়া ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন বলেন, বাংলাদেশের এই অর্জন এ দেশের সরকার ও জনগণের অঙ্গীকারের প্রতিফলন।

জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মিরজানা স্পলজারিক ইগার বলেন, ‘প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্জন সবার জন্য অনুপ্রেরণা। অনেক পুরনো অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের অর্জন নিয়ে আমরাও গর্বিত।’

ইউএসএআইডি প্রশাসক সামান্থা পাওয়ার বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, বাংলাদেশের জনগণের মহানুভবতা ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সামর্থ্য এই মাইলফলক থেকে পরের মাইলফলকে নিয়ে যাবে।’

Place your advertisement here
Place your advertisement here