• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

Find us in facebook

করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩টি পরামর্শ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

চীনের উহান অঞ্চল থেকে উৎপত্তি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের। যা এখন পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। দিন দিন করোনা মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। যার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

গত এক সপ্তাহে আক্রান্তের হারে উৎপত্তিস্থল চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে ইতালি, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়া। আক্রান্তের তালিকায় এবার যোগ হয়েছে বাংলাদেশের নাম। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মারা গেছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। যার মধ্যে শুধু চীনেই মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ১১৯ জন।

চীনের বাইরে বাংলাদেশসহ আরো ১০৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। এসব দেশে মারা গেছে আরো ৭০৯ জন। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও আলজাজিরার। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ জন। করোনাভাইরাস এমন একটি ভাইরাল রোগ, যার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্লু, কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা, হাঁচি ও ক্লান্তি। গুরুতর ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো হলো– নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া। আর এসবের শেষ পরিণতি মৃত্যু। তবে আশার কথা হল- প্রচুর পরিমাণে মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর হার খুবই কম- প্রায় ২% এর মত। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বয়স্ক মানুষ এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম- তারাই এতে মারা যাচ্ছেন।

এদিকে দ্রুত সংক্রমণশীল করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এগুলো মানলেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে নিজেকে সুরক্ষা করা সম্ভব–

১. জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোথাও ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন। আর ফ্লুর মতো লক্ষণ দেখা দিলে যেমন- কাশি, জ্বর, সর্দি বা হাঁচির মতো সমস্যা থাকলে, যতই প্রয়োজন পড়ুক, যে কোনো ধরনের ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।

২. এ ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কারণ এমনও হতে পারে– কোনো ব্যক্তির মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ নেই, কিন্তু তিনি এই রোগের জীবাণু বহণকারী। কারণ ১৪ দিনের মধ্যে এ ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ হয় না। তাই জনবহুল জায়গা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কারণ এই জনবহুলতা থেকেই ভাইরাসটি আপনাকে সংক্রমিত করতে পারে।

৩. ফ্লুর লক্ষণ ও শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সাহায্য নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করোনা টেস্ট করান।

৪. যাদের ফ্লু বা সর্দির লক্ষণ রয়েছে, তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সময় ০.৫ মি থেকে ২ মি দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলুন।

৫. হাত পরিষ্কার রাখুন। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান এবং পানি বা অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন।

৬. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন। প্রতিদিন আপনার বাড়ির চারপাশ, টেবিল, টয়লেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সুইচ এবং স্টেশনারি জিনিস পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন।

৭. সংক্রমিত ব্যক্তি মাস্ক ছাড়াই হাঁচি দেয় বা কাশি হয়, তখন প্যাথোজেনগুলো ফোঁটা আকারে বেরিয়ে আসে এবং চেয়ার বা টেবিলের মতো জিনিসগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য কোনো ব্যক্তি যখন সেই জিনিসগুলোকে স্পর্শ করেন এবং সেই হাত দিয়ে তার চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করেন, তখন রোগের জীবাণুগুলো দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং তাকে সংক্রামিত করে। প্যাথোজেন জিনিসগুলোতে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে। তাই চোখ স্পর্শ করবেন না। 

 

৮. বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে, যার কারণে বৃদ্ধ এবং পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের বিশেষ যত্ন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কারণ করোনাভাইরাসে প্রবীণরাই বেশি মারা যাচ্ছেন।

৯. মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন। আপনার যদি ফ্লুর মতো লক্ষণ থাকে ও কাশি বা ঘন ঘন হাঁচি হয়, তবে সর্বদা টিস্যু ব্যবহার করুন এবং ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই এটি ত্যাগ করুন। আর অ্যালকোহলভিত্তিক সাবান ও প্রবহমান পানিতে হাত ধুয়ে নিন।

১০. আপনি যদি মুখ ও নাক ঢাকতে মাস্ক পরে থাকেন, তবে একবার এটি পরে যাওয়ার পর খালি হাতে এটিকে স্পর্শ করবেন না। মাস্কটি ব্যবহারের পর এটি নিরাপদে সরিয়ে ফেলুন। সঙ্গে সঙ্গে হাত ধুয়ে ফেলুন।

১১. কাঁচা, কম সিদ্ধ বা আধাসিদ্ধ রান্না করা খাবার খাবেন না। সঠিকভাবে রান্না খাবার খাবেন। মাংসজাতীয় খাবার এড়ানো উচিত। কাঁচা মাংস বা মৃত প্রাণীর কোনো অংশ স্পর্শ করলে অবিলম্বে হাত ধুয়ে ফেলুন।

১২. জনসাধারণের মাঝে, রাস্তাঘাটে যেখানে-সেখানে থুতু ফেলবেন না। এর মাধ্যমেও কেউ সংক্রামিত হতে পারে।

১৩. প্রাণীদের সংস্পর্শে যাবেন না। খামার বা পশুর বাজারে বা যেখানে পশু কাটা করা হয়, সেখানে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। এছাড়া জীবিত প্রাণী যারা অসুস্থ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ এড়ান। আদর করা, গায়ে হাত দেয়া যাবে না। এমনকি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকাও যাবে না।

Place your advertisement here
Place your advertisement here