• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

দেশে ঈদের চাঁদ দেখা হয় কীভাবে?

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

আরবি হিজরি সন বা ইসলামি বর্ষপঞ্জির মাসগুলো শুরু হয় চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা, ঈদ, কোরবানির দিন তারিখ নির্ধারিত হয় চাঁদ দেখার ওপর। অধিকাংশ আরবি মাস ২৯ অথবা ত্রিশদিনের হয়ে থাকে।

সাধারণত রোজার মাস শেষ হওয়ার দিকে অর্থাৎ ২৯ রোজার দিন বিকেলে চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে বসে। সেদিন যদি দেশের কোথাও চাঁদ দেখা যায় তাহলে পরদিন ঈদের ঘোষণা দেয় ফাউন্ডেশন আর তা না হলে ত্রিশ রোজা শেষেই ঈদ হয়ে থাকে। এবারও ২৯ রমজানের দিন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসবে ধর্মমন্ত্রীর নেতৃত্বে।

বাংলাদেশে কীভাবে চাঁদ দেখা হয়, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (দীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগ) মো. আনিছুর রহমান সরকার বলেন, ইসলামি ফাউন্ডেশনের জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি আছে।

১৮ সদস্যের এ কমিটির সভাপতি হলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, সহসভাপতি হন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক। কমিটিতে অন্য সদস্যদের পাশাপাশি ৪ জন বিশিষ্ট আলেমও রয়েছেন।

এ ছাড়া চাঁদ কমিটির সভায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব ও জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম এবং লালবাগ শাহি জামে মসজিদ ও চকবাজার শাহি জামে মসিজদের খতিবরা উপস্থিত থাকেন।

আনিছুর রহমান বলেন, এর আগে পত্রিকায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেখানে ফোন নম্বর উল্লেখ করে কোথাও কেউ চাঁদ দেখা গেছে কি না, সেটি জানতে চাওয়া হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সারাদেশের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষকেরা তথ্য দেন।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেও তথ্য নেওয়া হয়। জেলা পর্যায়ের চাঁদ দেখা কমিটিগুলো নিজ নিজ জেলায় চাঁদ দেখার তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির কাছে তথ্য পাঠায়।

সারাদেশে আবহাওয়া দফতরের থিওডোলাইট মেশিনের মাধ্যমেও চাঁদ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। আবার বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানও (স্পারসো) তথ্য দেয়।

এ ছাড়া আবহাওয়া অধিদফতরের সহায়তায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারাও ঢাকায় চাঁদ দেখার জন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পার্শ্ববর্তী জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনের ছাদে থিওডোলাইট মেশিন স্থাপন করেন।

শরিয়াহ মোতাবেক দুজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি অথবা একজন পুরুষ ও দুজন নারী চাঁদ দেখার বিষয়ে সাক্ষ্য দিলে তা গ্রহণযোগ্য হয়। এভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য পাওয়ার পর জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি পর্যালোচনা করে চাঁদ দেখার বিষয়টি নির্ধারণ করে এবং পবিত্র ঈদের ঘোষণা দেয় বলে জানান আনিছুর রহমান সরকার।

এ প্রক্রিয়ায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি যখন ঈদ উদ্‌যাপনের ঘোষণা দেয়, তখন তা সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রচারিত হতে থাকে। আর পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা গেলেই বেজে ওঠে সেই চিরচেনা গান, ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’।

উল্লেখ্য, শুধু ঈদ নয়, বাংলাদেশে হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রতিটি মাসের তারিখ নির্ধারণ করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। এ কমিটির সদস্য সংখ্যা ১১। পদাধিকার বলে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এ কমিটির সভাপতি।

চাঁদ দেখা কমিটির ১১ সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন সময়ের সভায় দেশের খ্যাতনামা আলেমদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির মতো ৬৪ জেলায়ও চাঁদ দেখা কমিটি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ওই কমিটির সভাপতি। কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন সেই জেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শীর্ষ কর্মকর্তা।

এছাড়াও আবহাওয়া অধিদফতরের প্রতিনিধি, ইউএনও, জেলার বড় মাদরাসা ও কলেজের প্রিন্সিপাল এবং তিনজন আলেম এ কমিটির সদস্য হিসেবে যুক্ত হন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here