• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

কাগজেই ঐক্যবদ্ধ, বাস্তবে বিভক্ত বিএনপি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০২২  

Find us in facebook

Find us in facebook

বিএনপির নেতাকর্মীরা দিন দিন যতই আন্দোলনমুখী হচ্ছে, ততই দলের বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ পাচ্ছে। কাগজে-কলমে ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বাস্তবে দলটি বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে আলাদাভাবে বৈঠক করছেন। অন্যদিকে দলের অন্যতম সিনিয়র নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন তার বাসভবনে বিএনপির আরেক গ্রুপের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং রাজনৈতিক কৌশল সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করছেন।

আর এ বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লার মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও খুলনার বিএনপির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুর অব্যাহতির মধ্য দিয়ে। তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী ভালোভাবে নেননি। 

শুধু সাক্কু ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু নয়, এর আগে বিএনপি নেতা শওকত মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এমনকি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নেতা মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে উত্তাপ-উত্তেজনা চলছিল। যেহেতু বিএনপি কোনো রকম কর্মসূচির মধ্যে ছিল না, সেজন্য এই ধরনের বিভক্তি এবং মতপার্থক্যগুলো প্রকাশ্য রূপ নেয়নি। কিন্তু এখন যখন বিএনপি প্রকাশ্য আন্দোলনের পক্ষে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশে বক্তব্য রাখছে, তখন বিএনপিতে বিভক্তিগুলো প্রকাশ্য রূপ ধারণ করছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসভবনে বিএনপির একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া নিয়ে বিএনপি ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে বলে কয়েকজন নেতা মন্তব্য করেছেন। তাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক নেতা জানান, আন্দোলন গড়তে হলে বিএনপিতে যে ধরনের জনপ্রিয় ও দক্ষ স্থানীয় নেতা প্রয়োজন, তাদের নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। আন্দোলন চাঙ্গা করতে হলে তাদের ফিরিয়ে এনে কাজে লাগাতে হবে। 

এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুসারীরা মনে করছেন যে, ধাপে ধাপে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা একটি ইস্যু মাত্র। আগে সংগঠন গোছাতে হবে। তারপর ধাপে ধাপে আন্দোলন করতে হবে।

আর ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনপন্থীরা মনে করছেন, সংগঠন গোছানোর সময় এখন নেই। অসুস্থ খালেদার ইস্যুই হোক, বা অন্য যেকোনো ইস্যুতে এখনই চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। 

তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হলেন তারেক জিয়ার মূল অনুসারী। তারেক জিয়া যা যা নির্দেশ দিচ্ছেন, ফখরুল ও তার অনুসারীরা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন। তারেক জিয়া এই আন্দোলনকে দীর্ঘমেয়াদি করে আগামী নির্বাচনে একটি বড় ধরনের আন্দোলনের পক্ষে। এর সঙ্গে দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্তকে যুক্ত করে নির্বাচনের আগে সরকারকে অকার্যকর করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। 

তবে বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই মনে করেন, তারেক জিয়া অতীতে বিভিন্ন ফর্মুলা দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এবারও তার ফর্মুলাগুলো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। এ ধরনের পদক্ষেপ কখনোই বিএনপির জন্য ইতিবাচক ফলাফল আনবে না। ফলে আন্দোলনের যত সময় বাড়বে, বিএনপির মধ্যে বিভক্তি ততই প্রকাশ্য রূপ নেবে।

এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি যেকোনো সময় বিভক্ত হয়ে যেতে পারে বলেও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here