উদ্ভাবনের নেশায় তিনবার সরকারি চাকরি ছেড়েছেন হারুন অর রশিদ
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Find us in facebook
এগারো বছর বয়সেই গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন হারুন অর রশিদ। উদ্ভাবনের নেশায় তৈরি করেছিলেন বিমান। আর সেই বিমান উড়াতে গিয়ে ঘটেছিল তুলকালাম কাণ্ড। পরীক্ষামূলকভাবে বিমান আকাশে উড়লেও আচমকা একটি পাকা ধানখেতে আছড়ে পড়ে। এতে আগুনে পুড়ে যায় পুরো ধানখেত। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ডাকে বসে সালিশ। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া হারুনকে এসব যন্ত্রপাতি তৈরি বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। সালিশে সবার দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও হারুনের মনে ছিল উদ্ভাবনের সাধনা।
এরপর রাতের আধারে ঘরে লুকিয়ে লুকিয়ে হারুন তৈরি করলেন টেলিস্কোপ। এতে আগুনে পুড়ে ধানখেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু একদিন তার চাচা সেই টেলিস্কোপ দেখে ফেলেন। মনের ভয় জাগে হারুনের। চাচার চোখ রাঙানোতে বাধ্য হয়ে সেই যন্ত্রটিও নষ্ট করে ফেলতে হয় তাকে। পরপর দুটি উদ্ভাবনী যন্ত্র তৈরি করেও নানা কারণে চুপসে যান হারুন। মন দেন পড়াশোনায়। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই নাটবল্টু আর লোহালক্কড়ের যন্ত্রপাতি আগলে রাখেন হারুন। ভালোবাসার এসব যন্ত্রপাতি ঘিরে এখনো উদ্ভাবনের নেশায় বুঁদ ৬৬ বছর বয়সী এই উদ্ভাবক।
রংপুর শহরতলী থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে রংপুর-দিনাজপুর হাইওয়ের ওপরেই পাগলাপীর বাজার। সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে হরিদেবপুর ইউনিয়নের কিশামত হরকলি গ্রাম। সে গ্রামেই থাকেন হারুন অর রশিদ। ছোটবেলার মতো এই বৃদ্ধ বয়সেও হারুন গ্রামের মানুষদের নিত্যনতুন উদ্ভাবনীতে সবাইকে চমকে দেন। কারও কারও কাছে হারুনের যন্ত্র-প্রেম যেন পাগলামি, এ কারণে তাকে অনেকেই ‘পাগলা হারুন’ নামেও ডাকে।
সম্প্রতিএই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় হারুন অর রশিদের। ছোট্টবেলার সেই হারুন এখন পেশায় স্কুলশিক্ষক। এর আগে উদ্ভাবনের নেশায় তিনটি সরকারি চাকরি ছেড়েছেন তিনি। টানাপোড়নের সংসারে এখনো প্রযুক্তির সঙ্গেই তার ভালোবাসার যুদ্ধ। এখন যে বেতন পান, তার অর্ধেক টাকায় সংসারের খরচ চালান হারুন অর রশিদ। বাকি অর্ধেক টাকায় কেনেন যন্ত্রপাতি বানানোর কাঁচামাল। আর সময় পেলেই বাড়িতে বসে নাটবল্টু আর লোহালক্কড়ের যন্ত্রপাতিতে হাতুড়ি পেটান। ভাবতে থাকেন নতুন কিছু উদ্ভাবনের।
পলিথিনে মুড়িয়ে রাখা ছয়টি যন্ত্র বের করে দেখাতে দেখাতে হারুন অর রশিদ জানান, সারাদিন স্কুল, প্রাইভেট, পরিবারকে সময় দেওয়ার পর হাতে যে সময় পান সেটাই তাকে স্বপ্ন বুনতে সাহায্য করছে। ইতোমধ্যে তিনি মহাকাশ দেখার যন্ত্র টেলিস্কোপসহ চারটি ভিন্ন ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোস্কোপ, বিমানের মডেল ও একটি ফিল্ম ডাবল প্রজেক্টর উদ্ভাবন করেছেন। একটি হেলিকপ্টার তৈরির কাজও শুরু করেছেন তিনি। এছাড়া বেশকিছু নতুন প্রজেক্ট তার উদ্ভাবনী চিন্তায় রয়েছে।
এসব কাজ করতে গিয়ে আর্থিক সংকটে হাঁপিয়ে উঠেছেন হারুন। তৈরি করা যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় তাতে মরিচা পড়ছে। এ ছাড়া সারাদিন শিক্ষকতা ও প্রাইভেট পড়ানো এবং পরিবারকে সময় দিয়ে ঠিকমতো নিজের উদ্ভাবনী মনকে কাজ লাগাতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।
হারুন অর রশিদ বলেন, দিনে তো সময় পাই না, এ কারণে বেশির ভাগ সময় রাতেই যন্ত্রপাতি নিয়ে বসতে হয়। হাতুড়ির টুংটাং শব্দ আর রাত থেকে এসব কাজ করতে হয় বলে প্রতিবেশীদের অনেকের কাছে কটু কথা শুনতে হয়। অনেক কষ্ট আর আক্ষেপ মনে জমা রয়েছে। এত কিছু সত্ত্বেও আমি আমার স্বপ্ন থেকে সরে আসিনি। সারা জীবন বিজ্ঞানের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। কেউ ভরসা না রাখলেও নিজের ওপর আমার যথেষ্ট ভরসা রয়েছে।
উদ্ভাবনের নেশায় তিনটি সরকারি চাকরি ছেড়ে দেওয়া হারুন পড়াশোনার উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে পারেননি। তিনি মাধ্যমিকে রাজশাহী বোর্ডে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার বৃত্তি পেলেও পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে যেতে পারেননি। পরে কারমাইকেল কলেজে ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশোনা শুরু করলেও সমাপ্ত করা হয়ে ওঠেনি তার।
তিনি আরও বলেন, মাধ্যমিকে রাজশাহী বোর্ডে ভালো ফলাফল করেছিলাম। পরে কারমাইকেল কলেজে পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশোনা শুরু করলেও শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারিনি। পড়াশোনার পাট অসমাপ্ত রেখে চাকরি শুরু করেছিলাম। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছি। ১৯৮১ সালে পোস্টাল অপারেটর হিসেবে ডাক বিভাগে ছয় মাস চাকরিতে ছিলাম। সেই বছরই মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চাকরিতে যোগদান করে তিনি মাস না যেতেই আবার ডাক বিভাগে পূর্বের পদে ফিরে যাই। পরে সেই চাকরিও ছেড়েছি।
হারুন অর রশিদ ২০১১ সাল থেকে পাগলাপীরের আদ্-দ্বীন একাডেমিতে ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান দিচ্ছেন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, সারাজীবন বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত থাকার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আবিষ্কারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে চাই।
স্ত্রী ও তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে নিয়ে হারুন অর রশিদের পরিবার। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবারকে আর্থিক যোগান দিতে হারুন হিমশিম খেলেও তার স্ত্রী-সন্তান খুশি নিত্যনতুন যন্ত্র তৈরির সাফলতায়। বাবার উদ্ভাবিত যন্ত্রতেই ভালো থাকার সুখ খুঁজে পায় মেয়ে শ্যামলী বেগম।
হারুন অর রশিদের বড় মেয়ে শ্যামলী বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমরা দেখে আসছি আমার বাবা এসব কাজ করছে। আমরা চাই তার স্বপ্ন পূরণ হোক। সরকার আমার বাবার দিকে একটু নজর দিয়ে দেখুক, তাকে দিয়ে কিছু করা যায় কিনা।
হারুনের ছেলে জিল্লুর রহমান বলেন, আমি যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই বাবাকে নাটবল্টু নাড়া করতে দেখে আসছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে নতুন-পুরাতন যন্ত্রাংশ কিনে নিয়ে আসে সেগুলো কাজে লাগাচ্ছে। লোহালক্কড়, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে তিনি (বাবা) বেশ কিছু দামি যন্ত্রপাতি তৈরি করেছেন। তার (বাবার) কাজ দেখে আগে বিরক্ত লাগত, কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। এখন আমরা বাবাকে নিয়ে গর্ব করি। এসব যন্ত্রপাতি দেখে আমাদেরও ভালো লাগে।
এদিকে পরিবারের মতো হারুন অর রশিদের উদ্ভাবনী এই কর্মকাণ্ডে গর্ববোধ করেন তার শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও স্থানীয় গ্রামবাসী। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হারুন অর রশিদ দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারবেন বলে মনে করেন হরিদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন।
এই জনপ্রতিনিধি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হারুন অর রশিদ স্যার এসব উদ্ভাবনী যন্ত্র তৈরি করছেন। তার ইচ্ছা শক্তি আমাদের বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, যদি তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়।
- জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশন গৃহীত
- জুমার দিন দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত
- রাণীশংকৈলে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- সকালে খালি পেটে পানি পান করছেন, জানুন ৯ সুফল
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জে ২৭ জনের মনোনয়ন দাখিল
- সর্বজনীন পেনশন স্কিম মেলা উপলক্ষে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন
- গরমে ঘামাচির যন্ত্রণা? দ্রুত মুক্তির জন্য করণীয়
- বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতীয় খাদ্যপণ্য
- যে কারণে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ
- ৫৩ বছর বয়সে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন মনীষা
- ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক মালিকের পরিবারভুক্ত
- `নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে`
- সরকারি গুদামে হয়রানি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী
- সংসদ অধিবেশন চলবে ৯ মে পর্যন্ত
- ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত নদীর বন্যার তথ্য আদান-প্রদান শুরু
- চিরিরবন্দরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু
- গঙ্গাচড়ায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
- সাদুল্লাপুরে ট্রাক চাপায় পাওয়ার টিলার চালকের মৃত্যু
- পীরগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ গ্রেপ্তার-২
- চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা
- রাজারহাটে ১২জন প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দ
- দিনাজপুরে তীব্র গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর
- পীরগাছায় নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা
- হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি চালু
- ফুলবাড়ীতে লাউ গাছের একটি ডগায় ১৮ লাউ
- বোদায় ইস্তিকার নামাজ আদায়
- রংপুরে ই-গভর্ন্যান্স ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ বিষয়ক কর্মশালা
- কুড়িগ্রামে পথচারীদের পানি-স্যালাইন বিতরণ পুলিশের
- কিশোরগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু
- তীব্র তাপদাহে উলিপুরে দিনমজুরের মৃত্যু
- ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া হলো না বাবার
- ফুলবাড়ীতে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি ঘোষণা আজ
- রাতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- চিলমারীতে বৃষ্টির জন্য ৩য় দিন ইসতিসকার নামাজ আদায়
- হিলি সীমান্ত পরিদর্শনে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল
- গাজার ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ক্রিকেটার বিথী
- সুন্দরগঞ্জে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষে ব্যাপক সাফল্য
- আজ থেকে ট্রেনের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- আবারও তিনদিন বাংলাবান্ধার ইমিগ্রেশন ও বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- হিলিতে রচনা প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ রক্তিম
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন করা হবে: ইসি আলমগীর
- ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীরা
- দ্রুত শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের সুপারিশ
- ভূরুঙ্গামারীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস পালিত
- মির্জা ফখরুলকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে: ওবায়দুল কাদের
- ঢাকায় ইসরায়েলের বিমান