• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

Find us in facebook

অধ্যক্ষের ইচ্ছায় মৃতব্যক্তিও ম্যানেজিং কমিটিতে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু ছালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়ার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটিতে আস্থাভাজনকে সভাপতি ও মৃত ব্যক্তিকে সদস্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিভাবক না হলেও খলিলুর রহমান নামে একজনকে কমিটির সদস্য করা এবং কো-অপ্ট সদস্য হিসেবে তিন বছর পূর্বে মারা যাওয়া ডা. মানস কুমারকে কমিটিতে রেখেছেন তিনি।

এ ছাড়াও ভারপ্রাপ্ত ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ১২ একর জমি বন্ধক রেখে অর্থ আত্মসাৎ, নিলাম ছাড়া গাছ বিক্রি, নিয়োগ বাণিজ্য, এমপিও নীতিমালা ভঙ্গ, রেজুলেশন জালিয়াতি, শিক্ষকদের বেতন বন্ধ ও নিয়মবহির্ভূতভাবে টাকা খরচ করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়গুলো তুলে ধরে মাদ্রাসার দাতা পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকরা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুদক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। তবে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু ছালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে জুনিয়র শিক্ষক জাকারিয়া প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির ৯ জনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া-কাগজপত্র দাখিল করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ দখল করেন। পরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা লাভের জন্য ১০ জন শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দেন। জালিয়াতি ও দুর্নীতির মামলায় তিনি জেলও খাটেন। বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক একেএম শাহীন আখতারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। জাকারিয়া কৌশলে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই তাকে সরিয়ে পুনরায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন। পরে মাদ্রাসার প্রায় ১২ একর জমি ২৫-৩০ লাখ টাকায় বন্ধক রাখেন। ৬ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করে কমিটির কিছু সদস্যকে নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। অপকর্ম ঢাকতে পছন্দের ব্যক্তিদের ম্যানেজিং কমিটিতে নিয়ে আসেন। খলিলুর রহমান নামে একজন অভিভাবক না হলেও তাকে সদস্য করেন। কো-অপ্ট সদস্য হিসেবে তিন বছর আগে মৃত্যুবরণ করা ডা. মানস কুমারকে নিয়েছেন। এ ছাড়া নীতিমালা ভঙ্গ করে তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও পার্শ্ববর্তী বেতগাড়া স্কুলের জুনিয়র শিক্ষক ফরিদুজ্জামানকে সভাপতি করেন।

দাতা পরিবারের সদস্য নুরুল হুদা বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাদ্রাসার জমি বন্ধক রেখে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। এরপরও বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

শিক্ষক আকবর আলী বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে জাকারিয়া আমার অবসর ও কল্যাণ সুবিধার কাগজপত্র আটকে রেখেছেন। এর আগে ১০ মাসের বেতনভাতা বন্ধ রেখেছেন, এখনো উত্তোলন করতে পারিনি। বর্তমানে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু ছালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আগের অধ্যক্ষ জমি বন্ধক দিয়েছিল। দায়িত্ব পাওয়ার পর কিছু জমি আমি ছাড়িয়ে নিয়েছি। এ ছাড়া টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ বিক্রি করা হয়েছে। শিক্ষকদের বেতন বন্ধ রাখার বিষয়টি পুরো মিথ্যা। বেতন মঞ্জুরির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এক মাসের বেতন ছাড় করা সম্ভব হয়নি। এ ধরনের অভিযোগ ও অপপ্রচারের আমি প্রতিবাদ করছি। খুব শিগগিরই এনিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সত্যটা আমি সবাইকে জানিয়ে দেব। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here