• শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ২০ ১৪৩১

  • || ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

ভোটের আগে তিন উপহার আওয়ামী লীগের

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ মে ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

২০২৪ সালের শুরুর দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চলতি মাস থেকে শুরু হবে দেশের ৫ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। সিটি নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে দেশে ভো‌টের তীব্রতা ছ‌ড়ি‌য়ে পড়েছে। ফলে ২০২৩ সাল হবে ভোটের বছর। এখন থেকেই প্রায় সব দলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নানা প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে ভোটারদের দৃ‌ষ্টি আকর্ষণ‌ে তাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো তুলে ধরছে। পাশাপাশি তারা জনগণের জন্য তিনটি উপহারও ঠিক করে রেখেছে।

তিনটি উপহারের এসব মেগাপ্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার ফাস্ট-ট্র্যাকে অন্তর্ভুক্ত। এখন শুধু উদ্বোধনের পালা। এসব উন্নয়ন‌ প্রকল্প আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণার বড় অংশ হবে। মেগা প্রকল্পগুলোর সফলতা তুলে ধরার পাশাপাশি উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। 

সেপ্টেম্বরে পদ্মাসেতু দিয়ে যাত্রী নিয়ে ছুটবে ট্রেন
পদ্মাসেতুর সড়কপথ চালুর ১০ মাসের মাথায় গত ৪ এপ্রিল পদ্মাসেতুতে নির্মিত ৪১ কিলোমিটার রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করে ৭ বগির একটি বিশেষ ট্রেন। এ প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ জানান, সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। ২০২৪ সালের জুনে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথটি চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

জানা গেছে, ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া ট্রেন চলবে। একইভাবে ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে প্রতিদিন সাত জোড়া ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে প্রতিদিন পাঁচ জোড়া ট্রেন চলবে। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। ‘ওয়ান-ডিরেকশন’ বা একমুখী চলাচলের ওপর ভিত্তি করে প্রাক্কলনটি তৈরি করা হচ্ছে।

২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে রেলপথ দিয়ে  বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। ‘ওয়ান-ডিরেকশন’ বা একমুখী চলাচলের ওপর ভিত্তি করে প্রাক্কলনটি তৈরি করা হচ্ছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় যশোরের সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে। চীন সরকার মনোনীত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড চায়না জিটুজি সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল
আগামী সেপ্টেম্বর মা‌সে উদ্বোধন হ‌তে যা‌চ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণ করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এরই ম‌ধ্যে টানেলের ৯৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণকাজ শেষ। ক্রস প্যাসেজ ও টানেল-সম্পর্কিত টোল প্লাজার নির্মাণকাজও শেষদিকে। টানেলের যান্ত্রিক, বৈদ্যুতিক ও সিভিল ওয়ার্ক চলছে এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজও শেষ পর্যায়ে।

নির্মাণাধীন টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। এছাড়া ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটারের একটি অ্যাপ্রোচ সড়কের পাশাপাশি একটি ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ রয়েছে, যা মূল শহর, বন্দর ও নদীর পশ্চিম দিককে এর পূর্বদিকের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউব নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। 

টানেলটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়েকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে। এই টানেল দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে যানবাহন চলবে।

ঢাকাবাসীর জন্য উপহার মেট্রোরেল
ঢাকাবাসীর জন্য মেট্রোরেল উপহার হিসেবে রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে ঢাকার কয়েকটি পয়েন্টে মেট্রোরেল চালু করা হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসেই রাজধানীর মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন সম্প্রসারিত হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী জানান, আগামী নভেম্বরের মধ্যে আপ টু মতিঝিল পর্যন্ত লাইন সিক্স সম্প্রসারিত হবে। লাইন-২ এবং লাইন-৬ এর দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী সম্প্রসারণের কাজ বাকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় জনবান্ধব গণপরিবহন আনতেও নির্দেশনা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তি‌নি।

তিনি বলেন, মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করতে সব কার্যক্রম ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এটা শেষ হওয়ার পর আমরা দিয়াবাড়ি থেকে আপ-টু টঙ্গী সড়কের কাজ শুরু করবো।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরে দুই দেশের মধ্যে যে আটটি সমঝোতা এবং চুক্তি সই হয়েছে, তার মধ্যে মেট্রোরেলও রয়েছে। এর আওতায় মেট্রোরেলকে দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হবে। যার অর্থায়ন করবে জাইকা।

আওয়ামী লী‌গের নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, ভো‌টের আগে বাস্তবা‌য়িত এসব বৃহৎ প্রকল্প আওয়ামী লীগের জন্য রাজনৈতিকভা‌বে সুদূরপ্রসারী কাজ কর‌বে।

এ বিষ‌য়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদের এ সরকার যেসব উন্নয়ন করেছে, সেগুলো অভাবনীয়। পদ্মাসেতু দেশে-বিদেশে ব্যাপক সফলতা এনেছে। এছাড়া অন্য অনেক অনেক সফলতা রয়েছে। এগুলো এখন দৃশ্যমান। যার সুফল মানুষ ভোগ করছে। সেগুলোই আপামর জনসাধারণের কাছে তুলে ধরা হবে। এর কার্যক্রমগুলো নিয়ে আমরা আগামী নির্বাচনী প্রচারণায় মানুষের কাছে যাবো। নিশ্চয়ই মানুষ এ বিষয়গুলো উপলব্ধি করবে। মূল্যায়ন করবে, আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে আবারো বিজয়ী করবে।

আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদের এ সরকার যেসব উন্নয়ন করেছে, সেগুলো অভাবনীয়। পদ্মাসেতু দেশে-বিদেশে ব্যাপক সফলতা এনেছে।

আওয়ামী লী‌গের সাংগঠ‌নিক সম্পাদক মির্জা আজম ব‌লেন, আগামী নির্বাচনী প্রচারে পদ্মাসেতু প্রাধান্য পাবে। শুধু পদ্মাসেতুই নয়, ধারাবা‌হিকভাবে করা সব দৃশ‌্যমান মেগাপ্রকল্প ভোটের অংকে আওয়ামী লীগের অনুকূলে বিরাট প্রভাব ফেলবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠ‌নিক সম্পাদক এস এম কামাল ব‌লেন, দে‌শে গত ১৪ বছরে ধারাবা‌হিক উন্নয়‌নের মাধ‌্যমে বিস্ময়কর সাফল্য এসেছে। এ সাফল্যে পদ্মা‌সেতু নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনী প্রচারে এসব বিষয় প্রাধান্য পাওয়াটা স্বাভাবিক। তাছাড়া দেশের মানুষও নিশ্চয়ই এ বিষয়গুলো উপলব্ধি করবে। যার ফলে এদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আন‌বে ব‌লে আশা ক‌রি।

উল্লেখ্য, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছোট-বড় অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সেগুলো একের পর এক উদ্বোধন করা হবে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি সেতুও রয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here