• বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

Find us in facebook

রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘জয় বাংলা’

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ মে ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমতাভিত্তিক বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই ইউরিয়েভিচ রুদেনকো বলেছেন, দুই দেশ অধিকাংশ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অভিন্ন ধারণা পোষণ করে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫২তম বর্ষপূর্তিতে মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাতে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাস এসব তথ্য জানায়।

ক্রেমলিনের স্থানীয় ফোর সিজনস হোটেলে সংবর্ধনা সভায় বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা রাশিয়ার বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন রুদেনকো। তিনি বলেন, রাশিয়া যুদ্ধবিধ্বস্থ বাংলাদশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের মাইন ও ডুবে থাকা জাহাজ উত্তোলন করে বন্দরটিকে আবার সচল করে তোলে।

তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে করেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা এবং দক্ষিণ এশিয়া তথা আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায়ও বাংলাদশের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

রুদেনকো দুই দেশের মধ্যে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি নির্মিয়মান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে দুই দেশের জ্বালানি সহযোগিতার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার ব্যাপারে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ‘জয় বাংলা’ দিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ছিলেন মস্কো সিটি গভর্নমেন্টের মন্ত্রী এবং মস্কোর বৈদেশিক অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক দপ্তরের প্রধান সের্গেই চেরেমিন ও রাশিয়ান পার্লামেন্ট স্টেট ডুমার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান সভেৎলানা ঝুরোভা।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মস্কোতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সৌদি আরব, ভারতসহ ষাটের অধিক দেশের রাষ্ট্রদূত, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে সংঘটিত তার নির্মম হত্যাকাণ্ডে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রগতির পথ রুদ্ধ হয়ে যায় বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবারও উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারায় ফিরে এসেছে।

রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর ’ভিশন ২০৪১’ উল্লেখ করে বলেন, এটি বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যাবে। তিনি এ সময় বিভিন্ন বাস্তবায়িত ও নির্মিয়মান মেগাপ্রকল্প কীভাবে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বদলে দিচ্ছে সে সম্পর্কে অতিথিদের অবহিত করেন। 

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে তা উল্লেখ করে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে রাশিয়াসহ আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অবদানের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ-রাশিয়ার ঐতিহাসিক ও দৃঢ় বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

১৯৭২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রথম সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরের মাধ্যমে দুদেশের সম্পর্কের যে ভীত রচিত হয়েছিল তা প্রধানমন্ত্রীর ২০১৩ সালের সফরের মাধ্যমে আরও সুদৃঢ় হয় বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন। তিনি তার বক্তব্যে শিক্ষা, শিল্প, বাণিজ্য ও জ্বালানি ইত্যাদি নানা খাতে ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন।

এছাড়া স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সেইন্ট পিটার্সবার্গের গভর্নর আলেকসান্দর বেগলভও বিশেষ বার্তা প্রেরণ করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন, মেগা প্রকল্প, বিনিয়োগ, পর্যটন ইত্যাদি বিষয়ক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here