• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

৩ এপ্রিল ১৯৭১: পাকবাহিনীর গণহত্যা, সীমান্তে শরনার্থীদের ভিড়

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী টাঙ্গাইল শহরে প্রবেশ করার পর গোড়ান, সাটিয়াচড়া গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে এক নারকীয় গণহত্যা চালায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সঙ্গে ইপিআরের যুদ্ধে কামানের গোলা ও মর্টার শেলের আঘাতে ইপিআরের ২৯ জন সদস্য শহীদ হন। সেদিনের যুদ্ধ ও গণহত্যায় শহীদ হন প্রায় ৪০০ জন বাঙালি (ইপিআরের ২৯ জন, গোড়ান, সাটিয়াচড়া ও পাকুল্লা গ্রামের ৪৯ জন, অন্যান্য এলাকা থেকে আসা ২৮ জন, নাম না–জানা আরও অনেকে।

তাজউদ্দীন আহমদ নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। ওই সাক্ষাতের সময় সরকার গঠনের বিষয়ে জানতে চান ইন্দিরা গান্ধী। তিনি সব ধরনের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন। এদিন চুয়াডাঙ্গাতে আওয়ামী লীগের নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক সভায় জাতীয় পরিষদ সদস্য ড. আসহাবুল হক জোয়ার্দারকে চেয়ারম্যান করে “বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটি”-র জন্ম হয়।

এদিন ঢাকার প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকাগুলো জিঞ্জিরা নিয়ে প্রতিবেদন ছাপায়। তবে স্বাভাবিকভাবেই সেসব রিপোর্ট ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষে। দলে দলে মানুষের নিজ মাতৃভূমির সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়ার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

ফরাসি টেলিভিশন কর্পোরেশনের একটি ভ্রাম্যমাণ দল মুক্তিবাহিনীর চুয়াডাঙ্গাস্থ সদর দফতরে আসে। তারা দৃঢ় মনোবলে উদীপ্ত যুদ্ধরত মুক্তিসেনা ও আহত পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দী লে. আতাউল্লাহ শাহসহ পাকিস্তানিদের কাছ থেকে দখলকৃত যাবতীয় অস্ত্রশস্ত্র ও গাড়ির ছবি টেলিভিশন ক্যামেরায় ধারণ করেন এবং মেজর এম.এ ওসমান চৌধুরীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন।

সিলেটের শমসেরনগরে মুক্তিবাহিনী বীরত্বের সঙ্গে পাকিস্তানবাহিনীর আক্রমন প্রতিহত করে। যশোর শহরের উত্তরাংশে অবস্থিত অবাঙালিদের বাসস্থানগুলোতে অবস্থান নিয়ে পাক হানাদারবাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে ব্যাপক কামানের গোলা নিক্ষেপ করে। পাকবাহিনী টাঙ্গাইলের প্রবেশপথে গুড়ান সাটিয়াচড়া নামক স্থানে এসে পৌঁছালে তুমুল প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। কয়েক ঘণ্টা যুদ্ধের পর ছাত্র, যুবক ও ইপিআরের প্রতিরোধ ব্যূহ ভেঙে পড়ে। ছয় ইপিআর সদস্য, ছাত্রলীগ নেতা জুমরাতসহ ৩৩৭ জনকে পাকবাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে এবং গুড়ান ও সাটিয়াচড়া গ্রাম দুটি আগুনে ভস্মীভূত করে। পরে তারা ওইদিনই বিকালে টাঙ্গাইলে প্রবেশ করে।

ভারতীয় বিএসএফ বাহিনীর লে. কর্নেল সেন এবং মেজর চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজশাহীতে ক্যাপ্টেন গিয়াসের মাঝে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সামরিক সাহায্যের বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়।ডেমরা এবং যাত্রাবাড়ির পথে ঢাকাস্থ ইপিআর গেরিলা দল আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তান বাহিনীর বেশ ক্ষতিসাধন করতে সমর্থ হয়। 

রংপুর শহরের শ্মশানঘাটে মধ্যরাতে বেশ ক’জন নেতৃস্থানীয় নাগরিককে হাত-চোখ বেঁধে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সিলেটের দেওড়াছড়া চা বাগানের ৭০ জন শ্রমিককে পাকবাহিনী নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

ত্রিপুরা সীমান্ত সংলগ্ন রামগড়ের পরে ফেনী নদী ও সীমান্ত পেরিয়ে বাগাফা, এখানেই বিএসএফ-এর একটি অস্থায়ী ঘাঁটিতে বিএসএফ-এর ২০০ ওয়াট শর্ট ওয়েভ ট্রান্সমিটার থেকে ৩ এপ্রিল ১৯৭১ রাতে দ্বিতীয় পর্বে “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র” সম্প্রচার শুরু হয়। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here