• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে জিম্মি করা হারাম

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

বর্তমানে অনলাইনভিত্তিক যোগাযোগব্যবস্থায় ঝুঁকছে মানুষ। খরচ কম ও সুবিধা বেশি হওয়ায় এখন যোগাযোগের জন্য ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমু, ভাইবার, বিআইপিসহ বিভিন্ন ভিডিও কলিং অ্যাপেই মানুষের আকর্ষণ বেশি। যুবসমাজের মতো প্রবীণরাও এখন এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করেন ভীষণ আগ্রহসহকারে। এসব অ্যাপের কল্যাণে দূরে থেকেও সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য সামলাতে পারেন অনেকে। তাই দিন দিন এই অ্যাপগুলোর চাহিদা বাড়ছে সব মহলেই। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, কিছু হ্যাকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা ভিডিও কলিং আইডি হ্যাক করে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করার নগ্ন খেলায় মেতেছে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের টার্গেট হয়, বিভিন্ন পরিচিত মুখ। যেহেতু তাদের আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বা গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া সহজ। অনেকে আবার অন্যের নামে ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

অথচ এভাবে মানুষকে বিপদে ফেলে তার সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া মহা অন্যায়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু পরস্পর সম্মতিক্রমে ব্যবসা করা বৈধ। (সুরা : নিসা, আয়াত : ২৯)

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে যদি টাকা আদায় উদ্দেশ্য না হয়ে তার সম্ভ্রমহানি করাও হয়, ইসলাম এই কাজকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না। কেউ যদি এ ধরনের কাজে লিপ্ত হয়ে যায়, তার উচিত অবশ্যই ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া, তা না হলে কিয়ামতের দিন এর চরম মূল্য দিতে হবে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোনো বিষয়ে জুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেয় সেদিন আসার আগে, যেদিন তার কোনো দিনার বা দিরহাম থাকবে না। সেদিন তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার জুলুমের পরিমাণ তার কাছ থেকে নেওয়া হবে আর তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ থেকে নিয়ে তা তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারি, হাদিস : ২৪৪৯)।

অনেকে টার্গেট করে প্রবাসীদের কিংবা তাদের স্ত্রীদের। তাদের ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাদের থেকে টাকা আদায় করা হয়। না হয় তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে এসব ছবি পাঠিয়ে তাদের বিপদে ফেলে দেওয়া হয়, এ ধরনের বিপদে পড়ে অনেকের সংসার ভাঙার খবরও পাওয়া যায়। এটি কোনোক্রমেই কোনো সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন মানুষের কাজ হতে পারে না। এটি শয়তান ও তার অনুসারীদের কাজ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এ ধরনের মানুষরূপী শয়তানদের নিন্দা করে বলেন, ‘তারা ফিরিশতাদ্বয়ের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যা দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০২)

উপরোক্ত আয়াত থেকে বোঝা যায়, যেকোনো উপায়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানোর চেষ্টা করা মহান আল্লাহ পছন্দ করেন না; বরং এ ধরনের কাজ করে বড়জোর শয়তানের কাছে প্রিয় হওয়া যায়, যা আখিরাত ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।

জাবির (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ইবলিস (শয়তান) সমুদ্রের পানির ওপর তার সিংহাসন স্থাপন করে। অতঃপর মানুষের মধ্যে ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করার জন্য সেখান থেকে তার বাহিনী চারদিকে প্রেরণ করে। এদের মধ্যে সে শয়তানই তার কাছে সর্বাধিক সম্মানিত যে শয়তান মানুষকে সবচেয়ে বেশি ফিতনায় নিপতিত করতে পারে। তাদের মধ্যে একজন ফিরে এসে বলে, আমি এরূপ এরূপ ফিতনা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছি। তখন সে (শয়তান) প্রত্যুত্তরে বলে, তুমি কিছুই করনি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তারপর এদের অপর একজন এসে বলে, আমি মানব সন্তানকে ছেড়ে দিইনি, এমনকি দম্পতির মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ করে দিয়েছি। রাসুল (সা.) বলেন, শয়তান এ কথা শুনে তাকে কাছে বসায় আর বলে, তুমিই উত্তম কাজ করেছো। বর্ণনাকারী আ‘মাশ বলেন, আমার মনে হয় জাবির (রা.) এটাও বলেছেন যে অতঃপর শয়তান তার সঙ্গে আলিঙ্গন করে। (মিশকাত, হাদিস : ৭১)

নাউজুবিল্লাহ! যারা মহান আল্লাহর ওপর ঈমান রাখে, তারা কখনো নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য হ্যাকিংয়ের আশ্রয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে না। শুধু হ্যাকিং কেন, কোনো পন্থায়ই তারা এ কাজে লিপ্ত হতে পারে না। মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করুন। হিদায়েত দান করুন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here