• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

হালদায় রেণু কেনাবেচা জমজমাট

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

বংশ পরম্পরায় অভিজ্ঞ হালদার কার্প জাতীয় মা-মাছের ডিম সংগ্রহকারীরা এবার প্রতিকেজি রেণু বিক্রি করেছেন সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা। রেণুর সর্বনিম্ন দাম ছিল ২৫ হাজার টাকা। গড়ে রেণুর দাম পড়েছে ৪৫ হাজার টাকা। তিন দিনের এক কেজি রেণুতে মাছের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। চার দিনের রেণু একটু বড় হওয়ায় সংখ্যাটি কমে দাঁড়ায় তিন লাখে। এরপর যত দিন বাড়বে, ততো সংখ্যা কমতে থাকে। শুক্রবার ৬-৭ দিন বয়সী রেণু কেজিতে ধরেছে প্রায় দুই লাখ। এসব তথ্য জানান হাটহাজারী উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি ছুটি চলাকালে সারাদেশের মাছচাষি বা রেণু সংগ্রহকারীরা যাতে নির্বিঘ্নে হালদার পোনা নিয়ে যেতে পারে, সে লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে। রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট, শাহ মাদারী, মাছুয়াঘোনা, মোবারকখীলের সরকারি মৎস্য হ্যাচারির সব রেণু বিক্রি হয়ে গেছে। স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা মাটির কুয়ায় (গর্তে) যেসব রেণু ফুটিয়েছেন, সেগুলোর বিক্রিও শেষ পর্যায়ে। এবার হাটহাজারীতে ৭৩টি ও রাউজানে ৭৫টি মাটির কুয়ায় রেণু ফোটানো হয়েছে।

ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, সরকারি হ্যাচারির রেণু তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হলেও মাটির কুয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগে ফোটানো রেণু ৫০-৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্য বছর প্রথম দিকে এক লাখ টাকা বিক্রি হলেও পরে রেণুর দাম পড়ে যেত দ্রম্নতগতিতে। এবার তা হয়নি।

রাউজানের আজিমের ঘাটের ডিম সংগ্রহকারী রোসাঙ্গীর আলম জানান, এবার ৪৮ বালতি ডিম থেকে সাড়ে ছয় কেজি রেণু ফুটিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে পাঁচ কেজি ৬০ হাজার টাকা দরে হাটহাজারীর এক পোনা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি রেণু নিজের পুকুরে ফেলে পোনা তৈরি করছেন।

তিনি জানান, লকডাউনের দুঃসময়ে রেণুর ভালো দাম পেয়ে এবার ডিম সংগ্রহকারীরা খুশি।

হালদা গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরীয়া জানান, লকডাউনের মধ্যে হালদার রেণু বিক্রি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও প্রশাসনের সহযোগিতায় তা কেটে গেছে। আশাতীত রেণু বিক্রি হয়েছে। ঈদের পরদিন একটু চাহিদা কম থাকলেও গত তিন দিন বেশ ভালো দামে রেণু বিক্রি করতে পেরেছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।

তিনি জানান, এক কেজি রেণুতে অর্ধেক পানি এবং অর্ধেক রেণু থাকে। এটা নির্ভর করবে ক্রেতা-বিক্রেতার বোঝাপড়ার ওপর। এখন রেণু থেকে ছোট-মাঝারি পুকুরে প্রথমে ধানি পোনা (ধানের আকারের) তৈরি হবে। এ সময় রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস মাছের পোনা চেনা যাবে। কাতলা মাছের পোনার মাথা একটু বড় হবে, রুই মাছের পোনার শরীর বড় দেখাবে এবং মৃগেল লম্বাটে হবে। কালিবাউস মাছের পোনা কালো হবে। এরপর আঙুলি (আঙুলের আকারে) পোনা হলে মাছচাষের পুকুরের জন্য কিনে নেবেন চাষিরা। আমরা হিসাব করে দেখেছি, হালদা থেকে উৎপাদিত পোনা থেকে বড় মাছ হিসেবে বাজারে বিক্রি পর্যন্ত জাতীয় অর্থনীতিতে ৮০০-১০০০ কোটি টাকা অবদান রাখে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ডিম সংগ্রহকারীদের অযত্ন, অবহেলা, অজ্ঞতা, পরিচর্যায় আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার না করা, জোয়ারে লবণাক্ত পানি আসায় অনেক ডিম নষ্ট হয়ে যায়। সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগে ডিম সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ ও উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করলে আরও বেশি রেণু উৎপাদন সম্ভব। একই সঙ্গে ডিম সংগ্রহকারীরা কার্প জাতীয় মাছের ডিম থেকে রেণু নিয়ে বাকি যে বর্জ্য ফেলে দেন, সেগুলো যাতে নদীতে বা পুকুরে ফেলেন, সে ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কারণ, এই বর্জ্যের মধ্যে চিংড়ি, কুচিয়াসহ বিভিন্ন জলজপ্রাণীর ডিম ও রেণু থাকতে পারে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here