স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম পদক্ষেপ
– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২০
Find us in facebook
ড. এম এ মাননান
২০২০ সালের ৭ জুন ৫৪তম ছয় দফা দিবস। প্রকৃতপক্ষে ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের দুই অংশের সব বিরোধী দলের কনভেনশনের সাবজেক্ট কমিটিতে বঙ্গবন্ধু প্রথম তাঁর প্রণীত ছয় দফা কর্মসূচি পেশ করার চেষ্টা করেন, যদিও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরোধিতার কারণে এ উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। তবে তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি ছয় দফার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন ঢাকা বিমানবন্দরে লাহোর কনভেনশন থেকে ফেরার পর। একই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটি ছয় দফা শুধু গ্রহণই করেনি, দেশব্যাপী বিতরণ করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া নিজস্ব দফাওয়ারি ব্যাখ্যা সহকারে একটি পুস্তিকা প্রকাশেরও সিদ্ধান্ত নেয়। এভাবে ছয় দফা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি হিসেবে চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। রাজনৈতিক টালমাটালের সেই দুর্যোগের সময় (পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য, পূর্ব পাকিস্তানবাসীর প্রতি প্রশাসনিক বঞ্চনা, পশ্চিম পাকিস্তানে প্রতিনিয়ত অর্থ পাচার ইত্যাদি) পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সমগ্র দেশে শোষণহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয় নিয়ে ছয় দফা প্রণয়ন করা হলেও ছয় দফার সংগ্রাম ছিল কণ্টকাকীর্ণ, বিপদসংকুল।
পাকিস্তানি শাসকরা এটিকে ভালো দৃষ্টিতে নেয়নি। বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত করে বন্দি করা হয়। নির্যাতন সত্ত্বেও তিনি ছিলেন অবিচল। তার দৃঢ়তার কারণেই ছয় দফার সংগ্রাম ব্যর্থ হয়নি। যদিও প্রথম প্রথম কেউ কেউ ছয় দফাকে দরকষাকষির বিষয় হিসেবে দেখেছেন, আসলে তা ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অধিবাসীদের শোষণ থেকে রক্ষাকল্পে গণমুক্তির মহাসনদ। বঙ্গবন্ধুর ভাষায় : '... পূর্ব পাকিস্তানবাসীর বাঁচার দাবিরূপে ছয় দফা কর্মসূচি ... আমার প্রস্তাবিত ছয় দফা দাবিতে যে পূর্ব পাকিস্তানের সাড় পাঁচ কোটি শোষিত-বঞ্চিত আদম সন্তানের কথাই প্রতিধ্বনিত হইয়াছে, তাতে আমার কোনো সন্দেহ নাই।'
এখন দেখা যাক, ছয় দফায় কী ছিল। প্রথম দফার বিষয়বস্তু ছিল লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেশনে রূপান্তর, সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থাকরণ, সংসদীয় পদ্ধতির সরকার এবং আইন পরিষদের সার্বভৌমত্ব। দ্বিতীয় দফায় বলা হয়, বৈদেশিক সম্পর্ক ও প্রতিরক্ষা থাকবে কেন্দ্রীয় বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের হাতে এবং অন্যান্য খাত ন্যস্ত থাকবে প্রদেশের হাতে। তৃতীয় দফায় পাকিস্তানের দুটি অঞ্চলের জন্য পৃথক অথচ অবাধে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা ব্যবস্থা প্রবর্তনের কথা বলা হয়েছে। তবে এ কথাও বলা হয়েছে যে, একটি মুদ্রা ব্যবস্থাও থাকতে পারে; কিন্তু এরূপ হলে একটি ফেডারেল ব্যাংকের অধীনে এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে অর্থ পাচার না হতে পারে। চতুর্থ দফার বিষয়বস্তু হলো পাকিস্তানের প্রদেশগুলোর হাতে শুল্ক্ক ধার্য করার ক্ষমতা অর্পণ এবং এ ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রদেশের শুল্ক্ক আয়ের একটি অংশ প্রদান। পঞ্চম দফাটি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার পৃথক হিসাব রাখা সম্পর্কিত। আর শেষ দফাটি ছিল প্রত্যেক প্রদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আধা-সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার ক্ষমতা প্রদান বিষয়ক।
সূক্ষ্ণভাবে বিশ্নেষণ করলে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা কর্মসূচি ছিল পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সমস্যাবলির নিয়মতান্ত্রিক সমাধানের লক্ষ্যে প্রণীত একটি বাস্তবায়নযোগ্য রাজনৈতিক কর্মসূচি। এতে উভয় প্রদেশের জন্যই পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি করা হয়। বস্তুত ছয় দফা কর্মসূচিতে উভয় প্রদেশের জন্য নিয়মতান্ত্রিক গণ্ডির ভেতরে থেকে ন্যায়বিচার চাওয়া হয়েছিল। ১৯৬৬ সালের ১৫ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে মানিক মিয়া 'সার্বভৌম বাংলা থেকে গৃহযুদ্ধ' শীর্ষক বিশ্নেষণধর্মী নিবন্ধে মন্তব্য করেছেন : 'সামগ্রিকভাবে দেশের স্বার্থকে বুলন্দ করিবার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমঝোতার ভিত্তিতে জনসাধারণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে দেশের দুই অঞ্চলের সমান অধিকার, সমান মর্যাদা ও সমান ক্ষমতা নিজ নিজ অঞ্চলের শাসনব্যবস্থা তদারকের অধিকারী করিয়া জাতীয় জীবনে অধিকতর ঐক্য ও সংহতি বিধান এই কর্মসূচির লক্ষ্য। দেশকে দুর্বল করা নয়, বরং দেশের দুই অঞ্চলের জনসাধারণের মধ্যে অংশীদারিত্বের মনোভাব সৃষ্টির নিশ্চয়তা বিধান করিয়া দেশ ও রাষ্ট্রকে সত্যিকার শক্তিশালী করাই ছয় দফা কর্মসূচির মর্মকথা।'
ছয় দফার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে সরকার বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করায় এর প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ১৯৬৬ সালের ৭ জুন প্রদেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করে। সেদিন পুলিশের গুলিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নিহত হয়। পুলিশ প্রায় ৮০০ লোককে গ্রেফতার করে এবং অগণিত লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ প্রতি বছর ৭ জুন দিনটিকে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। দিনটি বাংলাদেশের জনগণের কাছে বিশেষভাবে তাৎপর্যমণ্ডিত। ছয় দফাই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথে একটি টার্নিং পয়েন্ট। ছয় দফাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খান, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোসহ শাসকগোষ্ঠীর পদলেহনকারীরা যেভাবে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলা শুরু করেছিল, তাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে বিপুল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল। সবাই বুঝতে পেরেছিল, স্বায়ত্তশাসন ছাড়া বাঙালি অধ্যুষিত এ প্রদেশটির কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সেই যে গণআন্দোলন বেগবান হয় তা আর কারও পক্ষেই রোধ করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালে জনগণের স্বতঃস্ম্ফূর্ত অংশগ্রহণে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশের মর্যাদা লাভ করে।
লেখকঃ উপাচার্য, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: সমকাল।
- সাঘাটায় মুজিব নগর দিবস পালিত
- রংপুরে ফটোসাংবাদিক ফিরোজ চৌধুরীর একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু
- ঘোড়াঘাটে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালিত
- রাণীশংকৈলে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত
- পরচুলা তৈরি করে লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছে তারা
- খানসামায় হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে কারাদণ্ড
- তিনদিন বন্ধ থাকবে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর
- নাগেশ্বরীতে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
- তিনদিন বন্ধ থাকবে বুড়িমারী স্থলবন্দর
- ঠাকুরগাঁওয়ে শসার কেজি ২ টাকা
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- গঙ্গাচড়ায় ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি গঠন
- পীরগাছায় পানিতে ডুবে কিশোরের মৃত্যু
- চরের লাল মরিচে কৃষকের হাসি
- বিশ্ববাজারে চাল ও গমের দাম কমেছে
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু
- লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠাতে আরো উদ্যোগী হতে হবে: প্রতিমন্ত্রী শফিকুর
- অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- সমৃদ্ধি সূচকে ভারত-পাকিস্তান থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ
- ইসরায়েলের হামলার আশঙ্কায় ইরানে পারমাণবিক স্থাপনা বন্ধ
- মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি
- কৃতি শিক্ষার্থীরাই স্মার্ট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ: স্পিকার
- গ্রিসে খুলছে জনশক্তি রফতানির নতুন দুয়ার
- মিয়ানমারের ৬৮ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে
- উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ইসির নতুন নির্দেশনা
- সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
- ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ
- ফজর সালাতের প্রতি আর গাফেলতি-অলসতা আসবে না, যদি...
- ‘সংস্কারের পাশাপাশি আগামী বাজেটে কর্মসংস্থানে নজর দেওয়া হবে’
- বুয়েটে জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রম তদন্ত করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
- ছেলেকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাওয়া হলো না বাবার
- ফুলবাড়ীতে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি
- গাজায় শিশুহত্যা চলছে, কোথায় বিশ্বমানবতা- প্রধানমন্ত্রী
- রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে যা করবেন
- ঈদে সংবাদপত্রের ছুটি ঘোষণা আজ
- রাতে বেরিয়ে নিখোঁজ কিশোর, দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- জলবিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- দুপুরের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- নীলফামারীতে বিটরুট চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার
- ভারতবিরোধী স্লোগানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা লুকিয়ে আছে
- শিশুরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর
- দেশের ৮ জেলায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস
- আজ থেকে ট্রেনের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- শরীরে মেদ জমেছে নাকি পানি, বুঝবেন যেসব লক্ষণে
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- সেহেরিতে খেতে পারেন যেসব খাবার
- পুলিশের আজান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত