• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনে অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনের অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার ভিত্তি।- খবর বাসস।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ইউএইচসি ও এসডিজিস অর্জনে প্রতিটি দেশের জন্য স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়ন কৌশল প্রণয়নে কার্যকর বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে এসে ব্যস্ততম দিন পার করেছেন সোমবার। এদিন জাতিসংঘ সদর দফতরে সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির (ইউএইচসি) ওপর উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি ‘মাল্টি-স্টেকহোল্ডার প্যানেল’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে সহ-সভাপতিত্ব করেন তিনি। 

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও ‘ইউএইচসি সমতা, অংশীদারিমূলক উন্নয়ন ও সবার জন্য সমৃদ্ধির চালিকাশক্তি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সহ-সভাপতিত্ব করেন। জাতিসংঘ সদর দফতরের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলের (ইকোসোক) চেম্বারে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিজ মিশেল বাশেলে, ম্যালেরিয়া নির্মূলে আরবিএম অংশীদারিত্ব বিষয়ক বোর্ডের সভাপতি মিজ মাহা তাইসির বারাকাত, অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক মিজ উইনি বায়ানিমা ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক জেফেরি সাখস।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুবিধার অধীনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সম্পদের সমাবেশ ঘটাতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন।

তিনি বলেন, অনেক দেশে ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজের আওতায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যোগাড় করাটাই প্রধান বাধা এবং এই বাধা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বলেন, ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটসের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই পর্যাপ্ত মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও ভালভাবে জীবনযাপন করার অধিকার রয়েছে।

তিনি বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক বিশ্বাস ও আর্থসামাজিক অবস্থা নির্বিশেষ রোগমুক্ত সুস্বাস্থ্য পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বলতে দু’টি জিনিসকে বুঝায়- প্রথমত, নারী বা পুরুষের সামাজিক পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেককেই সমান সুযোগ দিতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, অভিন্ন সম্পদ ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সবার সমান অধিকার থাকতে হবে।

সম্পদের সুষম বণ্টনের ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সার্বিক উন্নয়ন না হলে তা অস্থিতিশীলতা ও সামাজিক ঐক্যে বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, সম্পদের যথাযথ সুষম বণ্টন না করে শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি বাড়লেই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হবে না। সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা একটি সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান শর্ত।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি নাগরিকের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠির অর্ধেক এখনো প্রয়োজনীয় স্বাস্ব্য সেবা পাচ্ছে না। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়ের কারণে প্রতি বছরে প্রায় একশ’ মিলিয়ন লোক অতিদারিদ্র্য হচ্ছে। প্রায় আটশ’ মিলিয়ন লোক তাদের পারিবারিক বাজেটের কমপক্ষে দশ শতাংশ ব্যয় করেন স্বাস্থ্য সেবায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র লোকেরা বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা পায় না। ফলে, তাদের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবায় সমতা নিশ্চিত করতে হবে। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়ের কারণে আমরা কাউকে দরিদ্রতার মুখে ঠেলে দিতে পারি না। স্বাস্থ্য সেবা পেতে গিয়ে কাউকে যাতে দরিদ্র্য হতে না হয়, এ জন্য আমাদেরকে উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা স্তর থেকে ৯০ শতাংশ স্বাস্থ্যগত প্রয়োজন মেটানো যেতে পারে। তিনি বলেন, সংক্রমণযোগ্য এবং অসংক্রমণযোগ্য রোগের চিকিৎসা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই করা যেতে পারে এবং এসডিজি বাস্তবায়নে সব দেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। 

তিনি বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতে কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলো তৃণমূল পযার্য়ের জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার পল্লীর জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এ সব ক্লিনিকের মধ্যে প্রতিদিন প্রতিটি ক্লিনিক থেকে গড়ে ৪০ জন রোগী স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই শিশু ও নারী। প্রতি মাসে এসব ক্লিনিকে প্রায় ১০ মিলিয়নেরও বেশি লোক স্বাস্থ্য সুবিধা নিতে আসে।

অটিজম এবং নিউরোডেভলোপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here