• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

শিমে ভরে উঠেছে লালমনিরহাটের সবজি চাষিদের শিমের বাগান

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook

ছোট ছোট বেগুনি ফুল আর থোকা থোকা শিমে ভরে উঠেছে লালমনিরহাটের সবজি চাষিদের শিমের বাগান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। অল্প জমিতে স্বল্প পুঁজি দিয়েই শিম চাষে বেশ লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে আর তাই প্রতিবছর বাড়ছে শিমের চাষ।

আষাঢ় মাসের শেষদিকে সারিবদ্ধভাবে গর্ত খুঁড়ে কিছু গোবর সার প্রয়োগ করে শিমের বীজ বপন করতে হয়। এরপর কিছুদিন সার সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগের মাধ্যমে পরিচর্যা করে চারা গাছ একটু বড় হলে মাচাং বানিয়ে দিলে মাত্র আড়াই/তিন মাসের মধ্যেই বাজারে তোলার উপযোগী হয়ে ওঠে শিম। শীতকালীন সবজি হিসেবে শিমের কদর থাকায় মুনাফাও পাওয়া যায় ভাল।

লালমনিরহাট জেলার সবজি এলাকা খ্যাত আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি, ভেলাবাড়ি, দুর্গাপুর, সাপ্টিবাড়ি, ভাদাই, সদর উপজেলার বড়বাড়ি, মোগলহাট, কুলাঘাট, কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর, কাকিনা, চলবলা, গোড়ল, হাতীবান্ধার ভেলাগুড়ি, পাটিকাপাড়া, গড্ডিমারী, পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা, জোংরা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ গ্রামে চাষ হয়েছে শিমসহ বিভিন্ন জাতের সবজি।

আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের সবজি চাষি ফেরদৌস আলম। তিনি চলতি মৌসুমে ১৮/২০ হাজার টাকা খরচ করে ৬৫ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল শিমের চাষ করেছেন। এরই মধ্যে ৩০ শতাংশ বীজ উৎপাদনের জন্য রেখে বাকি ৩৫ শতাংশ জমির শিম বাজারে বিক্রি শুরু করছেন।

শিম চাষি আকরাম জানান, ৩৫ শতাংশের বাগান থেকে প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চার মণ শিম তুলছেন তিনি। প্রতি মণ আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছেন। বিক্রি চলবে বৈশাখ মাস পর্যন্ত। তবে দিন দিন বাজারে আমদানি বাড়ায় কমে আসবে শিমের বাজার মূল্য। তবুও লোকসান হবে না। কারণ প্রথম দুই সপ্তাহের শিম বিক্রি থেকেই খরচ উঠে এসেছে তার। বাকি সময়ের যত শিম বিক্রি হবে সবই মুনাফা।

এছাড়াও বাকি ৩০ শতাংশের বীজ বিক্রি করেও অর্ধ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৬৫ শতাংশ জমি থেকে চলতি মৌসুমে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন তার।

পাশের গ্রামের চাষি মইন উদ্দিন চলতি মৌসুমে ৭ হাজার টাকা খরচ করে ১৪ শতাংশ জমিতে শিমের চাষ করেছেন। ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে তার শিম বাগান। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই শিম বিক্রি শুরু করবেন তিনি। গত বছরও একই জমিতে শিম চাষ করে অর্ধলাখ টাকা আয় করেছিলেন এ চাষি। তিনি বলেন, ধান চাষে খরচ বেশি কিন্তু দাম কম থাকায় লাভ কম। তাই অল্প জমিতে বেশি মুনাফা করতে শিম চাষ করি। একটু পরিচর্যা করলে শিম চাষে অধিক মুনাফা করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি এলাকার চাষি মনিরুল ইসলাম জানান, শীতকালে শিমের বেশ চাহিদা থাকে তাই বাজারে এর কদরের মত বেড়ে যায় বাজার মূল্য। বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই। পাইকাররা ক্ষেত থেকে শিম কিনেন ন্যায্য মূল্যে। অল্প জমিতে বেশি মুনাফা পেতে শিম চাষের বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।

কালীগঞ্জের চন্দ্রপুরের চাষি আমিনুর রহমান জানান, উঁচু জমিতে ধান চাষ করে তেমন মুনাফা না আসায় গত দুই বছর ধরে সবজি চাষাবাদ করে বেশ মুনাফা পেয়েছেন তিনি। এ বছর ২০ শতাংশ জমিতে শিমের চাষ করেছেন। আগামী সপ্তাহে শিম বিক্রি শুরু করবেন তিনি। আবহাওয়া আর বাজার অনুকূলে থাকলে লাখ টাকা আয় করার আশা করছেন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিদু ভূষণ রায় জানান, শিম প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি সবজি। এর বিচিরও সবজি হিসেবে কদর রয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। শিম চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলেও আশা করেন তিনি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here