• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

লালমনিরহাটে করোনা সন্দেহ নারীর লাশ ফেলে দিল তিস্তায়

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

গাজিপুরে পোশাক কারখানার শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের(২২) মরদেহ করোনায় সন্দেহ তিস্তা নদীতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিসাদের বিরুদ্ধে। ওই নারী মরদেহ ৪দিন পর তিস্তা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সোমবার(২৫ মে) বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রহুল আমিন বাবুল স্থানীয় পুলিশের উপস্থিতে মরদেহের জানাজা শেষে মৃত্যের নিজ গ্রামে দাফন করে। এর আগে গত রোববার(২৪ মে) রাতে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের গোলাম মোস্তফার স্বামী নিগৃহীতা মেয়ে। তিনি একই উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানান, বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমানের সাথে ৬মাস আগে বিয়ে হয় পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে একাই গাজিপুরে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন মৌসুমী। গত বৃহস্পতিবার(২১ মে) অসুস্থতা অনুভব করলে একটি ট্রাক যোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রহনা দেন তিনি।

পথিমধ্যে রংপুরের তাজহাট এলাকায় পৌছলে ট্রাক চালক তাকে মৃত দেখে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান। অজ্ঞত মরদেহ হিসেবে তাজহাট থানা পুলিশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান। পরদিন শুক্রবার খবর পেয়ে মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা তাজহাট থানায় গিয়ে মেয়ের মরদেহ সনাক্ত করেন। মেয়ের মরদেহ বুঝে নিয়ে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিসাদকে মোবাইলে বিষয়টি অবগত করে নিজ এলাকায় দাফনের অনুমতি চান। কিন্তু চেয়ারম্যান ওই মরদেহসহ পুরো বাড়ি এবং মরদেহবাহি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেন বলে অভিযোগ মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফার।

অবশেষে নিরুপায় হয়ে গরিব বাবা মেয়ের মরদেহ দাফন করতে তাজহাট এলাকার একজন লাশবাহি গাড়ি চালককে ৫হাজার টাকা প্রদান করেন। তারা মরদেহ দাফনের আশ্বাস দিয়ে বাবাকে বাড়ি পাঠিয়ে মরদেহটি তিস্তা নদীতে ফেলে দেন। দুই দিন পরে স্থানীয়দের খবরে রোববার(২৪ মে) রাতে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে সরকারী ব্যাগে মোড়ানো অজ্ঞত মরদেহটি উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ। সোমবার(২৫ মে) ঈদের নামাজ শেষে আদিতমারী থানা পুলিশ মরদেহটির জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নিতেই পরিচয় সনাক্ত করেন মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা। অবশেষে আদিতমারী থানা পুলিশ পাটগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তায় নিজ গ্রামে মৃত মৌসুমীকে দাফন করে।

মৃত মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফা বলেন, হাতে পায়ে ধরতে চেয়েও লাশ গ্রামে নিতে দেয়নি আবু সাঈদ নিসাদ চেয়ারম্যান। বাধ্য হয়ে একজন চালককে ৫হাজার টাকা দিয়েছি দাফন করতে। তারাও দাফন না করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। অবশেষে আবারো মেয়ের মরদেহ সনাক্ত করতে হলো আদিতমারী থানায়। পুলিশের পাহারায় মেয়ের মরদেহ দাফন করি। মেয়ের মরদেহ নিয়ে যারা ব্যবসা করেছে তাদের বিচার দাবি করেন তিনি।

বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিসাদের (০১৭১৩৭৬৩৯৬২) নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক। সরকারী ব্যাগে মোড়ানো মর্গের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ইউডি মামলা করা হয়েছে। মৃত্যের পরিচয় জানার পরে মেয়ের বাবার আকুতি শুনে পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুই থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে মরদেহ তার গ্রামে দাফন করা হয়েছে। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পাটগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সুমন মোহন্ত জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে ওই নারীকে দাফন করা হয়েছে। পরিবার অভিযোগ দিলে অব্যশই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here