• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

রান্নায় কোন তেল ব্যবহার করছেন?

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

তেল রান্নার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তেল ছাড়া রান্না হয় কিন্তু তেমন সুস্বাদু হয় না। আজকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের তেল পাওয়া যায়। তেল ত্বক থেকে শুরু করে হাড়ের জয়েন্ট ভালো রাখতে কাজ করে। তেল যেমন খাদ্যকে সুস্বাদু করে আবার এর ক্ষতিকর দিকও কম নয়। অতিরিক্ত তেল দেহের ওজন বৃদ্ধি করে, রক্তনালি ও হার্টে ব্লক সৃষ্টি করে। তাই রান্নার নিয়ম ও ধরণ বুঝে উপযুক্ত তেল বাছাই করা আপনার গুরু দায়িত্ব। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সুস্থতা আপনার হাতে। কিন্তু অনেক ধরনের তেল থেকে সঠিক তেল বাছাই করা ঝক্কিও কম নয়।

রান্নায় সাধারণত যে তেল ব্যবহার হয় তা মূলত আনরিফাইন্ড বা রিফাইন্ড দু’ধরনের হতে পারে। আনরিফাইন্ড তেলের স্মোকিং পয়েন্ট কম থাকে। এ কারণে রান্নার সময় তেল গরম হলেই তেল থেকে ধোঁয়া বের হয়, যা বেশি তাপমাত্রায় রান্না করা অনুপযোগী। এই তেল মৃদু আঁচে রান্না করতে হয়। এ জাতীয় তেল মূলত সালাদ, ম্যারিনেশন, সস তৈরিতে বা লো হিট বেকিং এ ব্যবহার করা উচিত। আনরিফাইন্ডকৃত তেলে প্রচুর বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান থাকে, যা শরীরের জন্য উপকারি।

 

পাশাপাশি রান্নায় স্বাদ আনতে সাহায্য করে। এ ধরনের তেলে ভিটামিন-ই এর পরিমাণ বেশি থাকে। তাই রিফাইন্ড তেলের তুলনায় আন-রিফাইন্ড তেল স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশি উপকারি। তেল যদি আনরিফাইন্ড হওয়ার পাশাপাশি মোনো আন-স্যাচুরেটেড হয় যেমন- অলিভ অয়েল, রাইস ব্র্যান, ক্যানোলা তেল, সরিষার তেল, তিলের তেল হয় তবে আরো ভালো। রান্নার সময় কি তেল ব্যবহার করবেন তার জন্য স্মোকিং পয়েন্টের কথা মাথায় রাখা উচিত। কারণ সাধারণ তাপমাত্রায় কোনো তেল উপকারি হলেও যদি রান্নার সময় একে স্মোকিং পয়েন্টের বেশি আঁচে রান্না করা হয় তবে তার সমস্ত গুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক।

 

অনেকেই রান্নায় ওলিভ অয়েল বা অন্য কোনো স্বাস্থ্যসম্মত তেল ব্যবহার করছেন। তাঁরা মনে করেন পুষ্টিকর ডায়েট মেনে চলছেন। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কি তেল ব্যবহার করছেন তার থেকেও জানা বেশি জরুরী কিভাবে এবং কতটুকু তাপমাত্রায় তা রান্না করছেন। অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারি। রক্তে এলডিএল বা ব্যাড কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে, হার্টকে সুস্থ রাখতেও এ তেল দারুণ কার্যকরী। পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল গ্রহণ করলে হার্টের যাবতীয় সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল আবার নানা প্রকারের হতে পারে যেমন- ভার্জিন, এক্সট্রা-ভার্জিন, পিওর, এক্সট্রা লাইট ইত্যাদি। তবে সবগুলোর মধ্যে একস্ট্রা ভার্জিন বাছাই করা শ্রেয়। তবে এ তেলের স্মোকিং পয়েন্ট বেশ কম। তাই এ তেল সালাদ, স্যুপ, নুডলস, পাস্তা ও অল্প আঁচে সবজি হালকা ভাঁজার জন্য ব্যবহার করা উচিত।

 

বাজারে আরেকটি তেল বেশ জনপ্রিয় সেটি হলো রাইস ব্র্যান। এ তেলের স্মোকিং পয়েন্ট বেশি। তাই ডিপ ফ্রাই, সবজি-তরকারি, মাংস যেকোন ধরনের বেশি আঁচের রান্নায় এটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। এ তেল হার্টের রোগীর জন্য খুব উপকারি। কারণ এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম ও ওরাইজনাল এর উপস্থিতির কারণে রক্তে কোলেস্টেরল কম করতে সাহায্য করে। এছাড়া ওমেগা-৩-ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকে। চালের তুষ থেকে তৈরি হয় রাইস ব্র্যান অয়েল। যা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ভরপুর মাত্রায় থাকে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন-ই যা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারি।

 

সবচেয়ে চিরাচরিত ও সহজ লভ্য তেল হলো সরিষার তেল। পূর্বে গ্রাম বাংলার মানুষ সমস্ত রান্নার কাজ সারতেন সরিষার তেল দিয়ে। কিন্তু বর্তমানে রান্নায় এটির ব্যবহার কম হলেও সালাদ, ভর্তা ও ভাঁজির স্বাদ বাড়াতে এ তেলের জুড়ি নেই। এ তেলে মুফা এবং পুফার (মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড) পরিমাণে বেশি থাকে। এটি ফিল্টারড ও রিফাইন্ড দু’ধরনের হয়। তবে এতে এরুসিক এসিডও থাকে, যা বেশি মাত্রায় গ্রহণ স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই যথাসম্ভব কম ব্যবহারের চেষ্টা করা উচিত। তেলের পুরো উপকারিতা পেতে হলে উপরের বিষয়গুলোর দিকে নজর দেয়া জরুরি। সুতরাং শুধু স্বাস্থ্যকর তেল বাছাই করলেই হবেনা এর সঠিক ব্যবহারের নিয়ম জানতে হবে। 

Place your advertisement here
Place your advertisement here