• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

রাজশাহী নগরী ও খায়রুজ্জামান লিটনের অপরিহার্যতা

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

সমাজে খুব কম সংখ্যক মানুষ আছেন যাঁরা নেতৃত্ব, ক্ষমতা, পদ-পদবী ইত্যাদিকে দায়িত্ব মনে করেন। বেশীর ভাগ মানুষই তাঁর অবস্থানকে ক্ষমতা, সুবিধা এবং কর্তৃত্ব দ্বারা নিরূপন করেন। স্বল্প সংখ্যক মানুষ এর ব্যতিক্রম। এমন একজনই আমাদের নগরপিতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। যিনি তাঁর অবস্থানকে সর্বদাই দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করেছেন।

আমাদের নিশ্চয় মনে আছে, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন যখন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তখন প্রথমবারের মতো শতবছরের এই নগরীর বাসিন্দারা দেখতে পেয়েছিলেন আধুনিক নগরী আসলে দেখতে কেমন হয়।  বুঝতে পেরেছিলেন নাগরিক সুবিধা কেমন হয়, জানতে পেরেছিলেন নগর উন্নয়ন কিভাবে করা সম্ভব। সর্বপরি শিখতে পেরেছিলেন নিজের নগরীকে নিয়ে কিভাবে স্বপ্ন বুনতে হয়। আমার অনেক বন্ধু, বড়ভাইবোনেরা যারা অনেকদিনপর ঐ সময় রাজশাহীতে বেড়াতে এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই রাজশাহী নগরীর সেই অপরূপ সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হয়েছিলেন।

চিরচেনা পুড়নো-জীর্ণ নগরীকে আর চিনতে পারছিলেন না। নগরীর সকল নাগরিক এবং যাঁরা তখন রাজশাহীতে বেড়াতে এসেছেন সকলেই নগরীর সামগ্রিক চেহারায় ছিলেন অত্যন্ত সন্তুষ্ট, এমনকি খায়রুজ্জামান লিটনের সবচেয়ে বড় সমালোচকরাও কোনও সমালোচনা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

অনেক পুড়োনো প্রবাদ আছে, বাঙালি নাকি দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না! তারই যথার্থতার প্রমাণ দিয়েছিলাম আমরা রাজশাহীবাসী। ২০১৩ সালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গুজবে বিশ্বাস করে। মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়ে সহজ-সরল নগরবাসী একটি ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার পরেরদিন সকাল থেকেই হয়ত উপলব্ধি করা শুরু করেন- নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম। তাতে অবশ্য আমাদের স্বপ্নদ্রষ্টা ভেঙ্গে পড়েন নি। অভিমানও করেন নি। দায়িত্বে না থেকেও নীরবে-নিভৃতে কাজ করে গেছেন নগর উন্নয়নে। পাশে থেকেছেন সাধারণ মানুষের এবং অপেক্ষায় থেকেছেন আবার রাজশাহীবাসীর জন্য নতুন কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে।

২০১৮ সাল সত্যিকার অর্থেই নগরবাসী অস্থির হয়েছিলেন। কবে আবার তাঁদের প্রিয় মানুষটাকে নগরপিতা হিসেবে দেখতে পাবেন। তাঁদের আশা পূরণ হয়েছে।

জনাব এ এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন আবারও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। ৫ অক্টোবর ২০১৮ রাজশাহীবাসীর মুখে হাসি ফুটিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। গল্পের শুরুটা এখানেই।

প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত নগর ভবনে গিয়ে দেখুন- একজন স্বপ্নবাজ সুরূচীসম্পন্ন  মেয়র আমাদের লিটন ভাই সহাস্যবদনে প্রতিদিন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ সভা করছেন। শত শত মানুষের সাথে হাসিমুখে দেখা করছেন এবং তৎক্ষণাৎ তাঁদের সমস্যার সমাধান দিচ্ছেন। আবার এরই ফাঁকেফাঁকে সারা নগরীর বিভিন্ন অনুষ্ঠান, জানাযা, সমাবেশসহ সকলস্থানে চষে বেড়াচ্ছেন। মানুষের খবর নিচ্ছেন। জরুরী জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো খুঁজে বের করছেন।

আপনারা জেনে হয়তো অবাক হবেন- প্রায় ১০০ কোটি টাকার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নির্বাচিত হওয়ার ঠিক পরদিন থেকে গত পাঁচ বছরে পিছিয়ে পরা রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে আবার বদলে  দেয়ার জন্য নতুন পরিকল্পনা শুরু করেন। যার ফলশ্রতিতে দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রথমেই সই করেন রাজশাহীবাসীর জন্য ৭৫২ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প।

গত পাঁচ বছর ধরে যে দুঃসহ অবস্থা রাস্তাগুলো নগরবাসীর অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। একটু খেয়াল করে দেখুন। রেলস্টেশন থেকে তালাইমারি, কোর্ট থেকে ভেড়ীপাড়া, বড় মসজিদের পেছন থেকে গুলগফুর পেট্রোল পাম্প, পবা নতুনপাড়া (গাংপাড়া) রাস্তা, দড়িখড়বনা ইত্যাদি সবগুলোর সংস্কারকাজ শুরু হয়ে গেছে।

এভাবে লিটন ভাইয়ের প্রচেষ্টায় আগামী পাঁচ বছরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে অন্তত ৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হবে এবং অতিসত্ত্বর রাজশাহীর ১২টি থানা নিয়ে রাসিকের এলাকা বৃদ্ধি করা হবে। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই রাজস্ব বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, পরিচ্ছন্ন বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগসহ প্রতিটি সেক্টরে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিক সভা করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মধ্যেই রাজশাহী সিটি ও চীনের ই-ইয়াং সিটির মধ্যে উন্নয়ন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে উনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন একজন অশিক্ষিত, অভদ্র মেয়র আর একজন উচ্চশিক্ষিত, মার্জিত মেয়র এরমধ্যে পার্থক্যটা ঠিক কোথায়? ইতিমধ্যেই মাননীয় মেয়র আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন, বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠীকে তিনমাসে একবার করে হলেও রাজশাহীতে নিয়ে আসার। যাতে হৃদরোগ আক্রান্ত নাগরিকরা নিজ শহর রাজশাহীতেই বিশ্বমানের হৃদরোগ চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন।

গত একমাস যাবৎ নগরীতে শুরু হয়েছে পরিচ্ছন্ন অভিযান। রাস্তায় রাস্তায় ঝাড়ু নিয়ে ঘুড়ছেন, সকলের আঙ্গিনার আবর্জনাগুলো পরিস্কার করে দিয়ে একটি করে সুদৃশ্য ডাস্টবিন উপহার দিয়ে অনুরোধ জানাচ্ছেন, আমাদের এই নগরটিকে ঝকঝকে, তকতকে পরিচ্ছন্ন করে তুলতে।

মাদকের প্রতি জিরো টলারেন্স প্রদর্শন করে ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিকক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নারী উদ্যোক্তাদের প্রণোদনায় জায়গা বরাদ্দের ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। এতকিছুর মধ্যেও উনি ভুলে যান নি অসুস্থ ক্রিকেটার চামেলির পাশে দাঁড়াতে। ভুলে যান নি অসহায় প্রবীণদের পাশে দাঁড়াতে। ভুলেন নি পাড়া-মহল্লায় ঘুরেঘুরে সকলের সুখ-দুঃখের খোঁজ খবর নিতে।

নগর উন্নয়নে নিচ্ছেন নাগরিক মতামত। কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নগরবাসীর কাছে ‘ কেমন রাজশাহী চান?’ শিরোনামে পরামর্শ চেয়েছেন। পরামর্শগুলো উনি সংগ্রহ করছেন এবং গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করছেন। আগামী দিনে রাজশাহীবাসীর কর্মসংস্থানের জন্য বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, চামড়া শিল্পপার্কসহ বিভিন্ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সর্বাধিক ভূমিকা রাখছেন আমাদের লিটন ভাই। প্রতিদিন প্রতিনিয়ত তিনি কাজ করে যাচ্ছেন আগামীর রাজশাহীর জন্য, আমাদের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।

নির্বাচিত হওয়ার আগে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন স্লোগান দিয়েছিলেন ‘চলো আবারও বদলে দিই রাজশাহী’। খুব নীরবে হিমেল হাওয়ার মতই বদলের হাওয়া কিন্তু লেগে গেছে আপনার শহরে। গা ঝাড়া দিয়ে উঠুন। চোখ মেলে দেখুন, যদি দুই মাসেরও কম সময়ে এত কাজ করা সম্ভব হয় তাহলে আগামী পাঁচ বছরে আপনাদের লিটন আপনাদের কেমন নগরী উপহার দেবেন? একটু অনুমান করুন। নিশ্চয় এখন আর বুঝতে অসুবিধা হয় না এই মানুষটা রাজশাহীবাসীর জন্য কতটা অপরিহার্য। আসুন স্বপ্ন দেখি, যে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আমাদের স্বপ্নবাজ মেয়র, আমাদের লিটন ভাই।

লেখক
সৌরভ পাল চৌধুরী জর্জ
সহকারী অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব
বঙ্গবন্ধু পরিষদ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-হাবিপ্রবি

Place your advertisement here
Place your advertisement here