• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

রংপুরে শিক্ষার্থীদের থুথু খাওয়ানো সেই শিক্ষককে বদলি

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকার চতুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থুথু খাওয়ানোর অভিযোগে শিক্ষক মোর্শেদুজ্জামান ওরফে জামাল উদ্দিনের বদলির আদেশ দিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা।

রোববার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার অধিকারী।

এর আগে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত বৃহস্পতিবার স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। তবে ওই শিক্ষকের শুধু বদলির আদেশ দেয়ায় স্থানীয় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, গত মঙ্গলবার হারাগাছ চতুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী অনামিকা ক্লাসে অংক করতে না পারায় অন্য শিশুর থুথু খাইয়ে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিন।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ করেন এবং নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দেয়।

পরে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. মাহমুদুন নবীকে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। শনিবার ওই বিদ্যালয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. মাহমুদুন নবী, প্রধান শিক্ষক খালেদা আক্তার, অভিযুক্ত শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার সময় উপস্থিত শিক্ষার্থী ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণসহ উভয়ের বক্তব্য শোনেন তারা। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, রোববার দুপুরে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদন ও নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থীসহ অন্য শিশুদের লিখিত জবাবে প্রতিয়মান হয়েছে ক্লাসে অংক করতে না পারায় শাস্তিমূলক হিসেবে একজনের থুথু আরেকজনকে খাওয়ান ওই সহকারী শিক্ষক।

তিনি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক তার দোষ স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় নির্যাতনকারী শিক্ষকের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অন্য বিদ্যালয়ে বদলির ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়। জেলা শিক্ষা অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হলে রোববার বিকেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম তার বদলির আদেশ জারি করেন। তাকে কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের আজম খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।

এদিকে, এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে বরখাস্ত না করে শুধু বদলির আদেশ দেয়ায় স্থানীয় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় অভিভাবক এনামুল হক, নূর আমিন ও দেলোয়ারসহ অনেকেই বলেন, জামাল উদ্দিন শিশু শিক্ষার্থীদের অমানবিক নির্যাতনসহ তাদের উপ-বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করার কারণে প্রধান শিক্ষকের কাছে এর আগেও অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। জামাল উদ্দিনকে রক্ষা করতে বরখাস্তের পরিবর্তে বদলি করার বিষয়টি কেউ মানতে পারছেন না।

প্রসঙ্গত, হারাগাছ চতুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া দিতে না পারায় শিক্ষার্থীদের শাস্তি হিসেবে একজনের থুথু অন্যজনকে খাওয়াতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দিনের পর দিন এমন শাস্তির কারণে স্কুলে যেতে অনীহা সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের। গত মঙ্গলবার আবারো থুথু খাওয়ানোর ঘটনার ফুঁসে উঠে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার বিচার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here