• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

রংপুরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বাদাম চাষিরা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরে তিস্তার জেগে ওঠা চরে বাদাম চাষ করে দিন বদলের চেষ্টা করছিলেন চরাঞ্চলের অভাবি পরিবারগুলো। কিন্তু এ বছর অতি বর্ষণসহ আগাম বন্যায় তলিয়ে যায় ফসলের ক্ষেত। পরিপক্ক হওয়ার আগেই বাদামক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ফলন ভালো হয়নি। প্লাবিত চরে এখন চলছে বাদাম উত্তোলন। তবে চাষিদের মন ভার। আশানুরুপ ফলন না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বাদাম চাষিরা।

এক সময়ে পতিত থাকা তিস্তার চরে এখন ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে চিনা বাদাম। এলাকায় ’মাটির নিচের সোনা’ বলে পরিচিত এই বাদামই প্রধান ফসল হয়ে উঠছে রংপুরের কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছার তিস্তার চরাঞ্চলে। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বছর তিস্তার জেগে ওঠা চরে ব্যাপক জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে চাষিরা বাদাম উত্তোলন করছে বলে সূত্র জানায়, এ বছর অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে পরিপক্ক হওয়ার আগে বাদামক্ষেত তলিয়ে যায়। ফলে আশানুরুপ ফলন হয়নি। তাছাড়া তড়িঘড়ি করে অনেকে অপরিপক্ক বাদাম উত্তোলনের চেষ্টা করলেও পানির প্রবল স্রোতে ভেসে যায় স্বপ্নের বাদাম।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এ বছর কাউনিয়া উপজেলার চর ঢুষমারা, চর বিশ্বনাথ, চর গনাই, চর আজম খাঁ, চর হয়বত খাঁ, চর গদাই, নাজিরদহ ও আরাজী হরিশ্বরসহ ২০টি চরে ব্যাপক বাদাম চাষ হয়েছে। গঙ্গাচড়ায় বাদাম চাষ হয়েছে রাজবল্লভ, ছালাপাক, চর ইচলীসহ বিভিন্ন চরে। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় চরের অভাবি পরিবারগুলো ক’বছর ধরে বাদাম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। চাষিরা তাই ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাসে বোরোর বদলে বাদাম চাষ করে মে-জুলাই মাসে তা উত্তোলন করছেন।

তিস্তা তীরবর্তী কাউনিয়ার বিশ্বনাথ চর, আজারী হরিশ্বর, নাজিরদহ, হয়বত খাঁ, চর ঢুষমারাসহ চরাঞ্চলের গ্রামগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে বাদামের ক্ষেত। পানির মধ্যেই কেউ জমি থেকে গাছসহ বাদাম তুলছেন, কেউ গাছ থেকে বাদাম ছিড়ে আলাদা করছেন, আবার কেউবা রাস্তার পার্শ্বে শুকাচ্ছেন ‘মাটির নিচের সোনা’ বলে খ্যাত এই বাদাম। উঠানে স্তুপকৃত বাদাম ঝেড়ে পরিষ্কার করছেন নারীরা। ঘরে ঘরে চলছে বাদামের কাটা-মাড়াই। চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে চরের বালু মাটিতে ফসল তেমন একটা হতো না। ফলে এখানকার লোকজনের অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। গত ক’বছর ধরে পলি জমে ভরাট হওয়া চরের জমিতে এখন ব্যাপক হারে বাদাম চাষ হচ্ছে। স্বাবলম্বি হয়ে উঠছেন চাষিরা।

কিন্তু এ বছর পানির নিচে বাদামক্ষেত ডুবে থাকায় বাদামের দানা ভালো হয়নি। সরেজমিনে তিস্তা তীরবর্তী কাউনিয়ার বিশ্বনাথ চর, আজারী হরিশ্বর, নাজিরদহ, হয়বত খাঁ, চর ঢুষমারাসহ চরাঞ্চলের গ্রামগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে বাদামের ক্ষেত। কেউ জমি থেকে গাছসহ বাদাম তুলছেন, কেউ গাছ থেকে বাদাম ছিড়ে আলাদা করছেন, আবার কেউবা রাস্তার পার্শ্বে শুকাচ্ছেন ‘মাটির নিচের সোনা’ বলে খ্যাত এই বাদাম। উঠানে স্তুপকৃত বাদাম ঝেড়ে পরিষ্কার করছেন নারীরা। ঘরে ঘরে চলছে বাদামের কাটা-মাড়াই। চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে চরের বালু মাটিতে ফসল তেমন একটা হতো না। ফলে এখানকার লোকজনের অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। গত ক’বছর ধরে পলি জমে ভরাট হওয়া চরের জমিতে এখন ব্যাপক হারে বাদাম চাষ হচ্ছে। আর বাদামই বদলে দিয়েছে চরের মানুষের জীবনমান, করেছে স্বাবলম্বী। প্রতি একর জমিতে ২৪ থেকে ২৫ মণ বাদামের ফলন হলেও এবারে অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা।

ঢুষমারা চরের চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, পানির স্রোতে ভেসে আসা পলি জমেছে বাদামক্ষেতে। এ কারণে অনেক ক্ষেতের বাদাম তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এতে অনেক ক্ষতির আশঙ্কা করেন তিনি। গদাই চরের বাদাম চাষি আল আমিন জানান, বন্যার আশঙ্কায় সময়ের আগেই বাদাম উত্তোলন করায় অনেকের বাদাম এখনও পুক্ত (পরিপক্ক) হয়নি। পানিতে ডুবে থাকা বাদাম সংরক্ষণ করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে করোনার কারণে পাইকাররা না আসায় বাদাম বিক্রি করারও উপায় নাই।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রংপুরের তিন উপজেলা বিশেষ করে কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে বাদামের চাষ হয়ে থাকে। এ বছর এসব এলাকায় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হলেও যার বেশিরভাগই চাষ হয়েছে কাউনিয়ার চরাঞ্চলে। কাউনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান, উপজেলার বেশ কয়েকটি চরগ্রামে চলতি মৌসুমে ৬৭৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। আগাম বন্যার আশঙ্কায় চাষিরা এখন বাদাম তুলতে ব্যস্ত। এ বছর অতি বর্ষণে ১৬২ হেক্টর জমির বাদাম তলিয়ে যাওয়াসহ স্রোতে ভেসে গেছে অনেক চাষির বাদাম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক ড. সরওয়ারুল হক জানান, এক সময়ের ‘মঙ্গা’ মোকাবেলায় এই অঞ্চলের চরাঞ্চলে অভাবি পরিবারগুলো সংগ্রাম করেছে। ন্যুনতম বেঁচে থাকার তাগিদে কাজের সন্ধানে ছুটে গেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু এখন তারা বিভিন্ন ফসলের চাষ করে দিন বদলের চেষ্টা করছেন। তবে উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় বাদাম চাষে চরের চাষিরা লাভবান হচ্ছিলেন। তবে এবারে অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন না চাষিরা।

Place your advertisement here
Place your advertisement here