• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

যে দোয়ায় হালকা হয়ে যাবে মৃত্যুর আজাব

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

একজন মুসলমানের জীবন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সুন্দরভাবে অতিবাহিত করার জন্য অনেক দোয়া রয়েছে। 

প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ তায়ালা আত্নাকে বলেন, ‘বেরোও।’ সে বলে, ‘না আমি স্বেচ্ছায় বেরোব না।’ আল্লাহ বলেন, ‘অনিচ্ছায় হলেও, বেরোও।’ রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- যখন মুমিন-বিশ্বাসী বান্দার রূহ বেরোয় তখন ওর সঙ্গে দু’জন ফেরেশতা দেখা (অর্থাৎ তা গ্রহণ) করে এবং তা নিয়ে দু’জনই ঊর্ধ্বে আরোহন করে। তারপর এর সুগন্ধির কথা উল্লেখ করা হয়। আসমানবাসিরা বলে, ‘পৃথিবী থেকে একটি পবিত্র রূহের আগমন ঘটেছে। হে রূহ! তোমার প্রতি এবং যে দেহ তুমি আবাদ করছিলে, তার প্রতি আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক।’ অনন্তর একজন ফেরেশতা তাকে নিয়ে তার প্রতিপালকের কাছে চলে যায়। তারপর তিনি বলেন, ‘তাকে শেষ সময়ের (অর্থাৎ কেয়ামত না হওয়া পর্যন্ত) জন্য নিয়ে যাও।’

পক্ষান্তরে কাফেরের আত্না যখন বেরোয়, তখন এর দুর্গন্ধ ও অপবিত্রতার কথা উল্লেখ করা হয়। আসমানবাসিরা বলে, ‘পৃথিবী থেকে একটি অপবিত্র রূহের আগমণ ঘটেছে।’ আর এর সম্বন্ধে বলা হয়- ‘শেষ সময় পর্যন্ত রাখবার জন্য তাকে নিয়ে যাও।’ হজরত আজরাঈল (আ.) যখন জান কবজ করতে আসবেন, তখন মৃত্যু পূর্ব মুহুর্তে কষ্ট হবেই। তবে মহান আল্লাহ তায়ালার মমিন বান্দারা সেই কষ্টটা কম পেয়ে থাকেন।

আল্লাহ পাক বলছেন, আল কোরআনে বর্ণিত ছোট্ট এই দোয়াটি পড়লে মৃত্যু আজাব হালকা হয়ে যাবে। দোয়াটিকে আমরা সবাই ‘আয়াতুল কুরসি’ বলেই জানি। নিম্নে আয়াতুল কুরসির আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ দেয়া হলো:

اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ 

বাংলা উচ্চারণ: আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম। (সূরা: আল-বাকারা,  আয়াত:২৫৫)।

অর্থ: আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোনো তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতিত এমন কে আছে যে, তাঁর নিকটে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পেছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতুটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতিত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুরোর তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।’

আয়াতের মর্যাদার কারণ:

এ আয়াতটিতে ১০টি বাক্য রয়েছে। যার প্রত্যেকটি আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি, গুনাবলি বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হয়েছে-

(১) তিনিই আল্লাহ যিনি ব্যতিত ইবাদতের উপযুক্ত আর কোনো ইলাহ নেই
(২) আলহাইয়্যুল কাইয়্যুম- তিনি সদা জীবিত এবং বিদ্যমান
(৩) লা তা’খুজুহু সিনাতুও ওয়ালা নাউম- আল্লাহ তায়ালা তন্দ্রা ও নিন্দ্রা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত
(৪) লাহু মা ফিসসামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্বি- আকাশ এবং জমিনের যা কিছু রয়েছে তার সবাই আল্লাহর মালিকানাধীন
(৫) মানজাল্লাজি...বিইজনিহি- সৃষ্টি কোনো বস্তুই আল্লাহর চেয়ে বড় নয় বিধায় এমন কে আছে যে তাঁর সামনে তাঁর অনুমতি ব্যতিত সুপারিশ করতে পারে?
(৬) ইয়া’লামু… খালফাহুম- মানুষের জন্মের পূর্বে এবং জন্মের পরের যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা জানেন
(৭) ওয়ালা ইউহিতুনা…বিমাশা আ- সমস্ত সৃষ্টির জ্ঞান মিলে একত্রিত হয়ে আল্লাহর জ্ঞানের কোনো একটি অংশ বিশেষকেও পরিবেষ্টিত করতে পারে না
(৮) ওয়াসিআ’… ওয়াল আরদ্বি- তাঁর কুরসি এতো বড় যে, সাত আসমান ও সাত জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে
(৯) ওয়া লা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা- আল্লাহর নিকট এত বৃহৎ দুইটি সৃষ্টি আসমান-জমিনের হেফাজত করা কোনো কঠিন কাজ নয়
(১০) ওয়া হুয়াল আলিয়্যুল আজিম- তিনি অতি উচ্চ এবং অতি মহান।

এই পুরো আয়াতটিই আল্লাহর একত্ববাদ ও মর্যাদার গুণগান বিধায় আল্লাহ এ আয়াতের মধ্যে অনেক ফজিলত রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আয়াতুল কুরসির আমল করার এবং কোরআন অনুযায়ী জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here