• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত তিন মেধাবীর

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

রাব্বী হোসেন, অতুল চন্দ্র বর্ম্মন ও রিফাত আহমেদ মেধা তালিকায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও তা আটকে গেছে চরম আর্থিক দৈন্যতার বেড়াজালে। 

চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা দেয়ার তাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন আজ কাঁচের দেয়ালের মতো ভেঙে পড়েছে। মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। 

নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে মেধা তালিকায় মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ পাওয়া ৪০ জনের মধ্যে এই তিনজনই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। 

রাব্বী হোসেন সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়ার আব্দুর রশিদ ও ফাহমিনা আক্তার লাইলী তৃতীয় সন্তান। বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। পেনসনের টাকায় জোড়াতালি দিয়ে চলে সংসার। রাব্বী ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস’এ ভর্তি পরীক্ষায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন। মা একজন গৃহিনী। 

বড় ছেলে ফরহাদ হোসেন লিমন রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে মাস্টার্স পাস করে চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন। দ্বিতীয় ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন দিনাজপুর আর্দশ কলেজে ইসলামের ইতিহাস অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সংসারে আয় করার মতো আর কেউ নেই। বাবার পেনশন দিয়ে নুন আনতে পান্থা ফুরানোর অবস্থা তাদের সংসারে। 

অতুল চন্দ্র বর্মন পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার সাকোঁয়া ইউপির ছত্র শিকারপুর গ্রামের নব কুমার বর্মন ও বাতাসি রানীর দ্বিতীয় সন্তান। দিনভর খেতে খামারে গতর খাটিয়ে যা জুটে তা দিয়ে কোনোরকমে চলে সংসার। বাবা-মা দু’জনই নিরক্ষর হলেও একমাত্র ছেলে অতুল মেধায় পরিপূর্ণ। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেন এলাকায়। এবারে বগুড়া শজিমেক এ ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় তাদের ঘরে উঁকি দেয় চাঁদের আলো। কিন্তু ভর্তির টাকা যোগান দিতে না পারায় হয়ে গেছে ম্লান। 

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার আদর্শপাড়া গ্রামের আলতাফ হোসেন ও রুবিনা বেগমের ছোট সন্তান রিফাত আহম্মেদ। বাবা মিল চাতালে শ্রম বিক্রি করে যা পায় তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চালিয়ে দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ যোগান দেন। বড় ছেলে ফজলে রাব্বী তোহান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ছোট ছেলে এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে। এবারে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় খুব খুশি। তবে স্বল্প আয়ের দরিদ্র এই শ্রমিক ভর্তির টাকা যোগান দিতে আজ দিশেহারা। ভর্তি হওয়ার টাকা জোগাড় করতে না পারলে রিফাতের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। 

সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহম্মেদ ফারুক জানান, এবার এ কলেজ থেকে শতভাগ পাসসহ ৪০ জন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজন হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানও রয়েছে। এরা অত্যন্ত মেধাবী এবং অসম্ভব পরিশ্রমী। কলেজে পড়ার সময় আমরা তাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছি। এমন প্রতিভা যেন দারিদ্রের কষাঘাতে হারিয়ে না যায়। এসব প্রতিভাকে বিকশিত করতে সমাজের বিত্তবানদের হাত প্রসারিত করার আহবান জানান তিনি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here