• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

ভুয়া মেসেঞ্জার আইডি তৈরি করে বেরোবি শিক্ষককে ফাঁসানোর চেষ্টা!

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

বেগম রোকেয়া বিশ্বিবিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনীম হুমাইদার নামে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভুয়া প্রোফাইল তৈরির মাধ্যমে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল তোফায়েলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই শিক্ষিকা। ভুয়া আইডির মাধ্যমে ভুয়া নোটিশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে জরিপের জন্য টাকা উত্তোলন করে পেশাগত ও ব্যক্তিগত সুনামহানি করা হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তাসনীম হুমাইদার ফেসবুকের প্রোফাইলের ছবি ব্যবহার করে হুবহু তার আইডির মত করে তার আইডির সাথে মেসেঞ্জারে টাকা চাওয়ার একটি ভুয়া কথোপকথনের স্ক্রিনশট তৈরি করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল তোফায়েল। এরপর তোফায়েল একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীকে ফেসবুক সেই ভুয়া স্ক্রিনশট পাঠায় এবং শিক্ষিকা তাসনীম হুমায়দার নাম করে ওই ব্যাচের সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জরিপের কথা বলে ১০০ টাকা করে উত্তোলন করতে বলে। তোফায়েল কাজটি করার জন্য বারবার ওই নারী শিক্ষার্থীকে মুঠোফোনে কল দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে।

অভিযোগপত্রে তাসনীম হুমাইদা জানান, গত ৫ এপ্রিল দুপুর ১টা ২৯ মিনিটে বিভাগের এক ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ ফেসবুকের মেসেঞ্জারের মাধ্যমে তাসনীম হুমাইদাকে জানায় যে, সে তাদের ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাছে কোন একটা সার্ভের কাজে প্রত্যেককে ১০০ টাকা করে দিতে বলেছে এজন্য অপর একজন ক্লাস প্রতিনিধি তাদের ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিকট হতে ইতিমধ্যে ১৫ জনের নিকট থেকে ১০০ টাকা করে তুলেছে। আমি উক্ত শিক্ষার্থীর পুরো বক্তব্য শুনে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি এবং আমার বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস অনুভব করি। আমি মনে করি যে এই ঘটনার মাধ্যমে আমাকে সামাজিকভাবে, পেশাগতভাবে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও ক্ষতি করা হয়েছে এবং আমাকে মারাত্নক কোন বিপদের মধ্যে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর আমি ডিজিটালি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ” 

অভিযোগপত্রে তাসনিম হুমাইদা বলেন, ম্যাজেঞ্জারে বার্তা পাঠানোর ঘটনায় আমি সেই নারী শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তখন সে জানায়, ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী, আবদুলল্গাহ আল তোফায়েল তাকে এই স্ক্রিনশটটি তৈরি করে দিয়েছে এবং পুরো কাজটি কীভাবে করবে সেই নির্দেশনা দিয়েছে। আবদুল্লাহ আল তোফায়েল নামক সেই শিক্ষার্থী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান এর ‘ভোকাল’ হিসেবেই কাজ করে এবং মূলত এই কাজটি করার নির্দেশনা পরোক্ষভাবে তাবিউর রহমানের কাছ থেকেই আসে। কাজটি করতে পারলে পরবর্তীতে তাবিউর রহমানের কোর্সে ভালো মার্কস পাবে, ভালো রেজাল্ট হবে, এ ধরনের কথা বলে তোফায়েল তাকে প্রলুব্ধ করে ও চাপ প্রয়োগ করে।’

আইনের আশ্রয় নিবেন কিনা জানতে চাইলে তাসনীম হুমাইদা বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখে ও নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। কিন্ত, যদি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার না পান তাহলে  বাধ্য হয়ে তাকে আইনের আশ্রয় নিতে হবে বলে জানান তিনি।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক বলেন, পতাকা মামলার দুজন আসামি রয়েছে আমাদের বিভাগে। তাসনীম পতাকা অবমানার বিপক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। তাই তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত কিনা তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খতিয়ে দেখতে হবে। 

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল তোফায়েল বলেন, যে শিক্ষক এই অভিযোগ করেছে মূলত এটা তার নোংরা রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। তিনি আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিউজ করতে বলেন এবং নিউজ না করার জন্য ক্লাস রুম এবং পরীক্ষার হলে নানাভাবে হয়রানি করেছেন। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রোণোদিতভাবে করা হয়েছে। 

স্ক্রিনশটের বিষয়ে কারো সাথে কোনরকম যোগাযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে আবদুল্লাহ আল তোফায়েল জানান, আমি কিছু জানিনা। এটা নিয়ে আমার সাথে কারো কোনরকম কথা হয়নি। এ ব্যাপারে আমি দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেব।

এ ব্যাপারে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের যে ব্যাচের শিক্ষার্থীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেই ব্যাচের একটিও ক্লাস তিনি না নিয়েই ফাইনাল পরীক্ষা শুরু করেছেন। ওই ঘটনাকে ঢাকার জন্য মূলত তিনি আমাকে জড়িয়ে এটা করেছেন। এটা পুরোটাই একটা বিশাল ষরযন্ত্রের অংশ।  

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল, প্রোভিসি সরিফা সালোয়া ডিনা ও ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেনি।

Place your advertisement here
Place your advertisement here