• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

বাইসাইকেল দিয়ে শিখুন নিউটনের তিনটি গতিসূত্র

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

চলন্ত বাইসাইকেলের তুলনায় বাইসাইকেলে প্রথম প্যাডেল মারতে কষ্ট বেশি হয় কেন? কিসের প্রভাবে বাইসাইকেল সামনের দিকে এগিয়ে যায়? কেন তা শুধু সামনের দিকেই আগায়, পেছনে বা পাশের দিকে নয় কেন? এই প্রশ্নগুলো কখনো মনে জন্মেছে? সম্ভবত না। এরকম আজব প্রশ্ন কারোর মাথায়ই আসার কথা না। আসলে সপ্তদশ শতাব্দীতে স্যার আইজ্যাক নিউটন তার গতির সূত্রগুলো প্রদানের আগে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর করাও সম্ভব ছিলো না। নিউটনের স্বীকার্যকে সহজ করে বললে, কোনো বস্তু যা করছে তা করে যেতেই পছন্দ করে! তাই যখন আপনার বাইসাইকেলটি থেমে আছে, তখন সেটি থেমে থাকতেই ভালোবাসে। আবার যখন এটি চলছে, তখন চলাই হয়ে যায় এর ধর্ম!

বাহ্যিক কোনো বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে ও গতিশীল বস্তু তার গতি অক্ষুণ্ন রেখে চলতে থাকবে, এটিই যে নিউটনের গতির প্রথম সূত্র! পদার্থবিজ্ঞানীরা একে বলেন 'জড়তার সূত্র'। ভালোভাবে বললে, কোনো চলমান বস্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার গতি অথবা দিক পরিবর্তন করতে পারে না। আবার কোনো স্থির বস্তু সহসাই গতিশীল হবে না। এই যে কোনো বস্তু যে অবস্থায় আছে সে অবস্থাতেই থাকতে চাওয়ার প্রবণতা, এটির নামই জড়তা। সুতরাং, একটি স্থির বাইসাইকেলকে গতিশীল করতে হলে আগে তার জড়তাকে অতিক্রম করতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো, এই 'জড়তা'কে কীভাবে অতিক্রম করা সম্ভব? এর উত্তর দিয়েছে নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র!

নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রের গাণিতিক রূপ থেকে পাই, বল হলো ভর ও ত্বরণের গুণফলের সমান। তাই কোনো স্থির বস্তুকে গতি দিতে হলে অথবা কোনো গতিশীল বস্তুর গতির পরিবর্তন ঘটাতে চাইলে বল প্রয়োগ আবশ্যক। বল যত বেশি হবে, বস্তুর ত্বরণও তত বেশি হবে। আবার আপনার বাইসেকেলের ভর যত বেশি হবে কাঙ্ক্ষিত ত্বরণ পেতে আপনাকে তত বেশি জোর দিয়ে প্যাডেল মারতে হবে এবং এই যে আপনি সাইকেলের প্যাডেল উপরে নিচে পা দিয়ে চেপে বল প্রয়োগ করছেন, এই 'বল'ই আপনাকে নিউটনের জড়তার সূত্র অতিক্রম করতে সাহায্য করে। প্যাডেলে যত জোরে চাপ পড়বে, সাইকেলের উপর প্রযুক্ত বল তত বেশি হবে। সাইকেল তত বেশি ত্বরণ পাবে, অর্থাৎ সাইকেলের 'স্পিড' তত বাড়তে থাকবে। এখন শেষ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পালা। সাইকেল শুধু সামনের দিকেই চলতে থাকে কেন? পেছনে বা পাশে কেন নয়?

বাইসাইকেল সামনে চলার সময় এর চাকাগুলো ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরে থাকে। প্রতিবার এর টায়ারের যে অংশ রাস্তার সংস্পর্শে আসে, এটি রাস্তার উপর পেছন দিকে বল প্রয়োগ করে। একটু কল্পনা করে দেখুন! তাই রাস্তাও সাইকেলের উপর সমান বল প্রয়োগ করে; কিন্তু সামনের দিকে। এ কারণেই সাইকেল সামনের দিকে আগায়। তো, কখনো যদি সাইকেলের চাকাকে এন্টি-ক্লকওয়াইজ ঘোরানো যায়, সাইকেল অবশ্যই পেছনের দিকে চলবে! আরো একটি প্রশ্ন হয়তো আপনার মনে জাগতে পারে- আমার সাইকেলটা কি দোষ করলো ভাই! পৃথিবীটা সামনের দিকে আগাক না, আমার সাইকেল তার জায়গাতেই থাকুক! এর উত্তরটাও সহজ- পৃথিবীর ভর আপনার সাইকেলের তুলনায় কয়েক লাখ গুণ বেশি, তার কেন ঠেকা পড়বে আপনার সাইকেলের দেয়া বল এর কারণে এগিয়ে যাবার!

নিউটনের তৃতীয় সূত্রটির মতে, প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান। একটা বাউন্সি বলের কথাই ধরুন না! বলটি উপর থেকে মেঝেতে ফেলুন। তখন মেঝের উপর এটি একটি পশ্চাৎমুখী বল প্রয়োগ করবে। এর নাম 'ক্রিয়া'। বলটি মেঝের উপর যে বল প্রয়োগ করে, মেঝেটিও বলের উপরে তার বিপরীত দিকে অর্থাৎ উপরের দিকে সমান 'প্রতিক্রিয়া' প্রদান করবে। এ কারণেই বলটি পুনরায় আপনার হাতে ফিরে আসে। এভাবেই প্রতিবার বল বাউন্স করার পেছনে এক জোড়া ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ভূমিকা পালন করে। বাইসাইকেলের ক্ষেত্রেও এ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বলই কাজ করে, তবে একটু জটিল উপায়ে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here