• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

বয়ঃসন্ধিতে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে বাবা মায়ের সম্পর্ক

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০১৯  

Find us in facebook

Find us in facebook

'বয়ঃসন্ধিক্ষণ' জীবন প্রবাহের এমন একটি পর্যায়, যে পর্যায়েকে বলা হয় পরিক্রমণ কাল। অর্থাৎ, সেখানে শৈশবের শেষ এবং তারুণ্যের প্রথম পর্যায়ের মাঝামাঝি অবস্থা বিরাজ করে।

এ সময় ছেলে-মেয়েদের মধ্যে শিশুসুলভ আচরণ বিরাজ করে, অন্যদিকে তারুণ্যের বৈশিষ্ট্যগুলো বিকশিত হতে শুরু করে। এ সময় দৈহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে শিশুরা যে পরিপক্কতা অর্জন করে তার স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান উদযাপন করার কথা প্রচলিত।

এই বয়সে আয়োজিত বিভিন্ন পরীক্ষায় সাফল্যজনকভাবে উত্তীর্ণ হলে ছেলে-মেয়েকে পূর্ণ বয়সের অধিকার ও বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় এবং কিশোর-কিশোরীরা সে বয়সে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবে বলে আশা করা হয়। এক্ষেত্রে বাবা-মাকে পালন করতে হয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

এ বয়সে ছেলে-মেয়েদের চিন্তাভাবনা ও মেজাজের স্কেল সবসময় এক থাকে না। কখনো তারা আলোকিত, কখনো বিমর্ষ, কখনো বা পরিব্যপ্ত হয় এক ধরনের অস্থিরতায়। এই অস্থিরতা তাকে বিভিন্নভাবে আলোড়িত করে তোলে। পরিবারের সদস্যদের কথা শোনা, তাদের মান্য করার ইচ্ছাও প্রচ্ছন্ন থাকে।

এ বয়সে সমবয়সীদের প্রতি আকর্ষণ থাকে। প্রত্যেকে চায় নিজস্ব কিছু চেতনার আলোকে জগত ও জীবনকে উপলব্ধি করতে। এই বয়সে তারা স্বাধীনভাবে চলতে চায়। এই স্বাধীন ভাবে চলা ফেরার পথে যদি বাবা-মা বাঁধা দেয় তাহলে ছেলেমেয়েরা বিপথে যায়, এমনকি অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। আবার পরিবারে বাবা-মায়ের মধ্যে অশান্তি থাকলে ছেলে-মেয়েরা বাইরে গিয়ে শান্তি খুঁজতে চেষ্টা করে।

এসময় শারীরিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত পরিবর্তন হয় মানসিক অবস্থার। অর্থাৎ, এসময় আবেগ কাজ করে প্রতিটি মুহূর্তে। তবে কারো আবেগ অন্তর্মুখী আবার কারো বহির্মুখী।

একগুঁয়েমি,স্বেচ্ছাচারিতা ও আত্মনির্ভরশীলতার জন্য নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াস আত্মকেন্দ্রিকতায় জীবন হয়ে ওঠে অধিকতর জটিল। কিশোর-কিশোরীরা সাধারণত বিরোধিতা পছন্দ করে না। কারো প্রভুত্ব, শাসন এ সময় তাদের সহ্য হয় না। আরোপিত বা চাপিয়ে দেয়া কোনো কিছু তাদের পক্ষে গ্রহণ করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। হঠাৎ করেই যে কোনো কথাতেই বিরক্ত বোধ করে।

বয়ঃসন্ধিতে এসে বাবা-মা যদি সন্তানের স্বনির্ভরতা ও স্বাধীনতা লাভের বাসনাকে দমিয়ে রাখেন, তবে তা সুখকর হয় না। সন্তানের মানসিকতা গড়ে তোলা এবং তাদের বড় হবার পেছনে বাবা-মা দুই জনেরই রয়েছে বিরাট ভূমিকা। বড় হবার পথে প্রতিটি ছেলে-মেয়ের বিহ্বলতা থাকে।

অহংকার, জেদ আর খামখেয়ালিপনায় ভরা শিশুরা সঙ্গত আচরণের নেপথ্যের কারণগুলো চিহ্নিত করে যদি বাবা-মা সমস্যাগুলো সমাধান করেন তাহলে সন্তান হবে আদর্শ সন্তান, বাবা মা হবেন গর্বিত। সন্দেহ নয়, জেরা নয়,শাসন বন্ধুর মতো হলেই বাবা-মায়ের প্রতি ছেলে-মেয়েদের বিদ্বেষ থাকবে না।

ধৈর্য ও উদারতার মানসিকতা নিয়ে সঙ্গ দিয়ে তাদেরকে বুঝতে হবে। কর্কশ ও কঠোর আদেশ নয়, শান্তকণ্ঠে শাসন, হুকুম নয় অনুরোধ ছেলেমেয়েদের অব্যর্থ ওষুধ। এ সময়ে ছেলেমেয়েদের মতামত ও বিচার-বিবেচনার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের কারণে তারা আলোকিত মানুষরূপে গড়ে উঠবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here