• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook

বদরগঞ্জে চতুর্থবার পুত্র সন্তান জন্ম হওয়ায় হত্যা করলেন বাবা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুরের বদরগঞ্জে চতুর্থ সন্তানও পুত্র হওয়ায় ৪৮ দিনের মাথায় ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুটিকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যান বাবা। পরে হত্যার পর বাড়ির পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেন তিন। সোমবার (৮ মার্চ) রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা গোপীনাথপুর ইউনিয়নের আরাজী দিলালপুর বানিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্বামী হামিদুরের আশা ছিল পরপর তিন ‍পুত্র সন্তান জন্মের পর এবারেরটি কন্যা সন্তান হবে। কিন্তু স্ত্রী ফরিদা বেগম হাসপাতালে চতুর্থ সন্তানটিও ছেলে সন্তানের জন্ম দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন বাবা হামিদুর রহমান।

জন্মের ৪৮ দিনের মাথায় ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুটিকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় বাবা হামিদুর। পরে হত্যার পর বাড়ির পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেন তিনি। এঘটনায় এলাকায় প্রচার চালান জিন বা ভুতে তুলে নিয়ে তার সন্তানকে হত্যা করেছে। মর্মান্তিক ঘটনাটি পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে বাবা ও মাকে আটক করেন। পরে শিশুটির হত্যার আসল রহস্য উন্মোচন হয়।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রংপুরের বদরগঞ্জ আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় শিশুটির বাবা হামিদুর রহমান। এসময় তিনি নিজের সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় শিশুটির দাদা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় ছেলে হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে নাতিকে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেন।

স্বজন ও মামলা সুত্রে জানা যায়, শিশুটির মা ফরিদা বেগম রোববার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ঘুমন্ত শিশু সুইম বাবুকে ঘরে রেখে কাজের জন্য কিছু সময়ে বাইরে যান। ফিরে এসে দেখেন ঘর অন্ধকার। কিন্তু শিশুটি নেই। পরে হামিদুর রহমানকে খবর দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিখোঁজের বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় পুলিশকে। সারারাত কোথাও শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরের দিন সোমবার ভোরের দিকে বাড়ির পাশে একটি ডোবার কিনারে শিশুটির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।

পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ওই সময় শিশুটির মা ফরিদা বেগম ও বাবা হামিদুর রহমানকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।

এক পর্যায়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হামিদুর নিজের সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

সন্তান হারিয়ে ফরিদা বেগম বলেন, ‘আগের তিন ছেলে জন্ম হলেও আমি পরেরটি বদল করতে রাজি হইনি। কিন্তু আমার স্বামী চতুর্থ ছেলেকে যে গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করবে তা ধারণা ছিল না।’

এদিকে বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মেয়ে সন্তানের আশায় পর পর চারটি ছেলের জন্ম হওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল শিশুটির বাবা হামিদুর। সিজারের সময় রংপুরে মেডিকেলে অপর এক প্রসূতি মায়ের সঙ্গে হামিদুর সন্তান বদলের মৌখিক চুক্তি করেন। ওই মহিলার আগের তিন জমজ কন্যার পর চতুর্থটিও মেয়ে জন্ম হয়। পরে তিনি তার কন্যা সন্তানটি বদল করতে চাননি। এতে মনে মনে ক্ষুব্ধ ছিল ঘাতক হামিদুর। আদালতে তিনি সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here