• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

প্লাস্টিক পণ্য রফতানির টার্গেট ৮৫ হাজার কোটি টাকা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশের চাহিদা মিটিয়ে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে ৮৫ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী রফতানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান এ শিল্পখাত ১ বিলিয়ন ডলারের প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী রফতানি করছে বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। দেশের প্রতিটি মানুষ গড়ে ৫-৭ কেজি প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করছে। কিন্তু দশ বছর পর তা ৭ গুণ বেড়ে দাঁড়াবে ৩৫-৪০ কেজিতে। এ কারণে প্লাস্টিক পণ্যের গুণগত মান বাড়ানো এবং দক্ষ জনবল গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। 

তিনি বলেন, শুরুতে গার্মেন্টস পণ্যও সীমিত আকারে রফতানি হতো এখন পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রফতানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছে। প্লাস্টিক পণ্যের রফতানি বাড়াতে সরকার সব ধরনের নীতিগত সহায়তা দেবে।

শনিবার ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ পানগাঁও কনটেইনার পোর্ট রোডে প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ক্যাম্পাস উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এসব কথা বলেন। 


তিনি বলেন, দক্ষ জনবল তৈরি এবং আন্তর্জাতিক মানের টেস্টিং ল্যাব স্থাপনসহ এ শিল্পখাত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বিপেট (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টেকনোলজি (বিআইপিইটি)। এ লক্ষ্যে সরকার বিপেটের অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থ সহায়তাসহ সব ধরনের নীতিগত সহায়তা দেবে। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন, সংগঠনটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ, সাবেক প্রেসিডেন্ট এস এম কামাল উদ্দিন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান চৌধুরী প্রমুখ।

টিপু মুনশি বলেন, প্লাস্টিক শিল্প বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় খাত, বিশ্বে প্লাস্টিক পণ্যের বিশাল বাজার রয়েছে। পণ্যের মান, ডিজাইন ও দক্ষতা দিয়ে বিশ্ববাজার দখল করতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ শিল্প খাত উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। এ ইনস্টিটিউট দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এক সময় বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে প্লাস্টিক পণ্য আমদানি করত। আজ বাংলাদেশ এসব প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করছে। 

তিনি বলেন, সরকার এখন মুক্তবাণিজ্য ও অগ্রাধিকার বাণিজ্যচুক্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ কারণে বিশ্ব বাজারে রফতানি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে। পণ্যের গুণগতমান বজায় থাকলে আন্তর্জাতিক বাজার ধরা সম্ভব। মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, বিপেটের মাধ্যমে প্লাস্টিক শিল্প খাতের দক্ষ জনবল তৈরি হবে। সারা বিশ্বে প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। সিঙ্গাপুরে মাথাপিছু ১৩০ কেজি প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার হয়, সেখানে বাংলাদেশে হচ্ছে মাত্র ৫-৭ কেজি। কিন্তু আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ মাথাপিছু ৩৫ কেজি প্লাস্টিকের চাহিদা তৈরি হবে। এজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন। 

তিনি বলেন, প্লাস্টিক শিল্প খাতের ৫ হাজার কারখানায় বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আগামীতে আরও কর্মসংস্থান বাড়াতে এখাতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। এজন্য সরকারের নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বিপেটের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে আরও ২৫ কোটি টাকা প্রয়োজন। সংগঠনের পক্ষ থেকে টাকা চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এই অর্থের বরাদ্দ পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে রফতানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে প্লাস্টিক শিল্প খাত।

প্রসঙ্গত, প্লাস্টিক শিল্পের উন্নয়নে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের সঙ্কট দীর্ঘদিনের। এই সঙ্কটের সমাধানে সরকারের সহায়তায় উদ্যোক্তারা প্রায় আট বছর আগে বিপেট (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টেকনোলজি-বিআইপিইটি) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু করোনাকালীন সঙ্কটের কারণে বেশকিছু দিন থমকে ছিল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্লাস্টিক খাতের অবদান প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। প্লাস্টিকের তৈরি প্রচ্ছন্ন রফতানি পণ্যের পরিমাণ ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি, এ শিল্প খাতে দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে বর্তমানে পাঁচ হাজারেরও বেশি শিল্প গড়ে উঠেছে। এর অধিকাংশ বা সাড়ে তিন হাজারের মতো ক্ষুদ্র, প্রায় দেড় হাজার হলো মাঝারি। বড় শিল্প-কারখানা আছে অর্ধশত। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here