• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

পুলিশের অভিনব কৌশলে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

সাধারণত সিনেমা কিংবা থ্রিলার সিরিজে দেখতে পাই অপরাধীদের বোকা বানিয়ে পুলিশের গ্রেফতার করার অভিনব কৌশল। সেই দৃশ্যে পুলিশের বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ, বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল এবং সাহসিকতা দেখে আমাদের কাছে মনে হয় বাস্তবে এর প্রয়োগ অসম্ভব। তবে সিনেমা কিংবা নাটকের মতো না হলেও অনেকটাই সেরকম অভিনব কৌশলের আশ্রয় নিতে দেখা গেল লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে। দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাদক ব্যবসা করে আসা মোস্তাক শেখ এবারে নিজেই ধরা খেলেন গোয়েন্দা পুলিশের ফাঁদে।

রোববার বিকেলে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মকবুল হোসেন সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানা গেছে, জেলা শহরের জনবহুল এলাকা বিডিআর হাটখোলার চিহ্নিত প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী হলেন মোস্তাক শেখ। প্রায় দশ বছর ধরে গাঁজা বিক্রি করছেন বাড়ি ও এর সামনে থাকা একটি দোকানে। কিন্তু দীর্ঘ এই সময়ে একবারও পুলিশের হাতে আটক হতে হয়নি মোস্তাক শেখকে।

স্থানীয়দের মতে প্রতিদিন প্রায় কমপক্ষে দুই থেকে তিনশ জনের মতো মাদকসেবী যাওয়া আসা করতেন তার বাড়ি ও দোকানে। এলাকার সচেতন লোকজন বিভিন্ন সময়ে তার নাম পুলিশকে জানালেও হাতে নাতে আটক করা সম্ভব হয়নি মোস্তাককে। কেননা রাস্তার সঙ্গে তার বাড়ি ও দোকান থাকায় তিনি খুব সহজেই দেখে ফেলতেন সবকিছু।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোস্তাককে মাদকসহ আটক করতে উদ্যোগ নেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (লালমনিরহাট সদর ও আদিতমারী) ইন্সপেক্টর রায়হান আলী। তিনি একটি চৌকস দল নিয়ে শনিবার রাতে অভিযানে বের হন।

ইন্সপেক্টর রায়হান আলী সঙ্গে একজন অফিসার নিয়ে নিজেই মাথায় মাফলার পেঁচিয়ে গলায় গিটার ঝুলিয়ে মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ির রাস্তায় অবস্থান নেন। গিটারে এলোমেলো বাজনার সঙ্গে খাপছাড়া গলায় গান গাইতে থাকেন। ঠিক যেন কোনো বড়লোকের বখে যাওয়া ধনীর দুলালের মতো।

এভাবেই ধীরে ধীরে মাদক ব্যবসায়ী মোস্তাকের বাড়ির সামনে পৌঁছালে দেখা যায় দুইজন মাদকসেবী মোস্তাকের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ির গেট দিয়ে চলে যান। কিন্তু মোস্তাক বাসায় না ঢুকে গিটারের দিকে নজর দেন। মোস্তাককে দেখে গিটার বাজাতে বাজাতে ইন্সপেক্টর চুপিসারে বললেন, ‘আছে নাকি মামা? মোস্তাক ইসারায় ঢুকতে বলে বাড়িতে। গিটার থামিয়ে ঢুকে যান তারা। মোস্তাক জানালেন, এখানেও খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তারা চাইলে এখানেও খেতে পারেন। এতে তাদের বাড়তি ৫০/১০০ খরচ হবে।

সেখানেই খাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করলে কোমর থেকে মোস্তাক পুড়িয়া গাঁজা বের করেন। ইন্সপেক্টর বলেন, এক পুড়িয়া হবে না তার কাছে যতোগুলো আছে তা বের করতে বলা হয়। এ সময় কিছুটা টের পেয়ে বলেন, আর নাই। কথোপকথনের মাঝেই বাকি পুলিশ সদস্যরা ঘিরে ফেলে তার বাড়ি। এরপর প্রতিবেশীদের সামনে তল্লাশি চালিয়ে পুরোনো ইলেকট্রিক ফ্যানের ভিতরে লুকিয়ে রাখা দুইশ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয়।

গাঁজা ও ইয়াবা খাওয়ার বিপুল উপকরণ উদ্ধার হয়। মোস্তাক শুধু গাঁজা বিক্রি করেন বলে স্বীকার করেন। 

এ বিষয়ে ইন্সপেক্টর রায়হান আলী বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের কাজ হচ্ছে সবর্দা ব্যতিক্রম ও অভিনব। যুগের সঙ্গে অপরাধীরা কৌশল পরিবর্তন করায় তাদের ধরতে নিত্য-নতুন কৌশল প্রয়োগের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মাদক পরিমাণে কতটুকু উদ্ধার হল সেটা মুখ্য না আমরা একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে ধরেছি যে নিজেই প্রতিদিন দুই শতাধিক মানুষের হাতে মাদক তুলে দিয়ে আসছিল।

এসপি আবিদা সুলতানা জানান, ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করতে আসিনি। আন্তরিক হয়ে সবাই মিলে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। জেলার সর্বত্র গোয়েন্দা পুলিশকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে মাঠে নামানো হয়েছে এবং তারা বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারী করছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here