নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে বিএনপি

একদিকে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া, অন্যদিকে ফেরারি আসামি হয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এমন অবস্থায় নেতৃত্বের সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিএনপি। 

সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতে আবদ্ধ বিএনপি। এছাড়া দুর্নীতি ও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে আজ এ দলটি জনগণের কাছ থেকে ছিটকে পড়েছে। 

তারা বলেন, বিএনপিতে অনেক মেধাবী ও যোগ্য নেতা আছে। যাদের নেতৃত্বে বিএনপি পুনরুজ্জীবিত হতে পারতো। কিন্তু পরিবারতান্ত্রিক হাওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। ফেরারি আসামির নেতৃত্বে চলতে হচ্ছে বিএনপিকে।

তারা আরো বলেন, বিএনপির এ অবস্থার অন্যতম কারণ হলো তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার দুর্নীতি। ২০০১-০৬ মেয়াদে তারেক রহমানের হাওয়া ভবন বিএনপির জন্য ভয়ংকর অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২০১৫ সালের লাগাতার ৯২ দিনের অবরোধের নামে জামায়াত-বিএনপির ক্যাডারবাহিনীর জ্বালাও-পোড়াও কর্মকাণ্ড। যা ক্রমাগতভাবে বিএনপিকে নাজুক করে দিয়েছে।  

২০০১-০৬ সালে অলিখিতভাবে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তারেক রহমান। সে সময় তিনি এমন কোন কাজ করেননি, যাতে দেশ-বিদেশে সামান্য হলেও দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পায়। বরং দুর্নীতি করে দেশের সুনাম নষ্ট করেন তিনি। এমনকি যুদ্ধাপরাধী দল একাত্তরের ঘাতক জামায়াতের সঙ্গে জোট বেঁধে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার পথ বেছে নিয়েছিলেন।

এছাড়া ২০০৪ সালের ১ এপ্রিলে সংগঠিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলা ও জার্মানির সিমেন্স কোম্পানি থেকে ঘুষ নেয়ার মামলায় যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত হয়ে তারেক রহমান লন্ডনে পলাতক আছেন। তিনি আদালতের ভাষায় ফেরারি আসামি। কিন্তু তাকে দিয়েই দল চালাতে হচ্ছে বিএনপিকে। 

এ বিষয়ে বিএনপিপন্থী একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে একজনকে অস্থায়ীভাবে দলের দায়িত্ব দিলে ভালো হতো। 

তিনি আরো বলেন, লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে বিএনপির মত দল চালানো সম্ভব নয়। অনলাইনে সবকিছু করা গেলেও দলের নেতৃত্ব দেয়া যায় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সময়ের প্রভাবশালী ও শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের বড়ই সংকট চলছে। শুধু এ কারণেই কোনো আন্দোলনে সফল হচ্ছে না তারা। বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। এর ফলে বিএনপিতে বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, তারেক রহমান দলের নেতৃত্বে আসার পর থেকেই বিএনপি কোণঠাসা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। দেশের রাজনীতি বা হালচাল তিনি ভালো জানেন না। স্কাইপের মাধ্যমে দেশের পুরো চিত্র জানা যায় না। তাই এভাবে দল চালানোও সম্ভব নয়।