• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

নীল তিমির বিশালতা!

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

সবচেয়ে বড় ডাইনোসরের দ্বিগুন অথবা চল্লিশটি আফ্রিকান হাতির সমান কোনো প্রাণীর নাম বলতে পারবেন? প্রাণীটি এতটাই বিশাল যে মাঝারি আকারের একটি কুকুর সহজেই তার ধমনী দিয়ে হেঁটে যেতে পারবে! নিঃসন্দেহে পৃথিবীতে বাস করা সবচেয়ে বৃহৎ প্রাণীর নামই বলছি। হ্যাঁ, এরকম সাইজ শুধু একটি প্রাণীরই আছে আর সেটা হচ্ছে ‘নীল তিমি’! তিমির বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণী নীল তিমি। চলুন নীল তিমি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন-পৃথিবীতে এ যাবৎকাল যত প্রাণী এসেছে বা এখনো আছে তাদের মধ্যে নীল তিমি সবচেয়ে দীর্ঘকায় প্রাণী। নীল তিমি দৈর্ঘ্যে ২৫ থেকে ৩২ মিটার পর্যন্ত লম্বা এবং ওজনে ১৪০ টন পর্যন্ত হয়! এর জিহ্বার ওজনই একটি হাতির ওজনের প্রায় সমান হতে পারে! নীল তিমি স্তন্যপায়ী হলেও পুরো জীবন সাগরেই কাটিয়ে দেয়। নাম শুনে মনে হবে, এটা সম্পূর্ণ নীল বলেই হয়তো নীল তিমি বলা হয়। পানির নিচে একে আসলেই নীল মনে হয়। কিন্তু পানির ওপরে যখন ভেসে ওঠে, তখন এর শরীরে বিবর্ণ নীল রঙের ছোপ দেখা যায়। নীল তিমিরা জীবনের বেশিরভাগ সময়ই আর্কটিক ও অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের মহাসাগরে কাটায়। এখানে ওদের প্রধান খাদ্য বিভিন্ন ক্রিল (চিংড়ি মাছ জাতীয়) প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। একটি পূর্ণবয়স্ক নীলতিমি দিনে গড়ে প্রায় ৮ টন ক্রিল খেতে পারে।অত্যন্ত সুন্দর আর বুদ্ধিমান জীব এই নীলতিমি। মাছের মতো ফুলকা দিয়ে নিঃশ্বাস নেয় না, আবার ডিমও পাড়ে না। শ্বাস-প্রশ্বাস চলে মানুষের মতোই ফুসফুস দিয়ে। আর শ্বাসও নেয় বাতাস থেকে। অথচ ওরা থাকে সাগরের পানিতে! উষ্ণ রক্তের এই প্রাণীর হৃৎপিন্ডে চারটি প্রকোষ্ঠ থাকে ঠিক মানুষের মতোই। অত্যন্ত শান্তশিষ্ট এবং সুন্দর নীল তিমির ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, একমাত্র মানুষ ছাড়া তার আর কোনো শত্রু নেই! সাগরে মানুষের ইচ্ছাকৃত এবং অনিচ্ছাকৃত পানি দূষণের কারণে আইইউসিএনের মতে পৃথিবীতে মোট নীলতিমির সংখ্যা বর্তমানে ২৫ হাজারের বেশি নয়! তিমিরা সরাসরি বাচ্চার জন্ম দেয় আর সেসব বাচ্চা মায়ের দুধ খেয়ে বড় হয়। জন্মের সময়ই নীল তিমির বাচ্চারা সাইজে হয় প্রায় হাতির মতো, ওজন দাঁড়ায় প্রায় ২৭ টন, দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৭ ফুট! জীবনের সর্বাবস্থায় কি বিশালতা এই প্রাণীর, ভাবা যায়?প্রাণীজগতে প্রাণীদের মধ্যে নীল তিমি সবচেয়ে জোরে শব্দ করতে পারে। প্রাণীদের মাঝে নীলতিমির হুইসেলের শব্দ সবচেয়ে তীব্র প্রায় ১৮৮ ডেসিবল। তাছাড়া সবচেয়ে বেশি ভোজনের জন্য প্রাণীজগতের শীর্ষে রয়েছে নীলতিমি। এরা প্রতি গ্রাসে তিন মিলিয়ন সামুদ্রিক ক্ষুদে প্রাণী গিলে ফেললে সক্ষম। ডিসকভারিতে কিংবা অ্যানিমেল প্ল্যানেট চ্যানেলে যখন তিমি বিষয়ক কোনো প্রতিবেদন দেখেন তখন খেয়াল করলে দেখতে পাবেন নীলতিমি কিছুক্ষণ পরপর পানির ওপরে উঠে আসছে। তারা একবার নিঃশ্বাস নিয়ে পানির নিচে প্রায় ৩০ মিনিট একটানা থাকতে পারে। মজার বিষয় হচ্ছে, এর কোনো দাঁত নেই। তবে মুখের ভেতরে ওপরের চোয়ালে ব্যালিন রয়েছে।এরা অনেক ছোট প্রাণী খায়। ফলে দাঁত প্রয়োজন হয় না। এদের এক চোয়ালে ৭৯০টির মতো ব্যালিন থাকে। আকারে বিশাল হলেও নীল তিমি সাগরে দিব্যি সাঁতার কেটে বেড়ায়, ভেসে থাকে এবং বিশাল দেহ নিয়ে লাফিয়ে খেলাও করে। শব্দ করে নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান করে। এমনকি গানও গায়। তিমি কেন গান গায়, সে আরেক রহস্যের জাল। দাঁতাল তিমিরা অন্য তিমিদের চেয়ে বেশ জোরে শিষ দেয়ার মতো করে গান গায় ওদের সঙ্গীকে কাছে ডাকতে অথবা বাচ্চাদের ঠিক পথে চলার কথা বলতে। অবশ্য ভবঘুরের মতো শিকারের সন্ধানে ঘোরার সময়ও দাঁতাল তিমিরা গান গায় বলে জানা গেছে। তবে অন্য তিমিরা গান গায় খুব নিচু স্বরে, কোমল করে। তবে নীল তিমি যত জোরে শব্দ করতে পারে অত জোরে পৃথিবীর আর কোনো প্রাণী শব্দ করতে পারে না। সাগরে নীলতিমির কণ্ঠস্বর ৫০০ কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যায়। পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘজীবী প্রাণী নীলও গড়ে ৭০ থেকে ৯০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here