• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook

নির্মাণ হচ্ছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

অবশেষে নির্মাণ হচ্ছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর। শিগগিরই এ জন্য বড় দুটি জেটি নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশা করছে সরকার। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ সংক্রান্ত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের কার্গোহ্যান্ডলিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের চাহিদা মেটানো এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুত বন্দর সেবা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে।

২০২৬ সালের শেষ নাগাদ চালু হবে ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হতে যাওয়া বন্দরটি। 
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ধলঘাট এলাকায় ‘মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন’ প্রকল্পের জন্য ১৩ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা ঋণ দেবে জাপানভিত্তিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা। আর দুই হাজার ৭৪০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল ও বাকি টাকা অন্যান্য সংস্থা থেকে নেয়া হবে। 

ডিপিপি অনুসারে, প্রকল্পের আওতায় মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এতে ১৬ মিটার গভীরতার ৮ হাজার টিইইউ কন্টেইনারবাহী জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ দশমিক ৫ মিটারের বেশি গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে না। এর ফলে মাদার ভেসেলগুলো বন্দরের জেটিতে আসতে পারে না। ফিডার জাহাজে করে কন্টেইনার আনা-নেয়া করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুসারে, প্রতিদিন তিন হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টিইইউ আমদানি পণ্য কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরে একটি জাহাজ সর্বোচ্চ ২০০০ টিইইউ কন্টেইনার নিয়ে ভিড়তে পারে। অথচ কলম্বো, ভারত, চেন্নাই, করাচির বন্দরে এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ ভিড়তে পারে। এ বিবেচনায় মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর অধিক হারে ড্রাফটের জাহাজের সমুদ্রবন্দর কন্টেইনার পরিবহনে বাংলাদেশের জন্য উত্তম বিকল্প হবে।

নৌ-পরিবহন সচিব আবদুস সামাদ বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দর দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পথে মাইলফলক হবে নতুন এ বন্দর। প্রকল্পটির বিষয়ে সরাসরি তদারকি করছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ফাস্টট্র্যাক মনিটরিং কমিটি। এই প্রকল্প দ্রুত ও সফলভাবে বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করি।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় দুটি টার্মিনাল নির্মাণের বাইরেও কার্গো হ্যান্ডেলিং যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হবে। এছাড়া প্রাসঙ্গিক সরঞ্জাম ও সংযোগ সড়ক তৈরি করা হবে। চলতি বছরে প্রকল্প অনুমোদন পেলে ২০২৬ সাল নাগাদ কাজ শেষ হবে।

ডিপিপি অনুসারে, প্রকল্পের আওতায় দুটি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন, একটি মাল্টি গ্যান্ট্রি ক্রেন, ছয়টি আরটিজি, দুটি রিচ স্ট্যাকার ও ১২টি ইয়ার্ড চেসিস ট্রাক্টর কেনা হবে। একইসঙ্গে প্রাসঙ্গিক সুবিধার জন্য তিনটি টাগবোট, একটি পাইলট বোট, একটি সার্ভে বোট কেনা হবে। এছাড়া ২৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার চার লেন সড়কও নির্মাণ করা হবে।

দেশের আমদানি-রফতানি বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের পরিমাণও দ্রুত বাড়ছে। এমনকি চট্টগ্রাম বন্দর সক্ষমতার বাইরে গিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম করছে। তাই ব্যাপক সংখ্যক জাহাজ ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য আরো একটি সমুদ্র বন্দরের বিকল্প নেই। 

এ বন্দর চালু হলে একদিকে দেশের ক্রমবর্ধমান আমদানি-রফতানির হ্যান্ডেলিং বাড়বে, অন্যদিকে চাপ কমবে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর। এ ধরনের একটি গভীর সমুদ্রবন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সহায়ক হবে।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মাতারবাড়ীতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি এবং জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের জন্য ১৬ মিটার গভীর ও ২৫০ মিটার চওড়া যে চ্যানেল ও টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে, সেই একই চ্যানেল ব্যবহার করে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের সম্ভাবনা দেখা দেয়। এ চ্যানেলের ওপর নির্ভর করেই গড়ে তোলা হবে গভীর সমুদ্রবন্দর। এতে নতুন করে কোনো চ্যানেল করতে হবে না।

Place your advertisement here
Place your advertisement here