• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

দিনাজপুরে শিটি মরিচের ভালো ফলন

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

এবার দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী ‘শিটি মরিচ’ এর চাষাবাদে ঘুরছে চাষিদের ভাগ্য। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন হয়েছে এ মরিচের। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ক্ষেত থেকেই ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেনি এ মরিচ। চাষিরা দামও পাচ্ছেন ভালো।

এ মরিচ চাষাবাদের জন্যে বিখ্যাত দিনাজপুরের বিরল উপজেলা। দৃষ্টিনন্দিত এ মরিচের স্থানীয় নাম ‘বিরলের শিটি মরিচ’। এ মরিচ দেখতেই সুন্দর নয়, এর ঝালের খ্যাতিও রয়েছে। এ মরিচ দেখতে চিকন ও লম্বা ধরনের। স্বাদ, রঙ ও সৌন্দর্য্যে দেশের যেকোনো এলাকার মরিচের মধ্যে এটি অনন্য। প্রায় দেড়শ বছর ধরে বিরলের সর্বত্র শিটি মরিচের আবাদ হলেও সময়ের বির্বতনে এ মরিচের চাষ বিলুপ্তপ্রায়। কিন্তু, এ মরিচ নতুনভাবে চাষ করে এবার ঘুরছে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা।

এ শিটি মরিচের চাষ ধরে রাখতে জগতপুর, বিষ্ণুপুর, রানীপুকুর, মির্জাপুর, কুকড়িবন ও কামদেবপুরসহ বিরল উপজেলার অসংখ্য কৃষক আবারো নতুন করে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা, মরিচ তোলা ও বিক্রি নিয়েই এখন সময় পার করছেন এসব গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষক।

মরিচ চাষি মোকছেদ আলী জানান, তিনি ২২ শতক জমিতে শিটি মরিচ চাষ করেছেন। এজন্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুই দফায় ১৭ মণ কাঁচা মরিচ তুলে ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। এরপরও জমিতে প্রায় পাঁ মণ কাঁচা-পাকা মরিচ আছে।

এলাকার রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আদর্শ কৃষক মতিয়ার রহমানের মতে, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে জমি থেকে বোরো ধান তোলার পর উঁচু জমিতে শিটি মরিচের চাষ করা হয়। শ্রাবণ মাসে বীজ তৈরির কাজ শুরু হয়। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে চারা রোপণ করা হয়। চারা রোপণের দুই মাসের মধ্যে শুরু হয় মরিচ তোলা। নিবিড় পরিচর্যার পর পৌষ মাসের ১৫ দিনের মধ্যে মরিচ তুলতে পারে চাষিরা। প্রতি মৌসুমে ফলন্ত মরিচের ক্ষেত থেকে তিনবার মরিচ সংগ্রহ করা যায়। শতক প্রতি এক মণেরও অধিক মরিচ পাওয়া যায়। মাঘ মাসে মরিচ পেকে লাল হয়ে যায়।

ডবরল ১০ নং রানীপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আযম জানান, বাপ-দাদাদের আমল থেকে এ এলাকার কৃষকরা মরিচের চাষ করেন। মরিচই এলাকার কৃষকদের প্রধান ফসল। তিনি এ বছর দুই বিঘা জমিতে শিটি মরিচের চাষ করেছেন।

তিনি আরো জানান, বীজ সংরক্ষণের জন্য ক্ষেতের পাকা মরিচ (টোপা) সংরক্ষণ করা হয়। টোপা রোদে শুকিয়ে ড্রামের মধ্যে রেখে বীজ সংরক্ষণ করা হয়। বপনের মৌসুমে প্রতি কেজি বীজ চার থেকে পাঁচশ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

কামদেপুর গ্রামের মরিচ চাষি মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর আমি দেড় বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বিঘাপ্রতি চাষ করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্ধ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। আশা করছি, আরো অর্ধ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারব।’

কৃষক রমজান আলী জানান, সিটি মরিচ চাষে এবার রোগ-বালাই তেমন একটা না হলেও প্রচণ্ড শীতের কারণে গোঁড়া পঁচা রোগ হয়েছিল। তারপরও ফলন ভালো হয়েছে এবং দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানান, একবার শিটি মরিচের গাছ লাগালে তিন থেকে চার বার ফসল সংগ্রহ করা যায়। প্রতি শতকে এক দশমিক ২৫ মণের অধিক ফলন হয়। হেক্টর প্রতি পাওয়া যায় ১২ টনের অধিক ফলন হয়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here