• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

জামায়াত নেতার দখলে পীরগাছার গাজী পীরপাল মসজিদ

দৈনিক রংপুর

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮  

Find us in facebook

Find us in facebook

বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুরে যে সব প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য অনাদর আর অবহেলায় বর্তমান অবধি কোন রকমে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে,সেগুলোর মধ্যে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার চণ্ডিপুর গাজী শাহ পীরপাল শাহী মসজিদটি অন্যতম।

মসজিদ গাত্রে কোন নাম ফলক বা সন-তারিখ পাওয়া না গেলেও নির্মাণশৈলি দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে এটি সুলতানী শাসনামলে নির্মিত। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির দৈর্ঘ ৩২ ফুট এবং প্রস্থ ১৬ফুট। দেয়ালের পুরুত্ব ৪ফুট প্রায়। ভূমি থেকে কার্নিস পর্যন্ত উচ্চতা ১৪ ফুট। সংস্কার না করায় উপরের গম্বুজের চুড়া অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে । গম্বুজের কোথাও কোথাও ফাটলেরও সৃষ্টি হয়েছে। চার কোণায় অবস্থিত চারটি মিনারও ইতোমধ্যেই ভেঙ্গে পড়েছে ।

মসজিদ গৃহে প্রবেশের জন্য তিনটি প্রবেশ পথ এবং পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে। মেহরাব তিনটির মধ্যে মাঝখানেরটি অপেক্ষাকৃত বড় এবং দৃষ্টিনন্দন। মেহরাবের বাম পাশে তিন সিঁড়ির একটি ছোট্ট মিম্বর রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণে সরু দরজা বিদ্যমান যা জানালা হিসেবে ব্যবহৃত হতো বোঝা যায়। এ মসজিদে এক কাতারে ১৮ থেকে ২০ জন মুসল্লী নামাজ আদায়ে সক্ষম।

রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্বে রংপুর-পীরগাছা আঞ্চলিক মহাসড়কের চণ্ডিপুর দীঘির পশ্চিম পাশ ঘেঁষে এ মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদের উত্তর পাশ ঘেঁষে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ইমামবাড়া রয়েছে। এ ইমামবাড়া দৃষ্টে প্রতীয়মান হয়, এ অঞ্চলে এক সময় শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানদের আধিক্য ছিল এবং এ স্থানে প্রতি আরবী সনের মহররম মাসে জাঁক-জমকপূর্ণভাবে আশুরা পালন করা হতো।

কালের বিবর্তনে এলাকায মুসলমান শূণ্য হওয়ার সাথে সাথে মসজিদটি অনাবাদির পাশি পাশি অন্যান্য মুসলিম রীতির অনুষ্ঠানাদিও বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে প্রতি বৈশাখ মাসে মাস ব্যাপি যে মেলা বসে তা ঐসব রীতিরই কোন এক অংশ বলে মনে করা হয়।

প্রায় চার’শ বছরের প্রাচীন এ মসজিদটিতে কত যুগ বা শতাব্দি থেকে নামাজ আদায় হয় না তা জানা যায়। এলাকাবাসি জানান,বিগত চার দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে তারা মসজিদটি সংস্কারের মাধ্যমে নামাজ শুরু করেন। কিন্তু মসজিদের তৎকালীন জিম্মাদার মৃত গমির শেখের পুত্র জামায়াত নেতা বেলাল শেখ গং মুসল্লিদের নামাজ পড়তে বাধা দেন। তাদের দাবী স্থাপনাটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে অবস্থিত এবং তা মসজিদ নয়-অমুসলিমদের উপাশনালয়। ফলে এটি আবারও অনাবাদিই রয়ে যায়। জানা গেছে উক্ত বেলাল শেখ এলাকার একজন প্রভাবশালী জামায়াতের নেতা । তিনি চার দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে মসজিদের নামীয় প্রায় দু’একর সম্পত্তি প্রতারণামূলক তার মৃত পিতার নামে মালিকানা দলিল সম্পাদন করে নিয়ে তা ভোগ দখল করে আসছেন।

এ মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের বৈশাখ মাসে মাস ব্যাপী মেলা বসে। মেলার সুবাদে আয়ও আসে অনেক। কিন্তু মসজিদের কোন প্রকার সংস্কার না করায় তা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে। খুব দ্রুত এটি সংস্কারে এগিয়ে না এলে তা অচিরেই বিলিন হয়ে যাবে।

এলাকাবাসীর দাবী, প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর যেন দ্রুত এ প্রাচীন স্থাপনাটি তাদের জিম্মায় নিয়ে সংস্কারের মাধ্যমে ধ্বংসের হাত থেকে তা রক্ষা করে। পাশাপাশি এলাকার উৎসুক মুসল্লীদের নামাজ পড়ার সুয়োগ করে দেয়ার দাবীও জানিয়েছেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here