• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

Find us in facebook
সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

চিলমারীতে মহিলা উন্নয়ন সংস্থার বিরুদ্ধে ঘর বাণিজ্যের অভিযোগ

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

Find us in facebook

Find us in facebook

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন সংস্থার বিরুদ্ধে ঘর দেয়ার নাম করে বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের হতদরিদ্র, গরিব ও অসহায়দের ঘর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংস্থাটি। শুধু তাই নয়, টাকা নেওয়ার দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও ঘর কিংবা অর্থ ফেরত পায়নি অসহায় মানুষগুলো।

অন্যদিকে, বিনামূল্যে ঘর দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে সামান্য কিছু ইট,বালি,কংক্রিটের খুঁটি কিংবা সিমেন্ট দিয়ে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করলেও ওই ঘরগুলি দীর্ঘ ছয়মাস পর্যন্ত একই অবস্থায় রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত রাণীগঞ্জ দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে হতদরিদ্র,গরিব অসহায়দের বিনামূল্যে ঘর দেওয়া হবে মর্মে সংস্থাটির সভানেত্রী হাসনা বানু ও তার স্বামী আমিনুল ইসলাম তাদের তালিকাভূক্ত প্রায় ২০০ সদস্য বাছাই করে। বিভিন্ন সময়ে সদস্যদের মাঝে সামান্য রিলিফ ওয়ার্ক সম্পন্ন করে তাদের বিশ্বস্ততা অর্জন করে। পরে তাদের ডেকে বিনামূল্যে ঘর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৩০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে নেয়। প্রাথমিক অবস্থায় সামান্য কিছু টাকা নিয়ে এক থেকে দুই হাজার ইট,বালু কিংবা খুঁটি কিনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এবং পরে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে নেয় তারা।

চড়াবাড়ি এলাকার মৃত অহিজল হকের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ২০ হাত ঘর পাইয়ে দিতে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এসময় আমি একটি ভরট (গর্ভবতী) গাভীসহ তিনটি গরু বিক্রি করে তার হাত দিয়ে ৬০ হাজার টাকা দিয়েছেন এবং আমার ছেলে ২০ হাজার টাকা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাড়ির থাকার ঘর ভেঙে ছয় মাস আগে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ঘরের কাজ শুরু করেছে। পরে আরও ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ঘরের মাত্র দুই থেকে আড়াই ফুট গেঁথে রাখা হয়েছে। এখন কাজও করে না টাকাও দেয় না। ফলে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।’

একই এলাকার বুলবুল মিয়ার স্ত্রী সামিনা বেগম বলেন, ‘বাপের বাড়ি থাকি টাকা আনি দিছং এলায় মোর সংসার হয় না।’

তিনি জানান, আমিনুল ইসলামের প্রলোভনে পড়ে তিনি বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে দিয়েছিলেন। টাকা পেয়ে এক গাড়ি বালু ও পাঁচটি খুঁটি এনে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার প্রায় সাত মাস হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ সাত মাসেও টাকা কিংবা ঘর পাননি তিনি।

কয়ারপাড় এলাকার মহিজল হকের স্ত্রী সবেদা বেগম জানান, মহিলা উন্নয়ন সংস্থার সভানেত্রীর স্বামী আমিনুল ইসলাম রিলিফ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সদস্য তৈরি করেছিল। পরে ২০ হাত ঘর পাইয়ে দিতে তার নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন আমিনুল। নিজের পালিত ছাগলসহ বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে তিনি ঘর পেতে আমিনুলের হাতে ৫০ হাজার টাকা দেন। বিনিময়ে ১৯টি খুঁটি, পাঁচটি সিমেন্টের বস্তা, ছয়টি রিং ও একটি টিউবওয়েল দিয়েছে। গত প্রায় ১০ মাস থেকে আর কোন খোঁজ-খবর নেই।

একই রকম অভিযোগ মৃত বেলাল উদ্দিনের স্ত্রী ছবিয়া বেওয়া, সহিদার রহমানের স্ত্রী সুমি বেগম, মর্জিনা বেগম, ইয়াছিন আলী, আলোমতি, মোরশেদা বেগম, এলমাস ও আমিনুলসহ আরও অনেকের। তারা আমিনুর ইসলামের কাছ থেকে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ ফেরত পেতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

তবে মুঠোফোনে আমিনুল ইসলামের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি হতদরিদ্র,গরিব ও অসহায়দের বিনামূল্যে ঘর দেয়ার ব্যবস্থা করছি। অথচ ওই এলাকার মেম্বার ও চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করে যাচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেছেন বলেও জানান তিনি। তবে, কতজনকে ঘর দিতে চেয়েছেন সে সংখ্যা তিনি বলতে নারাজ।

অন্যদিকে রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু জানান, ‘রানীগঞ্জ দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন সংস্থা এলাকার ২৫-৩০ জন গরিব অসহায়কে বিনামূল্যে ঘর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে শেয়ার করেছি।’

এ বিষয়ে ঘর নিয়ে বাণিজ্যের প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগি এলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here